নিজস্ব প্রতিবেদক : পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, যতদিন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা হবে, ততদিন পুলিশের বীরত্বগাঁথা উচ্চারিত হবে। কারণ স্বাধীনতা যুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা ছিল বীরত্বগাঁথা।
গতকাল রোববার বিকালে বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে ‘মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ’ শীর্ষক গ্রন্থের পাঠ উন্মোচন উৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি। আইজিপি বলেন, গত শতকে দুটি ঘটনা ঘটে গেছে। যা চার হাজার বছরের গতিপথ পাল্টে দেয়। তা হলো, বঙ্গবন্ধুর আবির্ভাব, আরেকটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। ইতিহাসে, চর্চায় বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার যুদ্ধে বীরত্বগাঁথা রয়ে যাবে। সেই যুদ্ধর পুলিশের যে বীরত্বগাঁথা ছিল তা এই গ্রন্থের নমুনা মাত্র।
আইজিপি বলেন, আমরা স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর ৩০ বছর গণতন্ত্রের দেখা মেলেনি। এই সময় স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়ী স্বাধীন দেশের পতাকা দেখেছি। তবে জ্ঞান-বিজ্ঞানের কারণে খুব সহজেই আমরা এখন তুলনা করতে পারি৷ তাছাড়া আমাদের একটা প্রমিজিং জেনারেশন রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে পুলিশের ছায়ার মতো সংযোগ ছিল দাবি করে পুলিশপ্রধান বলেন, এখন অনেক সত্য ইতিহা বেড়িয়ে আসছে সিক্রেট ডকুমেন্টস সূত্রে জানতে পারি। বাঙালি পুলিশ শুরু থেকেই বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিল। সভা-সমিতি করার ব্যবস্থা করেছে বাঙালি পুলিশ। বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীতে তা উঠে এসেছে। রাজারবাগে প্রতিনিয়ত ঝগড়া হতো বাঙালি অবাঙালি পুলিশের মধ্যে। বাঙালি পুলিশ সবসময় বঞ্চনা উপলব্ধি করেছে। বঙ্গবন্ধুর স্বাধিকার আন্দোলনে শুরু থেকে একাত্ম ছিল পুলিশ। কারণ সরকারি চাকরি সূত্রে বাঙালি পুলিশ বঞ্চনাটা কি তা বুঝতে পেতো।
‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের স্বাধীনতার ভাষণের পর মহকুমা পুলিশ লাইনে পুলিশ অস্ত্র বিতরণ করেছে, ছাত্রসহ সাধারণ মানুষের মাঝে। স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রস্তুতিপর্বেই পুলিশ প্রশিক্ষণ দিয়েছে, আলমারি খুলে অস্ত্র গুলি দিয়েছে। ১৪ হাজার পুলিশ সদস্য মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। যেকারণে মুক্তিযুদ্ধে প্রাক প্রস্তুতি বা গণভিত্তি পেতে বেশি সময় লাগেনি। স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৪ হাজারের মতো সদস্য অংশ নিয়েছে। যা প্রায় ৬০ শতাংশ’—যোগ করেন আইজিপি। পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে পুলিশের বীরত্বগাঁথা নিয়ে অনেক আগেই কাজ শুরু হয়েছে৷ ডকুমেন্টারি হয়েছে। বই লেখা হয়েছে। আমরা উদ্যোগ নেব। প্রয়োজনে ৬৪ জেলায় মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আলাদা প্রকল্প নেব। যার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা আলাদা করে প্রকাশ করব। এখন অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে৷ আমরা পুলিশের গর্বের জায়গাগুলো, প্রকৃত ইতিহাস প্রকাশ করতে চাই। বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আয়োজনে ও পাঞ্জেরি পাবলিকেশন্স লি. এর সহযোগিতায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, প্রখ্যাত চিত্রকার ও ভাস্কর রেডিও শিল্পী মুস্তফা মনোয়ার, কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে প্রথম পাঠ উন্মোচন আলোচনায় অংশ নেন কনস্টেবল মোহাম্মদ শাহজাহান, যিনি রাজারবাগে ওয়্যারলেস ম্যাসেজ দিয়েছিলেন প্রথম প্রতিরোধের ডাক দিয়েছিলেন। উপস্থিত ছিলেন এলিট ফোর্স র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত আইজিপি(প্রশাসন) কামরুল আহসান।
‘যতদিন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা হবে, ততদিন পুলিশের বীরত্বগাঁথা উচ্চারিত হবে’
ট্যাগস :
যতদিন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা হবে
জনপ্রিয় সংবাদ
























