ঢাকা ১০:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫

১০ তলা ভবন ভাঙার নির্দেশে শুরু বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের সীমানা নির্ধারণ অভিযান

  • আপডেট সময় : ০২:৫৪:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ অক্টোবর ২০২২
  • ৯০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর হাজারীবাগের কালু নগর স্লুইস গেট এলাকায় একটি ১০ তলা ভবনের ১৫ ফুট অংশ ভাঙার নির্দেশনার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে রাজধানীর আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের সীমানা নির্ধারণের কাজ। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি), ঢাকা জেলা প্রশাসন, ভূমি অফিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)-সহ কয়েকটি সরকারি সংস্থা মিলে শুরু করেছে এই কাজ।
কালুনগর স্লুইসগেটে পরিদর্শন এসে বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেলে দশতলা ভবনের একাংশ ভেঙে ফেলার নির্দেশনা দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি জানান, তিনি দখলদারের নাম নিয়ে চিন্তিত না। সব দখলদারকেই খালের জায়গা ছেড়ে দিতে হবে।
গতকাল বুধবার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আমরা নাম নিয়ে চিন্তিত না। নাম আমাদের কাছে বিষয় না। আপনারা লক্ষ করেছেন, এখানে ১০ তলা ভবন হয়ে গেছে। আজ থেকে ভাঙার কাজ শুরু হবে। আগামী বুধবার আবার পরিদর্শনে আসবো। আমরা আশা করি (অবৈধ ভবনের) যে অংশটা খালের মধ্যে বা নদীর মধ্যে পড়েছে সে অংশটা থাকবে না। সুতরাং সবাইকে ছেড়ে দিতে হবে। এতদিন যে দখল করে খেয়েছে সেটা এখন থেকে ছেড়ে দিতে হবে। আর যদি না ছাড়ে তাহলে আমরা এটা ভেঙে দেবো।
আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল সংশ্লিষ্ট সব সরকারি সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে এই সীমানা নির্ধারণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, আদি বুড়িগঙ্গা পুনরুদ্ধারে আমরা বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু করেছি। আমরা এরইমধ্যে খনন কাজ আরম্ভ করেছি। আজ থেকে আমরা পূর্ণাঙ্গভাবে আমাদের জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিআইডব্লিউটিএ, আমাদের সম্পত্তি বিভাগ ও অন্যান্য সংস্থাসহ সবাই যৌথভাবে পরিমাপ করছি। সীমানা চিহ্নিত করেছি। আজ থেকেই আমরা সেই সীমানা চিহ্নিতকরণ এবং স্থায়ীভাবে সীমানা পিলার লাগিয়ে দেবো। আমরা আশাবাদী, এই কার্যক্রম ইনশাআল্লাহ অচিরেই দৃশ্যমান হবে। আদি বুড়িগঙ্গা তার সেই পূর্বের অবস্থানে ফিরে আসতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, আদি বুড়িগঙ্গার সিএস ও অন্যান্য নকশা অনুযায়ী নদীর অববাহিকা বা নদীর সীমানা যেখানে বেশি আছে আমরা সেটাকে ধরছি। সেটাকেই ধরে আমরা সব অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করবো। সেখানে নদীর অববাহিকা ও নদীর গতিপথ সৃষ্টি করে আমরা তার পাশ দিয়ে নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি করবো, যাতে মানুষজন হেঁটে, সাইকেল চালিয়ে চলাফেরা করতে পারে। আমরা গণপরিসর প্রতিষ্ঠা করবো, যাতে মানুষজন নদীকে উপভোগ করতে পারে এবং ঢাকার পূর্বের সেই প্রতিচ্ছবি ফিরে আসে।
এ সময় ডেঙ্গু নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আশ্বিন মাসের ২৭ তারিখ হওয়া সত্ত্বেও আজ বৃষ্টি হচ্ছে। এখনও আমরা বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি। যার কারণে আমরা লক্ষ করছি যে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব এখনও রয়েছে। কিন্তু গত ১০ অক্টোবরের হিসাব অনুযায়ী (সারা দেশে মোট) ৬৪২ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। তার মধ্যে মাত্র ৪০ জন হলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের। সুতরাং আমাদের সার্বক্ষণিক যে কার্যক্রম চলছে, তাতে আমরা ডেঙ্গুকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি। তারপরও অনেক প্রতিকূলতা রয়েছে। ডেঙ্গু পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত, প্রাদুর্ভাব নেমে না আসা পর্যন্ত আমরা আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাব। এর আগে ডিএসসিসি মেয়র ডগাইর এলাকায় দক্ষিণ সিটির ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্র্বতীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রের (এসটিএস) উদ্বোধন করেন।
এ সময় ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর সিতওয়াত নাঈম, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, ঢাকা জেলার জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডসমূহের কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলরবৃন্দ, দক্ষিণ সিটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

