ঢাকা ১২:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫

ছাড় দিয়ে বিক্রির দাবি সুপারশপগুলোর

  • আপডেট সময় : ১২:২৩:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ১২৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের সুপারশপগুলো প্রতিদিন দেড় শতাধিকেরও বেশি পণ্যে ৫-১০ শতাংশ ছাড় দিয়ে বিক্রি করছে। এমন প্রেক্ষাপটে দেশের সুপারশপগুলো সাধারণ বাজারের তুলনায় বেশি দামে পণ্য বিক্রি করছে- এমন অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, দেশের মোট বাজারের সর্বোচ্চ দুই শতাংশ অবদান রাখছে সুপারশপগুলো। সেখানে দেশের মোট বাজারের পণ্যমূল্যের ওপর সুপারশপগুলো কোনোভাবেই প্রভাব বিস্তার করে না। এছাড়া সুপারশপগুলো উৎপাদকদের সঙ্গে যোগসাজশ করে প্যাকেটজাত পণ্যের দাম নির্ধারণ করে-এমন অভিযোগও শতভাগ ভিত্তিহীন। উৎপাদকের ওপর প্রভাব বিস্তার করার সক্ষমতা সুপারশপগুলোর নেই বলেও জানিয়েছেন তারা। সুপারশপ কর্তৃপক্ষ বলছে, সাধারণ বাজারের তুলনায় সুপারশপে মূল্য বেশি- এমন অভিযোগ ঠিক নয়। সাধারণ বাজারের পণ্যের মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও সুপারশপের পণ্যের মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। সুপারশপগুলো সবসময়ই পণ্য ও সেবার মান নিশ্চিত করে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শফিকুজ্জামানের মত ছিল একটু ভিন্ন। তার মতে, সুপারশপগুলো উৎপাদনকারীর সঙ্গে যোগসাজশের মাধ্যমে নানা জাতের চালের প্যাকেটের গায়ে বাজারের তুলনায় বেশি দাম নির্ধারণ করে এমআরপি (সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য) লিখে বিক্রি করে। তবে গত মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এ নিয়ে উৎপাদনকারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার মতামতে ভিন্নতা এসেছে। বিষয়গুলো সরকারের নজরে আনতে বাংলাদেশ সুপারশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। গত ১২ সেপ্টেম্বর সংগঠনের পক্ষ থেকে সভাপতি কাজী ইনাম আহমেদের সই করা চিঠিতে জানানো হয়েছে, ৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত দ্রব্যমূল্য নিয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বক্তব্য একপাক্ষিক ও ভিত্তিহীন। সুপারশপগুলো পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোকে প্রভাবিত করে এমআরপি নির্ধারণ করে না। উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোই পণ্যের এমআরপি নির্ধারণ করে দেয়। সেক্ষেত্রে পণ্যের মোড়কে লেখা মূল্যের সঙ্গে বাড়তি দাম সংযোজন বা বিয়োজন করার কোনো সুযোগ নাই। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, সুপারশপগুলো ইরি ২৮ চাল মিনিকেট নামে বিক্রি করছে- মহাপরিচালকের এমন বক্তব্যও সঠিক নয়। কারণ দেশের চালকল মালিকেরা বা চাল উৎপাদনকারীরা মিনিকেট নামে চাল সারাদেশে বাজারজাত করছেন। কাজেই সুপারশপ কর্তৃপক্ষ মিনিকেট চালের নামকরণের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, সুপারশপগুলো প্রতিযোগিতামূলক বাজারে নিজেদের টিকেয়ে রাখতে বাজারের তুলনায় কম দামে পণ্য বিক্রি করে ব্যবসা করছে। এখানে ক্রেতাদের পদে পদে প্রতারিত করার কোনো সুযোগ নেই।
চিঠি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, আমরা একটা সমাধানে যাচ্ছি। আমরা বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের চিঠি দিয়েছি। তারা আমাদের প্রতিবেদন দেবেন।
সুপারশপ স্বপ্ন’র নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির জানান, সুপারশপগুলো প্রতিদিন ১৫০টিরও বেশি পণ্যে ১০ শতাংশ ছাড় দিয়ে বিক্রি করছে। ফলে সুপারশপ থেকে ক্রেতারা কাঁচাবাজারের তুলনায় কম দামে পণ্য কেনার সুযোগ পাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, একটা জায়গা আমরা ভাড়া নিচ্ছি, যেখানে এসি থাকে। স্বাস্থ্যগত বিষয় মাথায় রেখে আমাদের চিলারগুলোতে মাছ-মাংস ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখতে হয়। তার জন্য ইলেক্ট্রিসিটি চার্জ আছে। সবকিছু যদি যোগ করা হয় তাহলে আমাদের পরিচালন ব্যয় ২২% এর বেশি, কিন্তু আমাদের পরিচালন মুনাফা ০.৫ শতাংশেরও নিচে। মিনা বাজারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শাহীন খান বলেন, সুপারশপগুলোতে বিক্রি হওয়া পণ্যের মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। দেশি ডাল মানে দেশি ডাল, নদীর মাছ মানে নদীর মাছ। দেশির সঙ্গে বিদেশি বা নদীর সঙ্গে সাগর মিশিয়ে পণ্য বিক্রি করার প্রশ্নই ওঠে না। কাজেই সুপারশপগুলো দেশি ডালের দামই রাখবে। নদীর মাছের দামই রাখবে।
তিনি বলেন, সুপারশপগুলো ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করে না। পাইকারি ও খুচরা বাজারে মিনিকেট নামে হাজার হাজার বস্তা চাল বিক্রি হচ্ছে। এটি আমাদের দেওয়া নাম নয়। সরকার যদি কাল এ চালের নাম পরিবর্তন করে অন্য নাম দেয়, তাহলে আমরা অন্য নামেই বিক্রি করবো। কোনও আপত্তি নাই।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

