ঢাকা ০৯:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫

জ্ঞানবাপীর শিবলিঙ্গের কার্বন ডেটিং নির্ধারণ দাবি খারিজ আদালতে

  • আপডেট সময় : ১১:২৯:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২
  • ৯০ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের উত্তর প্রদেশের বারানসিতে জ্ঞানবাপী মসজিদের ‘শিবলিঙ্গের’ বয়স নির্ধারণে কার্বন ডেটিংয়ের দাবি খারিজ করে দিয়েছেন জেলা আদালত। গতকাল শুক্রবার হিন্দু আবেদনকারীদের ওই দাবি খারিজ করেন জেলা বিচারক অজয় কুমার বিশ্বেস। বিচারক বলেন, জ্ঞানবাপীতে যে অংশে ওই ‘শিবলিঙ্গ’ রয়েছে, সেই স্থান সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ‘সিল’ করা আছে। কাজেই কার্বন ডেটিংয়ের নির্দেশ দেওয়ার অর্থ হবে সুপ্রিম কোর্টকে অমান্য করা। এ ছাড়া সমীক্ষার সময় ওই স্থাপত্যের ক্ষতি হলে সেটাও হবে সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশভঙ্গের শামিল। হিন্দুরা যে স্থাপত্যকে ‘শিবলিঙ্গ’ বলে দাবি করেছেন, মসজিদ কর্তৃপক্ষের মতে তা অজুস্থলের এক ফোয়ারার মুখ। শুক্রবারের রায়ে মসজিদ কর্তৃপক্ষ আপাতত স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেও হিন্দু আবেদনকারীদের আইনজীবী বিষ্ণু জৈন সাংবাদিকদের বলেছেন, তাঁরা দাবি ছাড়ছেন না। শিগগিরই তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন। বারানসিতে কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ও জ্ঞাপবাপী মসজিদ একেবারে লাগোয়া। মন্দির–মসজিদের একটি দেয়ালও অভিন্ন। সেই দেয়ালেই হিন্দু দেব–দেবীর কিছু মূর্তি রয়েছে, যা বহু প্রাচীন এই বিবাদের অংশ। সম্প্রতি পাঁচ হিন্দু নারী বছরভর ওই মূর্তি পূজার অনুমতি চেয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। সেই দাবি মেনে বারানসির নি¤œ আদালত মসজিদ চত্বরে ভিডিওগ্রাফির মাধ্যমে সমীক্ষার অনুমতি দিয়েছিলেন। সেই সমীক্ষায়ই সেখানে এক ‘শিবলিঙ্গের’ সন্ধান মিলেছে বলে হিন্দুরা দাবি জানান। মামলায় তারই কার্বন ডেটিংয়ের মাধ্যমে ‘শিবলিঙ্গের’ বয়স নির্ধারণের আবেদন করা হয়। এই অবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে আরজিটি বারানসি জেলা আদালতে জ্যেষ্ঠ বিচারকের এজলাসে যায়। উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় রামের জন্মভূমি–বাবরি মসজিদ বিতর্ক যখন চরমে, আন্দোলন যখন তীব্র, সেই সময় ১৯৯১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাও অযোধ্যা বাদে দেশের অন্য সব উপাসনাস্থল রক্ষায় একটি আইন প্রণয়ন করেছিলেন। সেই আইনে বলা হয়েছিল, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতার দিন দেশের উপাসনাস্থলগুলোর চরিত্র যেমন ছিল, তা অপরিবর্তিত থাকবে। কোনো উপাসনাস্থলের চরিত্র বদল করা যাবে না। বাবরি মসজিদ–রাম জন্মভূমি বিতর্ক যেহেতু তখন থেকেই শীর্ষ আদালতের বিচারাধীন, সে জন্য একমাত্র এগুলোই ওই আইনের বাইরে রাখা হয়েছিল। পরবর্তীকালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অযোধ্যার বিতর্কিত কাঠামোর জায়গায় মন্দির স্থাপনার সিদ্ধান্ত হয়। ওই জেলায়ই কিছু দূরে মসজিদ তৈরির জন্য দেওয়া হয় পাঁচ একর জমি। জ্ঞানবাপী বিতর্ক ১৯৯১ সালের উপাসনাস্থল আইন লঙ্ঘন করছে কি না, সেটি এখন সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জ্ঞানবাপীর শিবলিঙ্গের কার্বন ডেটিং নির্ধারণ দাবি খারিজ আদালতে

