স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক : সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় হৃদরোগে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ৪ দশমিক ৫ শতাংশ হৃদরোগে আক্রান্ত। এদের মধ্যে নারীর তুলনায় পুরুষের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) এক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তাফা জামান বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে হ্রদরোগে আক্রান্তদের মধ্যে নারী রোগীর সংখ্যা ৩ দশমিক ৫ শতাংশ এবং পুরুষ ৬ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশিদের করোনারি আর্টারি ডিজিজের প্রাদুর্ভাব বেশি। অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বেশি মানুষ মারা যাচ্ছেন। গবেষণার হিসাব বলছে, বাংলাদেশে প্রতি লাখ মানুষে ২০৩ দশমিক ৭, শ্রীলঙ্কায় ৪ দশমিক ৫, পাকিস্তানে ২২২ দশমিক ৯, নেপালে ১৫২ দশমিক ৬, মিয়ানমারে ১৬৪ দশমিক ৭, মালদ্বীপে ৫০ দশমিক ৯, ভারতে ১৬৫, ভুটানে ২২১ দশমিক ৭, আফগানিস্তানে ৩২ দশমিক ৬ জন হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। হৃদরোগীদের আক্রান্ত হওয়ার গড় বয়স পাওয়া গেছে ৫৩ বছর। যদিও বাংলাদেশে আক্রান্ত ৪৬ শতাংশ রোগীর বয়স ৫০ বছরের নিচে। ডা. মোস্তাফা জামান বলেন, বাংলাদেশ স্টেপস সার্ভে ২০১-এর হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর ৭৩ দশমিক ২০ হয়েছে অসংক্রামক ব্যাধিতে। যার মধ্যে হৃদরোগে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ, ক্যান্সার ১১ দশমিক ২০, ক্রনিক বক্ষব্যাধি ৯ দশমিক ৩০, ডায়াবেটিস মেলাইটাসে ৫ দশমিক ০ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা দৃঢ় করতে সুস্বাস্থ্যের বিকল্প নেই। কারণ, ব্যক্তি নিজে সুস্থ থাকলে দেশ ভালো থাকবে।
ইউজিসি অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি বলেন, যেকোনো শ্রেণির ব্যক্তি হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই এ রোগ সম্পর্কে চিকিৎসকদের নিজ ঘর থেকেই সচেতন হতে হবে। হৃদরোগ থেকে বাঁচার উপায় হিসেবে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সোহরাবুজ্জামান পরামর্শ দিয়ে বলেন- স্বাস্থ্যসম্মত সুষম খাবার খেলে, ধূমপান না করলে, ফাস্ট ফুড না খেলে, তেল-চর্বি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চললে এবং প্রতিদিন রুটিন করে অন্তত ৪০ মিনিট ঘাম ঝরিয়ে হাঁটলে যে কোনো মানুষের হার্ট ভালো থাকবে। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, ডেন্টাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
হৃদরোগে নারীর চেয়ে দ্বিগুণ আক্রান্ত পুরুষরা
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