গুমের মামলায় ট্রাইব্যুনালে হাজির ১৩ সেনা কর্মকর্তা

ছাড় দিয়ে বিক্রির দাবি সুপারশপগুলোর

আপডেট সময় : ১২:২৩:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের সুপারশপগুলো প্রতিদিন দেড় শতাধিকেরও বেশি পণ্যে ৫-১০ শতাংশ ছাড় দিয়ে বিক্রি করছে। এমন প্রেক্ষাপটে দেশের সুপারশপগুলো সাধারণ বাজারের তুলনায় বেশি দামে পণ্য বিক্রি করছে- এমন অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, দেশের মোট বাজারের সর্বোচ্চ দুই শতাংশ অবদান রাখছে সুপারশপগুলো। সেখানে দেশের মোট বাজারের পণ্যমূল্যের ওপর সুপারশপগুলো কোনোভাবেই প্রভাব বিস্তার করে না। এছাড়া সুপারশপগুলো উৎপাদকদের সঙ্গে যোগসাজশ করে প্যাকেটজাত পণ্যের দাম নির্ধারণ করে-এমন অভিযোগও শতভাগ ভিত্তিহীন। উৎপাদকের ওপর প্রভাব বিস্তার করার সক্ষমতা সুপারশপগুলোর নেই বলেও জানিয়েছেন তারা। সুপারশপ কর্তৃপক্ষ বলছে, সাধারণ বাজারের তুলনায় সুপারশপে মূল্য বেশি- এমন অভিযোগ ঠিক নয়। সাধারণ বাজারের পণ্যের মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও সুপারশপের পণ্যের মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। সুপারশপগুলো সবসময়ই পণ্য ও সেবার মান নিশ্চিত করে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শফিকুজ্জামানের মত ছিল একটু ভিন্ন। তার মতে, সুপারশপগুলো উৎপাদনকারীর সঙ্গে যোগসাজশের মাধ্যমে নানা জাতের চালের প্যাকেটের গায়ে বাজারের তুলনায় বেশি দাম নির্ধারণ করে এমআরপি (সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য) লিখে বিক্রি করে। তবে গত মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এ নিয়ে উৎপাদনকারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার মতামতে ভিন্নতা এসেছে। বিষয়গুলো সরকারের নজরে আনতে বাংলাদেশ সুপারশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। গত ১২ সেপ্টেম্বর সংগঠনের পক্ষ থেকে সভাপতি কাজী ইনাম আহমেদের সই করা চিঠিতে জানানো হয়েছে, ৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত দ্রব্যমূল্য নিয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বক্তব্য একপাক্ষিক ও ভিত্তিহীন। সুপারশপগুলো পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোকে প্রভাবিত করে এমআরপি নির্ধারণ করে না। উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোই পণ্যের এমআরপি নির্ধারণ করে দেয়। সেক্ষেত্রে পণ্যের মোড়কে লেখা মূল্যের সঙ্গে বাড়তি দাম সংযোজন বা বিয়োজন করার কোনো সুযোগ নাই। