নিজস্ব প্রতিবেদক : হেঁটে বাংলাদেশ ভ্রমণ করছেন নেপালি তরুণ ইহ। মানুষের জীবন, সংস্কৃতিসহ বিশ্ব জানার আকাঙ্ক্ষা থেকে তিনি ঘর ছেড়েছেন। ২৩৫ দিন আগে কাঠমান্ডু থেকে যাত্রা শুরু করে ৫ হাজার ৪৮৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে গত ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশে পৌঁছান। ১৮ সেপ্টেম্বর তিনি টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জিরো পয়েন্ট থেকে পায়ে হেঁটে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বর্তমানে এই পরিব্রাজক জয়পুরহাটে অবস্থান করছেন। তার সঙ্গী হয়েছেন ভ্রমণবিষয়ক আলোকচিত্রী ও লেখক হোমায়েদ ইসহাক মুন। এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে তিনি বগুড়ার ধুনট উপজেলায় পৌঁছান। পরদিন বুধবার সকাল ৮টায় সেখান থেকে রওনা দিয়ে বগুড়া শহর হয়ে জয়পুরহাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
২৭ বছর বয়সী ইহ জানান, তার বাড়ি নেপালের কাঠমান্ডুর থাপাথালি এলাকায়। ১৪ বছর বয়সে তিনি স্কুল ছাড়েন। এরপর ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে পরেন ঘুরতে। নিজের দেশের তুষার আবৃত হিমালয়, সবুজ পাহাড় আর সমতল ভূমিতে পায়ে হেঁটে ঘুরতে ঘুরতে স্বপ্ন দেখতে থাকেন বিশ্বভ্রমণের। ২০১৫ সালে পায়ে হেঁটে বিশ্বভ্রমণের যাত্রা শুরু করেন নিজের দেশ থেকেই। প্রায় এক বছর পায়ে হেঁটে ঘুরেছেন নেপালের বিভিন্ন অঞ্চল। পরে ভারতের কারগিল থেকে কন্যা কুমারী, কারাকোরাম থেকে ভারত মহাসগর পর্যন্ত হেঁটেছেন। একা একা পায়ে হেঁটে ভ্রমণ করেছেন শ্রীলঙ্কাও। সব মিলিয়ে পায়ে হেঁটে প্রায় ১৩ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি পথ পাড়ি দিয়েছেন তিনি।
ইহ বলেন, বাংলাদেশের পথের চারপাশে সবুজ সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। স্থানীয় লোকজনই আমার থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করছেন। এ দেশের মানুষের আতিথেয়তার কথা শুনেছি। এবার নিজেই দেখলাম। মুগ্ধ হচ্ছি। অনেকেই আমাকে দেখে আগ্রহ নিয়ে কথা বলছেন। এই অঞ্চলের মানুষের সাদাসিধে জীবনযাপন ভালো লাগছে।
হোমায়েদ ইসহাক মুন বলেন, আমি যখন এভারেস্ট বেজক্যাম্প ট্র্যাকে যাই তখন কাঠমান্ডুতে ইহর সঙ্গে আমার দেখা হয়। এরপর তার সঙ্গে আমার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়। এরপর আমরা পরিকল্পনা করলাম ওর সাথে আমি হাঁটবো কিছু সময়। পুরোটা হয়তো আমি পারবো না। ও টেকনাফ থেকে শুরু করেছে। আমি ওর সাথে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে যুক্ত হয়েছি। ওর সাথে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত পায়ে হেঁটে যাওয়ার ইচ্ছা আছে। আজকে ২৬তম দিন আমরা জয়পুরহাটে পৌঁছে গেছি। আগামী ১৮ অক্টোবরের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবো বলে আশা করছি।
ইসহাক মুন আরো বলেন, নেপালের নাগরিক হয়ে ইহ আমাদের দেশ দেখতে এসেছে। আমি তাকে আমাদের দেশ দেখাতে পারছি এবং তার সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছি এটাও আমি মনে করি একটি অনন্য অভিজ্ঞতা। আমার কাছে মনে হয়েছে পায়ে ভ্রমণ করাটা খুবই আনন্দের এবং চারপাশ দেখার জন্য এবং মানুষের সাথে কথা বলার জন্য এটি উপযুক্ত।
নেপালি তরুণের পায়ে হেঁটে বাংলাদেশ ভ্রমণ
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