ঢাকা ০১:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উপজেলা নির্বাচন ব্যর্থ হলে গণতন্ত্র ক্ষুন্ন হবে: সিইসি

  • আপডেট সময় : ০২:৩৬:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
  • ৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : উপজেলা নির্বাচন ব্যর্থ হলে ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা ক্ষুণ্ন হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। এজন্য সহিংসতামুক্ত উপজেলা নির্বাচন আয়োজন করার তাগিদ দিয়েছেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন ভবনে মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের তাগিদ দিয়ে কথা বলেন সিইসি। কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, সুষ্ঠুভাবে উপজেলা নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে আমরা যেন প্রমাণ করতে পারি যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র আছে এবং নির্বাচন নির্বাচনের মতো হয়। উপজেলা নির্বাচন ব্যর্থ হলে ৭ জানুয়ারি যে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে তা ক্ষুণ্ন হতে পারে। তাই সহিংসতামুক্ত নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
সভায় অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, মাঠ প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন। প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৮ মে।
মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ
এেিদক উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা (মাঠ প্রশাসন) যেভাবে নিরপেক্ষতা, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে, সেই ধারাবাহিকতা যেন অব্যাহত থাকে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বেলা ১১টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষ্যে সব বিভাগীয় কমিশনার, রেঞ্জের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক, জেলা প্রশাসক, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ তথ্য জানান। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সভায় অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ইসি সচিব বলেন, আজকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে একটি বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সভায় সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল সভাপতিত্ব করেন। অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, আইজিপি, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত ছিলেন। আলোচনার বিষয় ছিল— সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে নির্বাচন আয়োজনের জন্য মাঠ পর্যায়ে কী ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে, আর কি সহায়তা দরকার সেটি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রত্যেকেই তাদের নিজ নিজ জেলায় কী সমস্যা আছে তা বলেছেন। পার্বত্য জেলায় হেলিকপ্টার দেওয়া হয়, সেখানে তিন দিনের পরিবর্তে পাঁচ দিনের সম্মানী ভাতা বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য আলোচনা হয়। কমিশন সেটিতে সম্মত হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও প্রতিটি উপজেলায় দুই থেকে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। প্রয়োজনে অতিরিক্ত জনবল দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকরা পরামর্শ দিয়েছেন যে, ভোটের দিন সকালে ব্যালট গেলে অতিরিক্ত বাজেটের প্রয়োজন হবে। কমিশন সেটি বিবেচনা করবে বলে আশ্বস্ত করেছে। মূলত মাঠ প্রশাসন যাতে সমন্বয়ের মাধ্যমে সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন উপহার দেয়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ‘ইউপি চেয়ারম্যানরা স্বপদে থেকে নির্বাচন করতে পারবেন’— আদালতের এ নির্দেশনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষ করলে জাহাংগীর আলম বলেন, মামলার আদেশের কপি এখনো পাইনি। পেলে আপিল করা হবে। অতিরিক্ত ফোর্স কোন কোন জেলা থেকে চাওয়া হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জেলার কোর কমিটি মিটিং করে জানালে সে অনুযায়ী অতিরিক্ত ফোর্স দেওয়া হবে। মাঠ প্রশাসন কোনো চ্যালেঞ্জের কথা বলেছে কি-না? জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, তারা চ্যালেঞ্জের কথা বলেনি। তারা যেটা বলেছে, স্থানীয় নির্বাচনে যেহেতু প্রার্থীর সংখ্যা বেশি থাকে… সেখানে প্রতিযোগিতাটা বেশি হবে, এজন্য তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য বলেছেন। সহিংসতার আশঙ্কা করেননি। গোয়েন্দা রিপোর্টে সেটি থাকে। কোথাও কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, সাধারণ কেন্দ্রে চার জন, অতি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র পাঁচজন সদস্য (আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য) থাকবেন। পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোর নির্বাচনের জন্য অধিক সতর্কতা অবলম্বের জন্য বলা হয়েছে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীদের প্রভাব নিয়ে তিনি বলেন, আচরণবিধি যাতে সবাই যথাযথভাবে প্রতিপালন করেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বৈঠকে