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, সুপারশপগুলো ইরি ২৮ চাল মিনিকেট নামে বিক্রি করছে- মহাপরিচালকের এমন বক্তব্যও সঠিক নয়। কারণ দেশের চালকল মালিকেরা বা চাল উৎপাদনকারীরা মিনিকেট নামে চাল সারাদেশে বাজারজাত করছেন। কাজেই সুপারশপ কর্তৃপক্ষ মিনিকেট চালের নামকরণের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, সুপারশপগুলো প্রতিযোগিতামূলক বাজারে নিজেদের টিকেয়ে রাখতে বাজারের তুলনায় কম দামে পণ্য বিক্রি করে ব্যবসা করছে। এখানে ক্রেতাদের পদে পদে প্রতারিত করার কোনো সুযোগ নেই।
চিঠি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, আমরা একটা সমাধানে যাচ্ছি। আমরা বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের চিঠি দিয়েছি। তারা আমাদের প্রতিবেদন দেবেন।
সুপারশপ স্বপ্ন’র নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির জানান, সুপারশপগুলো প্রতিদিন ১৫০টিরও বেশি পণ্যে ১০ শতাংশ ছাড় দিয়ে বিক্রি করছে। ফলে সুপারশপ থেকে ক্রেতারা কাঁচাবাজারের তুলনায় কম দামে পণ্য কেনার সুযোগ পাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, একটা জায়গা আমরা ভাড়া নিচ্ছি, যেখানে এসি থাকে। স্বাস্থ্যগত বিষয় মাথায় রেখে আমাদের চিলারগুলোতে মাছ-মাংস ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখতে হয়। তার জন্য ইলেক্ট্রিসিটি চার্জ আছে। সবকিছু যদি যোগ করা হয় তাহলে আমাদের পরিচালন ব্যয় ২২% এর বেশি, কিন্তু আমাদের পরিচালন মুনাফা ০.৫ শতাংশেরও নিচে। মিনা বাজারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শাহীন খান বলেন, সুপারশপগুলোতে বিক্রি হওয়া পণ্যের মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। দেশি ডাল মানে দেশি ডাল, নদীর মাছ মানে নদীর মাছ। দেশির সঙ্গে বিদেশি বা নদীর সঙ্গে সাগর মিশিয়ে পণ্য বিক্রি করার প্রশ্নই ওঠে না। কাজেই সুপারশপগুলো দেশি ডালের দামই রাখবে। নদীর মাছের দামই রাখবে।
তিনি বলেন, সুপারশপগুলো ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করে না। পাইকারি ও খুচরা বাজারে মিনিকেট নামে হাজার হাজার বস্তা চাল বিক্রি হচ্ছে। এটি আমাদের দেওয়া নাম নয়। সরকার যদি কাল এ চালের নাম পরিবর্তন করে অন্য নাম দেয়, তাহলে আমরা অন্য নামেই বিক্রি করবো। কোনও আপত্তি নাই।