আপডেট সময় : ১১:২৯:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের উত্তর প্রদেশের বারানসিতে জ্ঞানবাপী মসজিদের ‘শিবলিঙ্গের’ বয়স নির্ধারণে কার্বন ডেটিংয়ের দাবি খারিজ করে দিয়েছেন জেলা আদালত। গতকাল শুক্রবার হিন্দু আবেদনকারীদের ওই দাবি খারিজ করেন জেলা বিচারক অজয় কুমার বিশ্বেস। বিচারক বলেন, জ্ঞানবাপীতে যে অংশে ওই ‘শিবলিঙ্গ’ রয়েছে, সেই স্থান সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ‘সিল’ করা আছে। কাজেই কার্বন ডেটিংয়ের নির্দেশ দেওয়ার অর্থ হবে সুপ্রিম কোর্টকে অমান্য করা। এ ছাড়া সমীক্ষার সময় ওই স্থাপত্যের ক্ষতি হলে সেটাও হবে সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশভঙ্গের শামিল। হিন্দুরা যে স্থাপত্যকে ‘শিবলিঙ্গ’ বলে দাবি করেছেন, মসজিদ কর্তৃপক্ষের মতে তা অজুস্থলের এক ফোয়ারার মুখ। শুক্রবারের রায়ে মসজিদ কর্তৃপক্ষ আপাতত স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেও হিন্দু আবেদনকারীদের আইনজীবী বিষ্ণু জৈন সাংবাদিকদের বলেছেন, তাঁরা দাবি ছাড়ছেন না। শিগগিরই তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন। বারানসিতে কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ও জ্ঞাপবাপী মসজিদ একেবারে লাগোয়া। মন্দির–মসজিদের একটি দেয়ালও অভিন্ন। সেই দেয়ালেই হিন্দু দেব–দেবীর কিছু মূর্তি রয়েছে, যা বহু প্রাচীন এই বিবাদের অংশ। সম্প্রতি পাঁচ হিন্দু নারী বছরভর ওই মূর্তি পূজার অনুমতি চেয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। সেই দাবি মেনে বারানসির নি¤œ আদালত মসজিদ চত্বরে ভিডিওগ্রাফির মাধ্যমে সমীক্ষার অনুমতি দিয়েছিলেন। সেই সমীক্ষায়ই সেখানে এক ‘শিবলিঙ্গের’ সন্ধান মিলেছে বলে হিন্দুরা দাবি জানান। মামলায় তারই কার্বন ডেটিংয়ের মাধ্যমে ‘শিবলিঙ্গের’ বয়স নির্ধারণের আবেদন করা হয়। এই অবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে আরজিটি বারানসি জেলা আদালতে জ্যেষ্ঠ বিচারকের এজলাসে যায়। উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় রামের জন্মভূমি–বাবরি মসজিদ বিতর্ক যখন চরমে, আন্দোলন যখন তীব্র, সেই সময় ১৯৯১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাও অযোধ্যা বাদে দেশের অন্য সব উপাসনাস্থল রক্ষায় একটি আইন প্রণয়ন করেছিলেন। সেই আইনে বলা হয়েছিল, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতার দিন দেশের উপাসনাস্থলগুলোর চরিত্র যেমন ছিল, তা অপরিবর্তিত থাকবে। কোনো উপাসনাস্থলের চরিত্র বদল করা যাবে না। বাবরি মসজিদ–রাম জন্মভূমি বিতর্ক যেহেতু তখন থেকেই শীর্ষ আদালতের বিচারাধীন, সে জন্য একমাত্র এগুলোই ওই আইনের বাইরে রাখা হয়েছিল। পরবর্তীকালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অযোধ্যার বিতর্কিত কাঠামোর জায়গায় মন্দির স্থাপনার সিদ্ধান্ত হয়। ওই জেলায়ই কিছু দূরে মসজিদ তৈরির জন্য দেওয়া হয় পাঁচ একর জমি। জ্ঞানবাপী বিতর্ক ১৯৯১ সালের উপাসনাস্থল আইন লঙ্ঘন করছে কি না, সেটি এখন সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন।