আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনার ভারতীয় ধরন ডেলটার সংক্রমণ ঠেকাতে অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম বড় শহর সিডনি ও এর আশপাশের এলাকায় দুই সপ্তাহের কঠোর লকডাউন জারি করা হয়েছে। এর মাঝেই সেখানকার ১২৮ জনের শরীরে অতিসংক্রামক ডেলটার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। কোভিড–১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে নর্দান টেরিটোরি, ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া ও কুইন্সল্যান্ডে। এর মধ্য দিয়ে কয়েকমাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো দেশটির দূরবর্তী বিভিন্ন অঞ্চলে একসঙ্গে করোনার সংক্রমণের খবর পাওয়া গেল। জনস্বাস্থ্যবিদদের আশঙ্কা, করোনা মহামারির নতুন একটি পর্যায়ের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। এতে ভূমিকা রাখছে ভারত থেকে ছড়ানো করোনার ধরন ডেলটা।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যে সিডনিতে দুই সপ্তাহের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। নিউ সাউথ ওয়েলস অঙ্গরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্রাড হ্যাজার্ড বলেন, সিডনির আশপাশের চারটি প্রতিবেশী অঙ্গরাজ্যে লকডাউন চলছে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, করোনার ডেলটা ধরন খুব ভয়ংকর শত্রু। বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। লকডাউনের পাশাপাশি করণীয় নির্ধারণ ও সংক্রমণ ঠেকাতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে আজ সোমবার কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার রাজ্য সরকারগুলো বৈঠকে বসছে। দেশটির ফেডারেল ট্রেজারার জস ফ্রাইডেনবার্গ বলেন, এটা খুবই উদ্বেগজনক মুহুর্ত। সংক্রমণ ঠেকাতে সীমান্ত বন্ধ রাখা ও নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সিডনি, ডারউইনের মতো বড় শহরের পাশাপামি চারটি অঙ্গরাজ্যে লকডাউন চলছে। এর পরও সংক্রমণ বাড়ছে। আমার মনে হচ্ছে, অতিসংক্রামক ধরন ডেলটার কারণে আমরা করোনা মহামারির নতুন একটি পর্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছি।
উদ্বেগের বড় একটি কারণ অস্ট্রেলিয়ার প্রত্যন্ত এলাকায় ডেলটার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। গতকাল রোববার নর্দান টেরিটোরিতে চারজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর জেরে সেখানে ৪৮ ঘণ্টার জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছে স্থানীয় সরকার। গতকাল নিউ সাউথ ওয়েলসে নতুন করে ১৮ জনের করোনা শনাক্তের খবর জানিয়েছেন অঙ্গরাজ্য সরকারের প্রধান গ্ল্যাডিস বেরেজিকলিয়ান। আগের দিনও সেখানে ৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।
করোনাকালে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে ট্রাভেল বাবল চালু রয়েছে। এর ফলে দুই দেশের যাত্রীদের ভ্রমণের পরে কোয়ারেন্টিন করতে হয় না। অস্ট্রেলিয়াজুড়ে করোনার ডেলটা ধরন ছড়িয়ে পড়ায় আপাতত মঙ্গলবার পর্যন্ত বিশেষ এই ভ্রমণ সুবিধা বন্ধ রেখেছে নিউজিল্যান্ড।
এদিকে করোনার ডেলটা ধরনের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাতেও। সংক্রমণ ও ব্যাপক প্রাণহানি ঠেকাতে নতুন করে দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, নতুন বিধিনিষেধের আওতায় দক্ষিণ আফ্রিকায় সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ থাকবে। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় উপস্থিত থাকতে পারবেন সর্বোচ্চ ৫০ জন। মদের দোকান বন্ধ থাকবে। রেঁস্তোরাগুলো শুধুমাত্র হোম ডেলিভারি দিতে পারবে। রাতের বেলায় জারি থাকবে কারফিউ।
রোববার জাতির উদ্দেশ ভাষণে সিরিল রামাফোসা বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকা এখন করোনা সংক্রমণের পুনরুত্থানের মুখোমুখি হয়েছে। রোগী বাড়ছে। আইসিইউ শয্যার সংকট দেখা দিয়েছে। আমাদের স্বাস্থ্যসেবা খাতের সক্ষমতা দ্রুত সীমিত হয়ে আসছে।
ডেলটা ছড়িয়ে পড়ছে পুরো অস্ট্রেলিয়াতে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