স্বস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক : অস্টিওপোরোসিস বা হাড়ক্ষয় বলতে শরীরের হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়াকে বোঝায়। অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত অনেক কারণ সম্পর্কে জনগণের মধ্যে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষে প্রতিবছর ২০ অক্টোবর বিশের ৯০টিরও বেশি দেশে দিবসটি পালিত হয়। এবারের বিশ্ব অস্টিওপোরোসিস দিবসে প্রতিপাদ্য- ‘স্টেপ আপ ফর বোন হেলথ।’ বিশ্বে প্রতি তিন সেকেন্ডে একজন করে আক্রান্ত হচ্ছেন এই রোগে। চিকিৎসকরা বলছেন, প্রতিকারের চেয়ে এ রোগে প্রতিরোধই উত্তম। হাড় ক্ষয় হওয়া বা অস্টিওপোরোসিস বলতে আমরা সাধারণত বিভিন কারণের হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়াকে বুঝি। অস্টিওপোরোসিস সাধারণত প্রথম অবস্থায় রোগীদের তেমন একটা শারীরিক অসুবিধায় না ফেললেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটা ক্রমশ রোগীকে দুর্বল করে ফেলতে থাকে। তাদের যে হাড় ক্ষয় হচ্ছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা রোগীরা বুঝতে পারে না। হাড় ক্ষয় হবার কারণে শরীরের উচ্চতা কমে যায়। সামনের দিকে বাঁকা হয়ে যায়। অনেকের ক্ষয় দেখবেন শরীর কুঁজো হয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে হাড়ের ক্ষয় কিন্তু আগেই শুরু হয়ে গেছে। উচ্চতা যদি মাপেন তাহলে দেখবেন প্রথমে তাদের উচ্চতা ছিল ১৮০ সেন্টিমিটার। তারপর আস্তে আস্তে ৭৯.৭৮, এভাবে কমতে থাকবে। এই রোগ নারী পুরুষ উভয়েরই হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে পুরুষদের চাইতে নারীদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এই রোগের বিভিন্ন প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বর্তমানে বহু গবেষণা চলছে। জেনে নেয়া যাক এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণ ও সমস্যাগুলো সম্পর্কে।
অনেকাংশে অস্টিওপোরোসিস সমস্যাটি বংশগত বা উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত রোগ বলে মনে করা হয়। এই রোগ একজন ব্যক্তির হাড়ের বিকাশকে প্রভাবিত করতে পারে, যা পরে জীবনে অস্টিওপরোসিসের দিকে পরিচালিত করে। বিজ্ঞানীরা এখনও এই নির্দিষ্ট জিনগত ত্রুটিগুলি বা রোগের কারণগুলো কী, তা নির্ধারণ করতে সক্ষম হননি। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (ঈউঈ) পাশাপাশি জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থা (ঘওঐ), এটি ইঙ্গিত দেয় যে আপনার পিতা মাতার মধ্যে যদি অস্টিওপোরোসিস সমস্যাটি থাকে তবে আপনারও এই রোগটির জন্য পরীক্ষা করা উচিত।
অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ এবং স্ক্রিনিং-
ঈউঈ-তে বলা হয়েছে যে একটি বিশেষ ধরণের এক্স-রে রয়েছে যা ডুয়াল এক্স-রে শোষণকারী (উঢঅ) নামে পরিচিত। যা আপনার দেহের হাড়ের ঘনত্ব কম কিনা তা দেখানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। শরীরের হাড়গুলো দুর্বল এবং অস্টিওপরোসিস হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে কিনা তার পরিমাপ করা হয়। এই রোগে আক্রান্ত্রের নিয়মিত চেকআপ করা খুব জরুরী কারণ অস্টিওপোরোসিসে সর্বদা সুস্পষ্ট লক্ষণ থাকে না। এই রোগের কারণে যখন ঘন ঘন এবং হালকা চোটের ফলেই হাড়ে ফ্র্যাকচার হয়ে থাকে, তখন সাবধানতা অবলম্বন করতে এবং রোগ এড়াতে সমস্য়া হয়।
অস্টিওপোরোসিস রোগীর সমস্যা-
এই রোগীর বসবাসের স্থানে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি সবার আগে কমানো দরকার। অস্টিওপোরোসিসের বৃদ্ধির ফলে হালকা আঘাতের ফলেও হাড়ে ফ্র্যাকচার হতে পারে। যেহেতু হাড়গুলো খুব দুর্বল থাকে ফলে তা নিরাময়ে অনেক মাস সময় নেয়। পাশাপাশি হাড়গুলো যে পুরোপুরি নিরাময় হবে তারও কোনো গ্যারান্টি নেই। যদি একসঙ্গে একাধিক ফ্র্যাকচার হয় তবে তা আক্রান্ত ব্যক্তিকে শারীরিকভাবে দুর্বল করে তোলে। এই রোগে আক্রান্ত হলে চিকিৎসকরা ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহমের পরামর্শ দেন। ধূমপান এবং অ্যালকোহল জাতীয় সেবন এড়িয়ে চলা উচিত এবং নিয়মিত ব্য়ায়াম ও যোগা করার প্রয়োজন।
অস্টিওপোরোসিস কী, জেনে নিন এর প্রাথমিক লক্ষণ ও সমস্যাগুলো
ট্যাগস :
অস্টিওপোরোসিস কী
জনপ্রিয় সংবাদ