ঢাকা ১১:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

উত্তাল ইরানের এক শহর নিরাপত্তা বাহিনীর হাতছাড়া

  • আপডেট সময় : ০২:২৩:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ৮৪ বার পড়া হয়েছে

ডয়চে ভেলে : ইসলামি বিপ্লবের পর এই প্রথমবারের মতো ইরানের পশ্চিম আজারবাইজান প্রদেশের আশনোয় শহরের নিয়ন্ত্রণ বিক্ষোভকারীদের হাতে। তাওহিদ জাভাদি নামে একজন গণমাধ্যমকর্মী টুইটবার্তায় লিখেছেন, ১৯৫৭ সালের পর প্রথমবারের মতো একটি শহর সম্পূর্ণরূপে বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। কুর্দি নারী মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় চলমান বিক্ষোভ থামছেই না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর মাত্রা বাড়ছে এবং পরিস্থিতি ইরানি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
কয়েকটি টুইটার ভিডিওর আলোকে ডয়চে ভেলে ফার্সির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামি বিপ্লবের পর এই প্রথমবারের মতো ইরানের পশ্চিম আজারবাইজান প্রদেশের আশনোয় শহরের নিয়ন্ত্রণ বিক্ষোভকারীদের হাতে। তাওহিদ জাভাদি নামে একজন গণমাধ্যমকর্মী টুইটবার্তায় লিখেছেন, ১৯৫৭ সালের পর প্রথমবারের মতো একটি শহর সম্পূর্ণরূপে বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। টুইটারে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা গেছে, শহর ছেড়ে মোটরবাইকে করে পালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এদিকে তেহরানের রাস্তা থেকে প্রকাশ করা এক ভিডিওতে বিক্ষোভকারীরা দাবি করেছে, বিক্ষোভকারী জনতা তেহরানের সব রাস্তা দখল করেছে। তবে নিরপেক্ষভাবে দাবির সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ইন্টারনেটে হস্তক্ষেপ, ইনস্টাগ্রাম-হোয়াটসঅ্যাপ ব্লক করা, আইআরজিসি ও বিচার বিভাগের হুমকি, এমনকি বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি। কোনো কিছুই থামাতে পারছে না নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে থাকা মাহসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চলা ইরানে চলমান বিক্ষোভ। ইরানের বেশ কয়েকটি শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘাত হয়েছে। ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে সরকারি এজেন্টকে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে দেখা গেছে। ঘটনাস্থলের কাছাকাছি থাকা মানুষেরা তাকে গুলি না ছুড়তে অনুরোধ করলেও এজেন্ট কথা শোনেনি। এরই মধ্যে অনলাইনে তার ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। অন্য একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, তেহরানের রাস্তায় বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। শুক্রবার রাতে ইরানের অনেক শহরে রাস্তায় মানুষজন বিক্ষোভ করেছে। তারা এ সময় ‘খামেনির মৃত্যু’, ‘স্বৈরশাসকের মৃত্যু’ এবং ‘আমরা জেগে উঠব’ স্লোগান দেয়।
হিজাববিরোধী বিক্ষোভে নিহত ৫০
এদিকে ইরানে চলমান হিজাববিরোধী বিক্ষোভে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন। গত শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) হিজাবের পক্ষে পাল্টা সমাবেশ করেন সরকার সমর্থকরা। খবর আরব নিউজ। অসলো ভিত্তিক ইরানের মানবাধিকার সংস্থা শুক্রবার জানিয়েছে, সরকার বিরোধী বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন। এই সংখ্যা সরকারি ঘোষণার চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি। সরকারি হিসেবে এ সংখ্যা ১৭। এর মধ্যে পাঁচজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যও রয়েছেন। সংস্থাটি আরও জানায়, দেশটির ছোট-বড় ৮০টি শহরে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
মাহাশা আমিনিকে মৃত ঘোষণা করার পর প্রথম তার জন্মস্থান কুর্দিস্তান প্রদেশের শাকাজ শহরে ব্যাপকমাত্রায় বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে রাজধানী তেহরানসহ ইসফাহান, মাশহাদ, শিরাজ এবং তাবরিজ’র মতো প্রধান শহরগুলোতে তা ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিও’তে দেখা গেছে, বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কয়েকজন নারী তাদের হিজাব খুলে ফেলে তা আগুনে পুড়িয়ে দেন। অনেকে প্রতিবাদ স্বরূপ নিজেদের মাথার চুল কাটেন। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা পুলিশদের লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়েছে এবং তাদের গাড়িতে আগুন দিয়েছে। নিউইয়র্কে একটি সংবাদ সম্মেলনে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই বিক্ষোভকারী এবং ভাঙচুরের মধ্যে পার্থক্য করতে হবে।’ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগ দেওয়ার জন্য সেখানে অবস্থান করেছেন তিনি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

