নিজস্ব প্রতিবেদক : জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষের জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিভিন্ন অজুহাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজার অস্থির করে তুলেছেন। কয়েক মাস ধরে প্রায় সব পণ্যের দাম বাড়লেও কোনোটারই কমার লক্ষণ নেই। এছাড়াও সরকার সয়াবিন তেলের দাম কমালেও এখনো আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় ক্রেতাদের দম বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার সরজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল, কলাবাগান, কাঠালবাগানসহ রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে শিমের কেজি ১৩৫ থেকে ১৫০ টাকা, কাঁকরোল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি, ঢেঁড়শ ৬০ থেকে ৭৫ টাকা, লম্বা বেগুনের কেজি ৯০ থেকে ৯৫ টাকা, গোল বেগুনের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, টমেটো ১৩৫ থেকে ১৫০ টাকা, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, মুলা ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, ধুন্দুল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, গাজরের কেজি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, পটল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, শসা ৮০ থেকে ৯০ টাকা, আলুর কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, লেবু এক হালি ২০ থেকে ৩০ টাকা, কাঁচকলা এক হালি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, লাউ আকার ভেদে ৬০ থেকে ৭৫ টাকা, চালকুমড়া প্রতিটি আকার ভেদে ৫০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি ৩৬০ থেকে ৩৮০ টাকা, পাঙাশ ১৮০ থেকে ২১০ টাকা কেজি, ট্যাংরা মাছের কেজি ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০, শিং মাছ আকার ভেদে ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি, কই মাছের কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা, বোয়াল আকার ভেদে ৪৮০ থেকে ৭০০ টাকা, শোল মাছ প্রতি কেজি ৪২০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নাজিরশাইল ৯৪ থেকে ৯৫ টাকা কেজি, আটাশ চাল ৬০ থেকে ৬২ টাকা, মিনিকেট প্রতি কেজি ৭৪ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগির কেজি ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা, লেয়ার মুরগি (লাল) কেজিপ্রতি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, গরুর মাংস ৬৮০ টাকা থেকে ২০ টাকা বেড়ে ৭০০ টাকা, খাসির মাংস প্রতিকেজি ৯৫০ থেকে ৯৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ডিম প্রতিটি ১৩ টাকা, এক হালি ৫০ টাকা ও ডজন ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে, ভোজ্যতেলের দাম প্রতি লিটারে ১৪ টাকা কমিয়ে ১৭৮ টাকা নির্ধারণ করা হলেও এখন পর্যন্ত এক লিটার ১৯২ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল ৯১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মুদি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, দেশি রসুনের কেজি ৭০ থেকে ৯০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, মসুর ডাল (চিকন) ১৫০ টাকা, মসুর ডাল মোটা ১২০ টাকা কেজি, মুগডাল ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও, প্যাকেট চিনি ৯৫ থেকে ৫ টাকা বেড়ে ১০০ টাকা, লাল চিনির কেজি ১০৫ টাকা, খোলা চিনি ৯০ থেকে ৫ টাকা বেড়ে ৯৫ টাকা, লবণের কেজি ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের ক্রেতা আল-আমিন বলেন, ‘বাজারে গিয়ে শান্তিতে কোনো কিছু কিনতে পারি না। সব পণ্যের দাম অতিরিক্ত। ব্যবসায়ীরা যার কাছ থেকে যতো বেশি দামে বিক্রি করতে পারে সেই প্রতিযোগিতা চলছে বাজারে। আর মাছ বাজার গেলে তো একদম পকেট ফাঁকা করে দেবে। আর কতো অপেক্ষা করব বাজারের পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার!’
কাঠালবাগান এলাকার ক্রেতা রিকশা চালক আব্দুর রহমান মিয়া বলেন, ‘সারাদিন রিকশা চালিয়ে যা পাই, বাজারে গেলে আর পকেটে টাকা থাকে না। সব টাকা খরচ হয়ে যায়। আমার মতো গরিব কেমন ভাবে চলব সেটার দিকে কেউ নজর দেয় না।’
তেজগাঁও এলাকার চাল বিক্রেতা সাদি মিয়া বলেন, ‘আমাদের কিছু করার নেই। আমদেরও বেশি দামে কিনে আনতে হয়। ফলে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
বাজারে দম বন্ধের পরিস্থিতি
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