ঢাকা ০৮:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫

প্রান্তিক স্বাস্থ্যসেবায় গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক

  • আপডেট সময় : ১২:০০:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ৮৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। তবে চিকিৎসক ছাড়া চিকিৎসা সহকারী দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করায় এই কমিউনিটি ক্লিনিক তার গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যবিদরা। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ (বিএইচডব্লিউ), চ্যাথাম হাউজ ও ইউনিসেফের সহযোগিতায় স্বাস্থ্যখাতে কাজ করা সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা বাস্তবায়নের সুযোগ ও চ্যালেঞ্জেবিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ মন্তব্য করেন। বক্তারা বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ৩০ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। যেখানে সাধারণ নিত্যপ্রয়োজনীয় ওষুধের সঙ্গে আছে অ্যান্টিবায়োটিকও। কিন্তু কমিউনিটি ক্লিনিকে মানুষের চিকিৎসা ও এসব ওষুধের ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হবে প্যারামেডিকস বা সহকারী মেডিকেল অফিসারের মাধ্যমে। যা সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য আরও ঝুঁকিতে ফেলবে। একজন কোয়ালিফাইড মানুষ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দেওয়া কতটুকু যুক্তিযুক্ত! এছাড়াও বক্তারা এই কমিউনিটি ক্লিনিকে জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে ক্ষমতাশালীদের হস্তক্ষেপ ও নিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। তারা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের স্বাস্থ্যসবার কথা চিন্তা করে ব্যবস্থা নিলেও সঠিক পরামর্শ দেওয়ার মতো কোনো লোক এখন নেই। যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও নানা কারণে সফলতার মুখ দেখে না। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পরামর্শগুলো প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত পৌঁছানোর উদ্যোগের আহ্বানও জানান স্বাস্থ্যবিদরা। এ সময় চিকিৎসাখাতে নানা অসঙ্গতি নিয়ে বক্তারা আলোচনা করেন। তারা বলেন, সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালের সামনে দেখা যায় মোটরসাইকেলের লাইন। ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা রোগীর প্রেসক্রিপশনের ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়েন। এছাড়া ওষুধের মূল্য নির্ধারণেও রয়েছে নানা অসঙ্গতি। ১১৭টি ওষুধের মূল্য ওষুধ প্রশাসন নির্ধারণ করে থাকে। তবে যে কমিটির মাধ্যমে এই ওষুধের দাম নির্ধারণ হয় সেখানে দেখা যায় বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির মালিক আছেন। এতে তাদের মনমতোই ওষুধের দাম নির্ধারণ হয়।
গোলটেবিল আলোচনায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার বিভিন্ন স্তরে স্বাস্থ্যের জন্য অর্থায়ন, মানবসম্পদের সঠিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সুযোগ, চ্যালেঞ্জ ও অন্যান্য বিষয়ের ওপর আলোকপাত করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের আহ্বায়ক আহমেদ মোশতাক রাজা চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্যের পর চ্যাথাম হাউজের ইউনিভার্সাল হেলথের নির্বাহী পরিচালক রবার্ট ইয়েটস প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে একটি গবেষণার ফলাফল ও তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেন। ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ বা সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা বাস্তবায়নের বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণ করা হয়। আলোচনায় উঠে আসে, সুশীল সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হওয়া উচিত, সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও এর বাস্তবায়নে কী কী বাধার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গোলটেবিল বৈঠকের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা বাস্তবায়নের সুযোগ এবং চ্যালেঞ্জের বিষয়ে সুশীল সমাজকে সম্পৃক্ত করা। যেহেতু বাংলাদেশ ২০৩২ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তাই এই গোলটেবিলটি কিছু বিষয়ে সুপারিশ করে। গোলটেবিল আলোচনায় স্বনামধন্য জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, ইউনিসেফের প্রতিনিধি এবং থিঙ্ক ট্যাঙ্ক চ্যাথাম হাউজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্রান্তিক স্বাস্থ্যসেবায় গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক

আপডেট সময় : ১২:০০:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। তবে চিকিৎসক ছাড়া চিকিৎসা সহকারী দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করায় এই কমিউনিটি ক্লিনিক তার গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যবিদরা। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ (বিএইচডব্লিউ), চ্যাথাম হাউজ ও ইউনিসেফের সহযোগিতায় স্বাস্থ্যখাতে কাজ করা সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা বাস্তবায়নের সুযোগ ও চ্যালেঞ্জেবিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ মন্তব্য করেন। বক্তারা বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ৩০ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। যেখানে সাধারণ নিত্যপ্রয়োজনীয় ওষুধের সঙ্গে আছে অ্যান্টিবায়োটিকও। কিন্তু কমিউনিটি ক্লিনিকে মানুষের চিকিৎসা ও এসব ওষুধের ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হবে প্যারামেডিকস বা সহকারী মেডিকেল অফিসারের মাধ্যমে। যা সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য আরও ঝুঁকিতে ফেলবে। একজন কোয়ালিফাইড মানুষ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দেওয়া কতটুকু যুক্তিযুক্ত! এছাড়াও বক্তারা এই কমিউনিটি ক্লিনিকে জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে ক্ষমতাশালীদের হস্তক্ষেপ ও নিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। তারা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের স্বাস্থ্যসবার কথা চিন্তা করে ব্যবস্থা নিলেও সঠিক পরামর্শ দেওয়ার মতো কোনো লোক এখন নেই। যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও নানা কারণে সফলতার মুখ দেখে না। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পরামর্শগুলো প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত পৌঁছানোর উদ্যোগের আহ্বানও জানান স্বাস্থ্যবিদরা। এ সময় চিকিৎসাখাতে নানা অসঙ্গতি নিয়ে বক্তারা আলোচনা করেন। তারা বলেন, সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালের সামনে দেখা যায় মোটরসাইকেলের লাইন। ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা রোগীর প্রেসক্রিপশনের ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়েন। এছাড়া ওষুধের মূল্য নির্ধারণেও রয়েছে নানা অসঙ্গতি। ১১৭টি ওষুধের মূল্য ওষুধ প্রশাসন নির্ধারণ করে থাকে। তবে যে কমিটির মাধ্যমে এই ওষুধের দাম নির্ধারণ হয় সেখানে দেখা যায় বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির মালিক আছেন। এতে তাদের মনমতোই ওষুধের দাম নির্ধারণ হয়।
গোলটেবিল আলোচনায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার বিভিন্ন স্তরে স্বাস্থ্যের জন্য অর্থায়ন, মানবসম্পদের সঠিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সুযোগ, চ্যালেঞ্জ ও অন্যান্য বিষয়ের ওপর আলোকপাত করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের আহ্বায়ক আহমেদ মোশতাক রাজা চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্যের পর চ্যাথাম হাউজের ইউনিভার্সাল হেলথের নির্বাহী পরিচালক রবার্ট ইয়েটস প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে একটি গবেষণার ফলাফল ও তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেন। ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ বা সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা বাস্তবায়নের বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণ করা হয়। আলোচনায় উঠে আসে, সুশীল সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হওয়া উচিত, সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও এর বাস্তবায়নে কী কী বাধার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গোলটেবিল বৈঠকের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা বাস্তবায়নের সুযোগ এবং চ্যালেঞ্জের বিষয়ে সুশীল সমাজকে সম্পৃক্ত করা। যেহেতু বাংলাদেশ ২০৩২ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তাই এই গোলটেবিলটি কিছু বিষয়ে সুপারিশ করে। গোলটেবিল আলোচনায় স্বনামধন্য জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, ইউনিসেফের প্রতিনিধি এবং থিঙ্ক ট্যাঙ্ক চ্যাথাম হাউজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।