অনেকে অনুরোধ করেছেন। কমিশনও সেটি আশ্বস্ত করেছেন যে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলা হবে। উপজেলা ভোটের প্রথম ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিল ও বাছাইয়ের সময় শেষ। বৈধ প্রার্থী এক হাজার ৭৮৬ জন, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল, আর ১৫২ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ৮ মে। এই ধাপের নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করবেন আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে জেলা প্রশাসক। দ্বিতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় ছিল ২১ এপ্রিল, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় ছিল ২৩ এপ্রিল, আপিল গ্রহণ ২৪-২৬ এপ্রিল, আপিল নিষ্পত্তি ২৭ থেকে ২৯ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল, প্রতীক বরাদ্দ প্রতীক বরাদ্দ ২ মে। আর ১৬১ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ২১ মে। এই ধাপের নির্বাচনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যেখানে ভোটার সংখ্যা পাঁচ লাখের বেশি, সেখানে একাধিক সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োজিত থাকবেন। তৃতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়ন ফরম জমার শেষ তারিখ ২ মে, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ৫ মে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ৬ থেকে ৮ মে। আপিল নিষ্পত্তি ৯ থেকে ১১ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে এবং ভোট ২৯শে মে। এই ধাপে ১১২ উপজেলায় ভোট হবে। এই ধাপে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত জেলা ও অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে৷ আগামী ৫ জুন চতুর্থ ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। চতুর্থ ধাপের তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৫ জুন দেশের ৫৪ উপজেলায় চতুর্থ ধাপের ভোটগ্রহণ হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। এর সঙ্গে নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার প্রার্থীর মৃত্যুতে স্থগিত হওয়া ভোটও এ ধাপে অনুষ্ঠিত হবে, ফলে মোট ৫৫ উপজেলায় ভোট। চতুর্থ ধাপে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৯ মে, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ১২মে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ১৩ থেকে ১৫ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৯ মে। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ২০ মে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার লার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

উপজেলা নির্বাচন ব্যর্থ হলে গণতন্ত্র ক্ষুন্ন হবে: সিইসি

আপডেট সময় : ০২:৩৬:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : উপজেলা নির্বাচন ব্যর্থ হলে ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা ক্ষুণ্ন হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। এজন্য সহিংসতামুক্ত উপজেলা নির্বাচন আয়োজন করার তাগিদ দিয়েছেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন ভবনে মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের তাগিদ দিয়ে কথা বলেন সিইসি। কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, সুষ্ঠুভাবে উপজেলা নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে আমরা যেন প্রমাণ করতে পারি যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র আছে এবং নির্বাচন নির্বাচনের মতো হয়। উপজেলা নির্বাচন ব্যর্থ হলে ৭ জানুয়ারি যে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে তা ক্ষুণ্ন হতে পারে। তাই সহিংসতামুক্ত নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
সভায় অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, মাঠ প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন। প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৮ মে।
মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ
এেিদক উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা (মাঠ প্রশাসন) যেভাবে নিরপেক্ষতা, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে, সেই ধারাবাহিকতা যেন অব্যাহত থাকে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বেলা ১১টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষ্যে সব বিভাগীয় কমিশনার, রেঞ্জের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক, জেলা প্রশাসক, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ তথ্য জানান। