ঢাকা ০৬:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ক্রেতা সঙ্কটের শঙ্কায় আম বিক্রেতারা

  • আপডেট সময় : ০২:০৭:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুন ২০২১
  • ৭৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : মৌসুমী ফলের বাজারে আম এখনও সর্বোচ্চ বিক্রির সারিতে থাকলেও এর মধ্যে সারাদেশে ‘শাটডাউনের’ সিদ্ধান্ত আসায় সামনে ক্রেতা-ভোক্তা পাওয়া যাবে কিনা সেই শঙ্কায় রয়েছেন বিক্রেতারা। বেশ কিছু দিন ধরে উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গে কোভিড-১৯ এর প্রকোপ বেশি দেখা দিলেও আমের বাজারে এতদিন তেমন প্রভাব পড়েনি বলে জানিয়েছেন খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা। রাজশাহী অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কে জে এম আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘শাটডাউন’ কেমন হবে তার ওপর নির্ভর করছে বাজারে আম বিক্রি হবে কিনা। তিনি বলেন, “ভোক্তারা যদি বাসা থেকেই বের হতে না পারেন তাহলে তো তারা আম কিনে খেতে চাইবেন না। আমাদের ভোক্তাদের অধিকাংশ অফিস বা ব্যবসা বাণিজ্য শেষ করে সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার সময় বাজার-সদাই করেন, তখন হয়তো আম-জাম কিনে নিয়ে যান। সবকিছু বন্ধ হয়ে গেলে তখন তো সেই সুযোগ থাকবে না।” তবে শুক্রবার রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে দেখা যায়, সবচেয়ে ভালমানের আম সর্বোচ্চ ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে এখনও বাজারে থাকা অধিকাংশ আমই ৭০ থেকে ৯০ টাকার মধ্যে রয়েছে। শান্তিনগর বাজারের ফল বিক্রেতা মোশাররফ হোসেন জানান, বেশ কিছুদিন বিক্রি ভাল থাকলেও করোনাভাইরাসে সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় আবারও দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হলে আমের ব্যবসাও বন্ধ করে দিতে হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন তিনি। মোশাররফ বলেন, “ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে ফ্যামেলি নিয়ে কীভাবে চলব তা নিয়েই চিন্তায় আছি। সরকার যেন আমাদের মত ছোট-খাটো ব্যবসায়ীদের স্মরণ করে লকডাউন দেয়। পচনশীল মৌসুমি ফলের দোকানপাট যেন খোলা রাখে সরকারের কাছে সেই দাবি করি।” রামপুরা বাজার এলাকার ফল ব্যবসায়ী আব্দুল মুতালেব বলেন, “আমাদের ফলের ব্যবসা সারাবছর থাকলেও আম-লিচু সিজনের দিকে তাকিয়ে থাকি। গত এক মাস আমের ব্যবসাও বেশ ভাল হয়েছে। এখন যদি লকডাউন দিয়ে দেয় তাহলে তো দোকান বন্ধ রাখতে হবে। এতে আম চাষীরা আম বিক্রি করবে কার কাছে?” ঢাকা মহানগর ফল আমদানি-রপ্তানিকারক ও আড়তদার ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারীর কারণে এতোদিন পর্যন্ত আমের বাজারে তেমন প্রভাব না পড়লেও ‘শাটডাউন’ দেওয়া হলে আমের বিক্রিতে বড় ধরণের প্রভাব পড়বে।
“এবার আমের ফলন বেশ ভাল হয়েছে। আবার মহামারীর চলছে, যে কারণে গতবারের চেয়ে এবার আম একটু সস্তায় বিক্রি হচ্ছে। এমনিতেই আমাদের দেশে আম সস্তায় পাওয়া যায়।” সিরাজুল ইসলাম বলেন, আগেভাগে বাজারে এসে ইতোমধ্যে গোপালভোগ আম শেষ হয়ে গেছে। আর হিমসাগর আমও প্রায় শেষ দিকে চলে এসেছে। অন্যান্যগুলো এখনও বাজার ভরপুর। বাকি আরও দুইটি-তিনটি জাতের আম আগামী এক থেকে দেড় মাস সময় বাজারে থাকবে। রাজশাহী অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আব্দুল আউয়াল বলেন, “মহামারীর মধ্যে এতোদিন রাজশাহী বা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আম ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় পরিবহণের কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু ভোক্তার সংকটে হয়তো আম পাইকারী ব্যবসায়ীরা না আসতে পারে, সেই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।” তবে ইতোমধ্যে রাজশাহী অঞ্চলের ৭০ শতাংশ আম উঠে গেছে বলে জানান তিনি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

