ঢাকা ০৪:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫

নিয়ন্ত্রণহীন চীনা রকেট পৃথিবীতে পড়ার শঙ্কা

  • আপডেট সময় : ১২:০৭:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ নভেম্বর ২০২২
  • ৮৩ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক ; চীনের উৎক্ষেপণ করা একটি রকেটে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গত ৩১ অক্টোবর চিনের মহাকাশ সংস্থা ‘লং মার্চ’ নামের একটি রকেট উৎক্ষেপণ করে। এটি ব্যবহার করে তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে নানা সামগ্রী পাঠিয়েছে চিন। সম্প্রতি জানা গিয়েছে সফল উৎক্ষেপণের পরেও রকেটের একাংশ চিনা মহাকাশ সংস্থার নিয়ন্ত্রণে নেই। ফলে যে কোনো সময় পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে ২৩ টন ওজনের রকেটের একাংশ।
দুই বছরের মধ্যে চতুর্থবারের মতো বড় একটি চীনা রকেট অনিয়ন্ত্রিত প্রভাবের দিকে যাচ্ছে। ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মহাকাশ শিল্প বিশেষজ্ঞরা। চীনের রকেটের থ্রেশহোল্ড বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রকেট উৎক্ষেপণের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ উভয়ই একটি নিয়ম মেনে চলে। সেটি হলো এমনভাবে মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করা উচিত যাতে সেটি মহাকাশে ধংস হলেও ১০ হাজার ভাগের এক ভাগও পৃথিবীতে পতিত হওয়ার সুযোগ না থাকে। আর যদি এমনটা ঘটে তাহলে পৃথিবীতে তা-ব চালানোর সম্ভাবনা অনেক। অ্যারোস্পেস কর্পোরেশনের একজন পরামর্শদাতা টেড মুয়েলহপ্ট ভার্চুয়াল মিডিয়া উপস্থাপনার সময় সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এটি একটি কম ঝুঁকির বিষয়। তবে এটি প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।’
যদিও চীন কোনো আইন বা আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘন করেনি। তবে দেশটির ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ১৩-সদস্যের ইন্টার-এজেন্সি স্পেস ডেব্রিস কোঅর্ডিনেশন কমিটির সদস্য সম্প্রতি বলেছে, মহাকাশের আবর্জনা বায়ুম-লে প্রবেশ করা উচিত নয়। এটি করা হলে একজন ব্যক্তির হতাহত হওয়ার সম্ভাবনা ১০ হাজার ভাগের এক ভাগ বেড়ে যায়। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘চীন সর্বদা আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতি অনুযায়ী মহাকাশকে শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবহার করে এমন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এই ধরণের রকেট একটি বিশেষ ডিজাইনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা যা বায়ুমন্ডলে প্রবেশের প্রক্রিয়ার সময় বেশিরভাগ উপাদানগুলিকে জ্বলতে দেয়। এটির পৃথিবী ও বিমান চলাচলের ক্রিয়াকলাপের ক্ষতি করার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম।’
মুখপাত্র আরও বলেছেন, চীনা কর্মকর্তারা বুস্টারের কক্ষপথ পর্যবেক্ষণ করছেন এবং উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ মনোভাব নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তথ্য প্রকাশ করছেন। যখন ছোট উপগ্রহ এবং মহাকাশযান কক্ষপথের বাইরে পড়ে সেগুলোর বেশিরভাগই তখন বায়ুম-লে পুড়ে যায়, নীচের মাটিতে সামান্যই ঝুঁকি তৈরি করে। কিন্তু লং মার্চ ৫বি এর কোরটি প্রায় ১০৮ ফুট লম্বা এবং ওজন ২২ মেট্রিক টন। এত বিশালাকার হওয়ায় এর ধ্বংসাবশেষ সম্ভবত বায়য মন্ডলে সম্পূর্ণ আকারে নাও পুড়ে যেতে পারে এবং বেঁচে যাওয়া টুকরোগুলি পৃথিবীর কোথাও আঘাত করতে পারে। বেশিরভাগ মহাকাশ-যাত্রী দেশ এবং মহাকাশ সংস্থাগুলি মহাকাশে এই আকারের বস্তুগুলি লঞ্চ করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করে। এছাড়াও এদের ধ্বংসাবশেষ যাতে জনবসতীপূর্ণ এলাকায় না পতিত হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করে। চীনের লং মার্চ ৫বি-এর জন্য এ ধরনের কোনো সতর্কতা অবলম্বন করা হয়নি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর আগেও ২০২০ সালের মে মাসে আইভরি কোস্টে লং মার্চ ৫বি বুস্টারের ধ্বংসাবশেষ আঘাত করেছিল এবং জুলাই মাসে উৎক্ষেপণের পরে একটি লং মার্চ ৫বি রকেটের টুকরো ইন্দোনেশিয়ায় পাওয়া গিয়েছিল। যদিও উভয় ক্ষেত্রেই কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