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সভায় অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ইসি সচিব বলেন, আজকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে একটি বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সভায় সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল সভাপতিত্ব করেন। অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, আইজিপি, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত ছিলেন। আলোচনার বিষয় ছিল— সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে নির্বাচন আয়োজনের জন্য মাঠ পর্যায়ে কী ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে, আর কি সহায়তা দরকার সেটি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রত্যেকেই তাদের নিজ নিজ জেলায় কী সমস্যা আছে তা বলেছেন। পার্বত্য জেলায় হেলিকপ্টার দেওয়া হয়, সেখানে তিন দিনের পরিবর্তে পাঁচ দিনের সম্মানী ভাতা বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য আলোচনা হয়। কমিশন সেটিতে সম্মত হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও প্রতিটি উপজেলায় দুই থেকে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। প্রয়োজনে অতিরিক্ত জনবল দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকরা পরামর্শ দিয়েছেন যে, ভোটের দিন সকালে ব্যালট গেলে অতিরিক্ত বাজেটের প্রয়োজন হবে। কমিশন সেটি বিবেচনা করবে বলে আশ্বস্ত করেছে। মূলত মাঠ প্রশাসন যাতে সমন্বয়ের মাধ্যমে সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন উপহার দেয়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ‘ইউপি চেয়ারম্যানরা স্বপদে থেকে নির্বাচন করতে পারবেন’— আদালতের এ নির্দেশনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষ করলে জাহাংগীর আলম বলেন, মামলার আদেশের কপি এখনো পাইনি। পেলে আপিল করা হবে। অতিরিক্ত ফোর্স কোন কোন জেলা থেকে চাওয়া হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জেলার কোর কমিটি মিটিং করে জানালে সে অনুযায়ী অতিরিক্ত ফোর্স দেওয়া হবে। মাঠ প্রশাসন কোনো চ্যালেঞ্জের কথা বলেছে কি-না? জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, তারা চ্যালেঞ্জের কথা বলেনি। তারা যেটা বলেছে, স্থানীয় নির্বাচনে যেহেতু প্রার্থীর সংখ্যা বেশি থাকে… সেখানে প্রতিযোগিতাটা বেশি হবে, এজন্য তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য বলেছেন। সহিংসতার আশঙ্কা করেননি। গোয়েন্দা রিপোর্টে সেটি থাকে। কোথাও কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, সাধারণ কেন্দ্রে চার জন, অতি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র পাঁচজন সদস্য (আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য) থাকবেন। পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোর নির্বাচনের জন্য অধিক সতর্কতা অবলম্বের জন্য বলা হয়েছে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীদের প্রভাব নিয়ে তিনি বলেন, আচরণবিধি যাতে সবাই যথাযথভাবে প্রতিপালন করেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বৈঠকে অনেকে অনুরোধ করেছেন। কমিশনও সেটি আশ্বস্ত করেছেন যে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলা হবে। উপজেলা ভোটের প্রথম ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিল ও বাছাইয়ের সময় শেষ। বৈধ প্রার্থী এক হাজার ৭৮৬ জন, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল, আর ১৫২ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ৮ মে। এই ধাপের নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করবেন আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে জেলা প্রশাসক। দ্বিতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় ছিল ২১ এপ্রিল, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় ছিল ২৩ এপ্রিল, আপিল গ্রহণ ২৪-২৬ এপ্রিল, আপিল নিষ্পত্তি ২৭ থেকে ২৯ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল, প্রতীক বরাদ্দ প্রতীক বরাদ্দ ২ মে। আর ১৬১ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ২১ মে। এই ধাপের নির্বাচনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যেখানে ভোটার সংখ্যা পাঁচ লাখের বেশি, সেখানে একাধিক সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োজিত থাকবেন। তৃতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়ন ফরম জমার শেষ তারিখ ২ মে, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ৫ মে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ৬ থেকে ৮ মে। আপিল নিষ্পত্তি ৯ থেকে ১১ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে এবং ভোট ২৯শে মে। এই ধাপে ১১২ উপজেলায় ভোট হবে। এই ধাপে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত জেলা ও অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে৷ আগামী ৫ জুন চতুর্থ ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। চতুর্থ ধাপের তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৫ জুন দেশের ৫৪ উপজেলায় চতুর্থ ধাপের ভোটগ্রহণ হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। এর সঙ্গে নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার প্রার্থীর মৃত্যুতে স্থগিত হওয়া ভোটও এ ধাপে অনুষ্ঠিত হবে, ফলে মোট ৫৫ উপজেলায় ভোট। চতুর্থ ধাপে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৯ মে, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ১২মে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ১৩ থেকে ১৫ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৯ মে। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ২০ মে।