‘অবৈধ’ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা

ক্রেতা সঙ্কটের শঙ্কায় আম বিক্রেতারা

আপডেট সময় : ০২:০৭:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুন ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : মৌসুমী ফলের বাজারে আম এখনও সর্বোচ্চ বিক্রির সারিতে থাকলেও এর মধ্যে সারাদেশে ‘শাটডাউনের’ সিদ্ধান্ত আসায় সামনে ক্রেতা-ভোক্তা পাওয়া যাবে কিনা সেই শঙ্কায় রয়েছেন বিক্রেতারা। বেশ কিছু দিন ধরে উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গে কোভিড-১৯ এর প্রকোপ বেশি দেখা দিলেও আমের বাজারে এতদিন তেমন প্রভাব পড়েনি বলে জানিয়েছেন খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা। রাজশাহী অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কে জে এম আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘শাটডাউন’ কেমন হবে তার ওপর নির্ভর করছে বাজারে আম বিক্রি হবে কিনা। তিনি বলেন, “ভোক্তারা যদি বাসা থেকেই বের হতে না পারেন তাহলে তো তারা আম কিনে খেতে চাইবেন না। আমাদের ভোক্তাদের অধিকাংশ অফিস বা ব্যবসা বাণিজ্য শেষ করে সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার সময় বাজার-সদাই করেন, তখন হয়তো আম-জাম কিনে নিয়ে যান। সবকিছু বন্ধ হয়ে গেলে তখন তো সেই সুযোগ থাকবে না।” তবে শুক্রবার রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে দেখা যায়, সবচেয়ে ভালমানের আম সর্বোচ্চ ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে এখনও বাজারে থাকা অধিকাংশ আমই ৭০ থেকে ৯০ টাকার মধ্যে রয়েছে। শান্তিনগর বাজারের ফল বিক্রেতা মোশাররফ হোসেন জানান, বেশ কিছুদিন বিক্রি ভাল থাকলেও করোনাভাইরাসে সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় আবারও দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হলে আমের ব্যবসাও বন্ধ করে দিতে হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন তিনি। মোশাররফ বলেন, “ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে ফ্যামেলি নিয়ে কীভাবে চলব তা নিয়েই চিন্তায় আছি। সরকার যেন আমাদের মত ছোট-খাটো ব্যবসায়ীদের স্মরণ করে লকডাউন দেয়। পচনশীল মৌসুমি ফলের দোকানপাট যেন খোলা রাখে সরকারের কাছে সেই দাবি করি।” রামপুরা বাজার এলাকার ফল ব্যবসায়ী আব্দুল মুতালেব বলেন, “আমাদের ফলের ব্যবসা সারাবছর থাকলেও আম-লিচু সিজনের দিকে তাকিয়ে থাকি। গত এক মাস আমের ব্যবসাও বেশ ভাল হয়েছে। এখন যদি লকডাউন দিয়ে দেয় তাহলে তো দোকান বন্ধ রাখতে হবে। এতে আম চাষীরা আম বিক্রি করবে কার কাছে?” ঢাকা মহানগর ফল আমদানি-রপ্তানিকারক ও আড়তদার ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারীর কারণে এতোদিন পর্যন্ত আমের বাজারে তেমন প্রভাব না পড়লেও ‘শাটডাউন’ দেওয়া হলে আমের বিক্রিতে বড় ধরণের প্রভাব পড়বে।
“এবার আমের ফলন বেশ ভাল হয়েছে। আবার মহামারীর চলছে, যে কারণে গতবারের চেয়ে এবার আম একটু সস্তায় বিক্রি হচ্ছে। এমনিতেই আমাদের দেশে আম সস্তায় পাওয়া যায়।” সিরাজুল ইসলাম বলেন, আগেভাগে বাজারে এসে ইতোমধ্যে গোপালভোগ আম শেষ হয়ে গেছে। আর হিমসাগর আমও প্রায় শেষ দিকে চলে এসেছে। অন্যান্যগুলো এখনও বাজার ভরপুর। বাকি আরও দুইটি-তিনটি জাতের আম আগামী এক থেকে দেড় মাস সময় বাজারে থাকবে। রাজশাহী অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আব্দুল আউয়াল বলেন, “মহামারীর মধ্যে এতোদিন রাজশাহী বা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আম ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় পরিবহণের কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু ভোক্তার সংকটে হয়তো আম পাইকারী ব্যবসায়ীরা না আসতে পারে, সেই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।” তবে ইতোমধ্যে রাজশাহী অঞ্চলের ৭০ শতাংশ আম উঠে গেছে বলে জানান তিনি।