১০ তলা ভবন ভাঙার নির্দেশে শুরু বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের সীমানা নির্ধারণ অভিযান

আপডেট সময় : ০২:৫৪:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ অক্টোবর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর হাজারীবাগের কালু নগর স্লুইস গেট এলাকায় একটি ১০ তলা ভবনের ১৫ ফুট অংশ ভাঙার নির্দেশনার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে রাজধানীর আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের সীমানা নির্ধারণের কাজ। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি), ঢাকা জেলা প্রশাসন, ভূমি অফিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)-সহ কয়েকটি সরকারি সংস্থা মিলে শুরু করেছে এই কাজ।
কালুনগর স্লুইসগেটে পরিদর্শন এসে বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেলে দশতলা ভবনের একাংশ ভেঙে ফেলার নির্দেশনা দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি জানান, তিনি দখলদারের নাম নিয়ে চিন্তিত না। সব দখলদারকেই খালের জায়গা ছেড়ে দিতে হবে।
গতকাল বুধবার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আমরা নাম নিয়ে চিন্তিত না। নাম আমাদের কাছে বিষয় না। আপনারা লক্ষ করেছেন, এখানে ১০ তলা ভবন হয়ে গেছে। আজ থেকে ভাঙার কাজ শুরু হবে। আগামী বুধবার আবার পরিদর্শনে আসবো। আমরা আশা করি (অবৈধ ভবনের) যে অংশটা খালের মধ্যে বা নদীর মধ্যে পড়েছে সে অংশটা থাকবে না। সুতরাং সবাইকে ছেড়ে দিতে হবে। এতদিন যে দখল করে খেয়েছে সেটা এখন থেকে ছেড়ে দিতে হবে। আর যদি না ছাড়ে তাহলে আমরা এটা ভেঙে দেবো।
আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল সংশ্লিষ্ট সব সরকারি সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে এই সীমানা নির্ধারণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, আদি বুড়িগঙ্গা পুনরুদ্ধারে আমরা বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু করেছি। আমরা এরইমধ্যে খনন কাজ আরম্ভ করেছি। আজ থেকে আমরা পূর্ণাঙ্গভাবে আমাদের জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিআইডব্লিউটিএ, আমাদের সম্পত্তি বিভাগ ও অন্যান্য সংস্থাসহ সবাই যৌথভাবে পরিমাপ করছি। সীমানা চিহ্নিত করেছি। আজ থেকেই আমরা সেই সীমানা চিহ্নিতকরণ এবং স্থায়ীভাবে সীমানা পিলার লাগিয়ে দেবো। আমরা আশাবাদী, এই কার্যক্রম ইনশাআল্লাহ অচিরেই দৃশ্যমান হবে। আদি বুড়িগঙ্গা তার সেই পূর্বের অবস্থানে ফিরে আসতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, আদি বুড়িগঙ্গার সিএস ও অন্যান্য নকশা অনুযায়ী নদীর অববাহিকা বা নদীর সীমানা যেখানে বেশি আছে আমরা সেটাকে ধরছি। সেটাকেই ধরে আমরা সব অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করবো। সেখানে নদীর অববাহিকা ও নদীর গতিপথ সৃষ্টি করে আমরা তার পাশ দিয়ে নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি করবো, যাতে মানুষজন হেঁটে, সাইকেল চালিয়ে চলাফেরা করতে পারে। আমরা গণপরিসর প্রতিষ্ঠা করবো, যাতে মানুষজন নদীকে উপভোগ করতে পারে এবং ঢাকার পূর্বের সেই প্রতিচ্ছবি ফিরে আসে।
এ সময় ডেঙ্গু নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আশ্বিন মাসের ২৭ তারিখ হওয়া সত্ত্বেও আজ বৃষ্টি হচ্ছে। এখনও আমরা বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি। যার কারণে আমরা লক্ষ করছি যে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব এখনও রয়েছে। কিন্তু গত ১০ অক্টোবরের হিসাব অনুযায়ী (সারা দেশে মোট) ৬৪২ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। তার মধ্যে মাত্র ৪০ জন হলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের। সুতরাং আমাদের সার্বক্ষণিক যে কার্যক্রম চলছে, তাতে আমরা ডেঙ্গুকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি। তারপরও অনেক প্রতিকূলতা রয়েছে। ডেঙ্গু পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত, প্রাদুর্ভাব নেমে না আসা পর্যন্ত আমরা আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাব। এর আগে ডিএসসিসি মেয়র ডগাইর এলাকায় দক্ষিণ সিটির ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্র্বতীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রের (এসটিএস) উদ্বোধন করেন।
এ সময় ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর সিতওয়াত নাঈম, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, ঢাকা জেলার জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডসমূহের কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলরবৃন্দ, দক্ষিণ সিটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।