ঢাকা ০৭:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫

উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের পুনর্বহালের দাবি

  • আপডেট সময় : ০৯:০৮:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের পুনর্বহালের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যানরা স্বীয় পদে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন। বুধবার (৭ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই দাবি তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ‘স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের অপসারিত জনপ্রতিনিধিবৃন্দ।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ষষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান এসোসিয়েশনের সভাপতি ও গাজীপুর সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ইজাদুর চৌধুরী মিলন।

ইজাদুর চৌধুরী মিলন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০২৪ সালের ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্বতন্ত্রভাবে, নির্দলীয় এবং নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই নির্বাচনে দলীয় কোনো মনোগ্রাম, মনোনয়ন বা প্রতীক ছিল না। নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যানরা শপথ গ্রহণ করে কার্যক্রম শুরু করেছিলেন।
কিন্তু গত বছরের ১৮ ও ১৯ আগস্ট, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা-১ শাখা থেকে উপজেলা পরিষদ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৪ এর ধারা ১৩ (ঘ) প্রয়োগ করে দেশের ৪৯৫টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ করা হয়। অপসারণের ফলে উপজেলা পরিষদে জনপ্রতিনিধি না থাকায় গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর নাগরিক সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। অপসারণের আগে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি, যা সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন বক্তারা।

স্থানীয় সরকার উপজেলা পরিষদ আইন ব্যতিরেকে একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের অব্যাহতি প্রদান স্থানীয় সরকারের মূল আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে ইজাদুর চৌধুরী মিলন বলেন, বিগত সরকারের আমলে দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা বহাল তবিয়তে আছেন।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী শপথ গ্রহণ করে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। এসব উদাহরণ তুলে ধরে তিনি প্রশ্ন করেন, এগুলো বৈষম্য নয় কি? তিনি দাবি করেন, তারা ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, আর এটাই তাদের অপরাধ নয়, বরং তাদের অর্জন। আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারী নীতি এবং কথিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভীতি উপেক্ষা করে ভোটের মাঠে স্বতন্ত্রভাবে জয়লাভ করেছেন। তিনি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলেও যদি উপজেলা নির্বাচন হয়, তাহলেও তারা পুনরায় নির্বাচিত হবেন। উপজেলা জনপ্রতিনিধিদের অব্যাহতি প্রদান অবিলম্বে বাতিল করে স্বপদে পুনর্বহাল করার জোর দাবি জানান তিনি।

কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার অপসারিত ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ সিকদার বলেন, আমরা জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলাম। মানুষের সেবা করার জন্য আমরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারে বসেছিলাম। কিন্তু এক মিনিটের মধ্যেই আমাদের অপসারণ করা হয়। তিনি বলেন, জনগণ আমাকে প্রতিদিন ফোন দেন। কিন্তু তারা তো জানেন না যে, আমাদের অপসারণ করা হয়েছে। জনগণের স্বার্থেই আমাদের স্বীয় পদে বহাল করুন।

তদন্ত ছাড়াই অপসারণের অভিযোগ দিনাজপুরের চিরির বন্দর উপজেলা পরিষদের অপসারিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লায়লা বানু বলেন, মানুষের ভোটে আমরা ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলাম। কিন্তু কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আমাদেরকে অপসারণ করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, এর কারণে মানুষ নানা ধরনের ভোগান্তিতে পড়ছেন। জনগণ এখনও আমাদের সেবা পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ষষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মস্তাক আহমদ পলাশ, ভাইস-চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান ফোরামের সদস্য সচিব মো. হানিফ আহমেদ।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের পুনর্বহালের দাবি

আপডেট সময় : ০৯:০৮:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যানরা স্বীয় পদে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন। বুধবার (৭ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই দাবি তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ‘স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের অপসারিত জনপ্রতিনিধিবৃন্দ।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ষষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান এসোসিয়েশনের সভাপতি ও গাজীপুর সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ইজাদুর চৌধুরী মিলন।

ইজাদুর চৌধুরী মিলন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০২৪ সালের ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্বতন্ত্রভাবে, নির্দলীয় এবং নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই নির্বাচনে দলীয় কোনো মনোগ্রাম, মনোনয়ন বা প্রতীক ছিল না। নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যানরা শপথ গ্রহণ করে কার্যক্রম শুরু করেছিলেন।
কিন্তু গত বছরের ১৮ ও ১৯ আগস্ট, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা-১ শাখা থেকে উপজেলা পরিষদ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৪ এর ধারা ১৩ (ঘ) প্রয়োগ করে দেশের ৪৯৫টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ করা হয়। অপসারণের ফলে উপজেলা পরিষদে জনপ্রতিনিধি না থাকায় গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর নাগরিক সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। অপসারণের আগে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি, যা সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন বক্তারা।

স্থানীয় সরকার উপজেলা পরিষদ আইন ব্যতিরেকে একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের অব্যাহতি প্রদান স্থানীয় সরকারের মূল আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে ইজাদুর চৌধুরী মিলন বলেন, বিগত সরকারের আমলে দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা বহাল তবিয়তে আছেন।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী শপথ গ্রহণ করে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। এসব উদাহরণ তুলে ধরে তিনি প্রশ্ন করেন, এগুলো বৈষম্য নয় কি? তিনি দাবি করেন, তারা ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, আর এটাই তাদের অপরাধ নয়, বরং তাদের অর্জন। আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারী নীতি এবং কথিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভীতি উপেক্ষা করে ভোটের মাঠে স্বতন্ত্রভাবে জয়লাভ করেছেন। তিনি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলেও যদি উপজেলা নির্বাচন হয়, তাহলেও তারা পুনরায় নির্বাচিত হবেন। উপজেলা জনপ্রতিনিধিদের অব্যাহতি প্রদান অবিলম্বে বাতিল করে স্বপদে পুনর্বহাল করার জোর দাবি জানান তিনি।

কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার অপসারিত ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ সিকদার বলেন, আমরা জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলাম। মানুষের সেবা করার জন্য আমরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারে বসেছিলাম। কিন্তু এক মিনিটের মধ্যেই আমাদের অপসারণ করা হয়। তিনি বলেন, জনগণ আমাকে প্রতিদিন ফোন দেন। কিন্তু তারা তো জানেন না যে, আমাদের অপসারণ করা হয়েছে। জনগণের স্বার্থেই আমাদের স্বীয় পদে বহাল করুন।

তদন্ত ছাড়াই অপসারণের অভিযোগ দিনাজপুরের চিরির বন্দর উপজেলা পরিষদের অপসারিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লায়লা বানু বলেন, মানুষের ভোটে আমরা ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলাম। কিন্তু কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আমাদেরকে অপসারণ করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, এর কারণে মানুষ নানা ধরনের ভোগান্তিতে পড়ছেন। জনগণ এখনও আমাদের সেবা পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ষষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মস্তাক আহমদ পলাশ, ভাইস-চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান ফোরামের সদস্য সচিব মো. হানিফ আহমেদ।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