নিয়ন্ত্রণহীন চীনা রকেট পৃথিবীতে পড়ার শঙ্কা

আপডেট সময় : ১২:০৭:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ নভেম্বর ২০২২

প্রত্যাশা ডেস্ক ; চীনের উৎক্ষেপণ করা একটি রকেটে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গত ৩১ অক্টোবর চিনের মহাকাশ সংস্থা ‘লং মার্চ’ নামের একটি রকেট উৎক্ষেপণ করে। এটি ব্যবহার করে তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে নানা সামগ্রী পাঠিয়েছে চিন। সম্প্রতি জানা গিয়েছে সফল উৎক্ষেপণের পরেও রকেটের একাংশ চিনা মহাকাশ সংস্থার নিয়ন্ত্রণে নেই। ফলে যে কোনো সময় পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে ২৩ টন ওজনের রকেটের একাংশ।
দুই বছরের মধ্যে চতুর্থবারের মতো বড় একটি চীনা রকেট অনিয়ন্ত্রিত প্রভাবের দিকে যাচ্ছে। ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মহাকাশ শিল্প বিশেষজ্ঞরা। চীনের রকেটের থ্রেশহোল্ড বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রকেট উৎক্ষেপণের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ উভয়ই একটি নিয়ম মেনে চলে। সেটি হলো এমনভাবে মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করা উচিত যাতে সেটি মহাকাশে ধংস হলেও ১০ হাজার ভাগের এক ভাগও পৃথিবীতে পতিত হওয়ার সুযোগ না থাকে। আর যদি এমনটা ঘটে তাহলে পৃথিবীতে তা-ব চালানোর সম্ভাবনা অনেক। অ্যারোস্পেস কর্পোরেশনের একজন পরামর্শদাতা টেড মুয়েলহপ্ট ভার্চুয়াল মিডিয়া উপস্থাপনার সময় সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এটি একটি কম ঝুঁকির বিষয়। তবে এটি প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।’
যদিও চীন কোনো আইন বা আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘন করেনি। তবে দেশটির ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ১৩-সদস্যের ইন্টার-এজেন্সি স্পেস ডেব্রিস কোঅর্ডিনেশন কমিটির সদস্য সম্প্রতি বলেছে, মহাকাশের আবর্জনা বায়ুম-লে প্রবেশ করা উচিত নয়। এটি করা হলে একজন ব্যক্তির হতাহত হওয়ার সম্ভাবনা ১০ হাজার ভাগের এক ভাগ বেড়ে যায়। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘চীন সর্বদা আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতি অনুযায়ী মহাকাশকে শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবহার করে এমন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এই ধরণের রকেট একটি বিশেষ ডিজাইনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা যা বায়ুমন্ডলে প্রবেশের প্রক্রিয়ার সময় বেশিরভাগ উপাদানগুলিকে জ্বলতে দেয়। এটির পৃথিবী ও বিমান চলাচলের ক্রিয়াকলাপের ক্ষতি করার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম।’
মুখপাত্র আরও বলেছেন, চীনা কর্মকর্তারা বুস্টারের কক্ষপথ পর্যবেক্ষণ করছেন এবং উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ মনোভাব নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তথ্য প্রকাশ করছেন। যখন ছোট উপগ্রহ এবং মহাকাশযান কক্ষপথের বাইরে পড়ে সেগুলোর বেশিরভাগই তখন বায়ুম-লে পুড়ে যায়, নীচের মাটিতে সামান্যই ঝুঁকি তৈরি করে। কিন্তু লং মার্চ ৫বি এর কোরটি প্রায় ১০৮ ফুট লম্বা এবং ওজন ২২ মেট্রিক টন। এত বিশালাকার হওয়ায় এর ধ্বংসাবশেষ সম্ভবত বায়য মন্ডলে সম্পূর্ণ আকারে নাও পুড়ে যেতে পারে এবং বেঁচে যাওয়া টুকরোগুলি পৃথিবীর কোথাও আঘাত করতে পারে। বেশিরভাগ মহাকাশ-যাত্রী দেশ এবং মহাকাশ সংস্থাগুলি মহাকাশে এই আকারের বস্তুগুলি লঞ্চ করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করে। এছাড়াও এদের ধ্বংসাবশেষ যাতে জনবসতীপূর্ণ এলাকায় না পতিত হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করে। চীনের লং মার্চ ৫বি-এর জন্য এ ধরনের কোনো সতর্কতা অবলম্বন করা হয়নি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর আগেও ২০২০ সালের মে মাসে আইভরি কোস্টে লং মার্চ ৫বি বুস্টারের ধ্বংসাবশেষ আঘাত করেছিল এবং জুলাই মাসে উৎক্ষেপণের পরে একটি লং মার্চ ৫বি রকেটের টুকরো ইন্দোনেশিয়ায় পাওয়া গিয়েছিল। যদিও উভয় ক্ষেত্রেই কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।