উত্তাল ইরানের এক শহর নিরাপত্তা বাহিনীর হাতছাড়া

আপডেট সময় : ০২:২৩:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

ডয়চে ভেলে : ইসলামি বিপ্লবের পর এই প্রথমবারের মতো ইরানের পশ্চিম আজারবাইজান প্রদেশের আশনোয় শহরের নিয়ন্ত্রণ বিক্ষোভকারীদের হাতে। তাওহিদ জাভাদি নামে একজন গণমাধ্যমকর্মী টুইটবার্তায় লিখেছেন, ১৯৫৭ সালের পর প্রথমবারের মতো একটি শহর সম্পূর্ণরূপে বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। কুর্দি নারী মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় চলমান বিক্ষোভ থামছেই না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর মাত্রা বাড়ছে এবং পরিস্থিতি ইরানি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
কয়েকটি টুইটার ভিডিওর আলোকে ডয়চে ভেলে ফার্সির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামি বিপ্লবের পর এই প্রথমবারের মতো ইরানের পশ্চিম আজারবাইজান প্রদেশের আশনোয় শহরের নিয়ন্ত্রণ বিক্ষোভকারীদের হাতে। তাওহিদ জাভাদি নামে একজন গণমাধ্যমকর্মী টুইটবার্তায় লিখেছেন, ১৯৫৭ সালের পর প্রথমবারের মতো একটি শহর সম্পূর্ণরূপে বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। টুইটারে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা গেছে, শহর ছেড়ে মোটরবাইকে করে পালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এদিকে তেহরানের রাস্তা থেকে প্রকাশ করা এক ভিডিওতে বিক্ষোভকারীরা দাবি করেছে, বিক্ষোভকারী জনতা তেহরানের সব রাস্তা দখল করেছে। তবে নিরপেক্ষভাবে দাবির সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ইন্টারনেটে হস্তক্ষেপ, ইনস্টাগ্রাম-হোয়াটসঅ্যাপ ব্লক করা, আইআরজিসি ও বিচার বিভাগের হুমকি, এমনকি বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি। কোনো কিছুই থামাতে পারছে না নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে থাকা মাহসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চলা ইরানে চলমান বিক্ষোভ। ইরানের বেশ কয়েকটি শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘাত হয়েছে। ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে সরকারি এজেন্টকে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে দেখা গেছে। ঘটনাস্থলের কাছাকাছি থাকা মানুষেরা তাকে গুলি না ছুড়তে অনুরোধ করলেও এজেন্ট কথা শোনেনি। এরই মধ্যে অনলাইনে তার ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। অন্য একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, তেহরানের রাস্তায় বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। শুক্রবার রাতে ইরানের অনেক শহরে রাস্তায় মানুষজন বিক্ষোভ করেছে। তারা এ সময় ‘খামেনির মৃত্যু’, ‘স্বৈরশাসকের মৃত্যু’ এবং ‘আমরা জেগে উঠব’ স্লোগান দেয়।
হিজাববিরোধী বিক্ষোভে নিহত ৫০
এদিকে ইরানে চলমান হিজাববিরোধী বিক্ষোভে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন। গত শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) হিজাবের পক্ষে পাল্টা সমাবেশ করেন সরকার সমর্থকরা। খবর আরব নিউজ। অসলো ভিত্তিক ইরানের মানবাধিকার সংস্থা শুক্রবার জানিয়েছে, সরকার বিরোধী বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন। এই সংখ্যা সরকারি ঘোষণার চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি। সরকারি হিসেবে এ সংখ্যা ১৭। এর মধ্যে পাঁচজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যও রয়েছেন। সংস্থাটি আরও জানায়, দেশটির ছোট-বড় ৮০টি শহরে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
মাহাশা আমিনিকে মৃত ঘোষণা করার পর প্রথম তার জন্মস্থান কুর্দিস্তান প্রদেশের শাকাজ শহরে ব্যাপকমাত্রায় বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে রাজধানী তেহরানসহ ইসফাহান, মাশহাদ, শিরাজ এবং তাবরিজ’র মতো প্রধান শহরগুলোতে তা ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিও’তে দেখা গেছে, বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কয়েকজন নারী তাদের হিজাব খুলে ফেলে তা আগুনে পুড়িয়ে দেন। অনেকে প্রতিবাদ স্বরূপ নিজেদের মাথার চুল কাটেন। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা পুলিশদের লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়েছে এবং তাদের গাড়িতে আগুন দিয়েছে। নিউইয়র্কে একটি সংবাদ সম্মেলনে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই বিক্ষোভকারী এবং ভাঙচুরের মধ্যে পার্থক্য করতে হবে।’ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগ দেওয়ার জন্য সেখানে অবস্থান করেছেন তিনি।