ঢাকা ১২:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫

কংগ্রেসের অনুষ্ঠান নিয়ে আসামের মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে বিতর্ক

  • আপডেট সময় : ১২:৩১:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ১১৭ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময়েই আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা গত বুধবার সন্ধ্যায় বলেছেন, বাংলাদেশকে বর্তমানে ভারতের সঙ্গে জোড়ার (এক করার) কাজ করতে পারে কংগ্রেস। কংগ্রেসের ১৫০ দিনের ‘ভারত জোড়ো’ পদযাত্রা নিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন। বিজেপিশাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে ভারতে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সম্ভবত সেই কারণেই, তাঁর সামাজিক মাধ্যম টুইটারে মন্তব্যটি রাখা হলেও বাংলাদেশের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। যদিও বার্তাটি তাঁর টুইটার পাতার একেবারে উপরে রয়েছে। বিশ্বশর্মার মন্তব্যটি ভারতের একাধিক পত্রপত্রিকায় প্রতিবেদন আকারে বেরিয়েছে আজ বৃহস্পতিবার। গত বুধবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী তাঁর ১৫০ দিনের ‘ভারত জোড়ো’ পদযাত্রা শুরু করেছেন দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু থেকে। তাঁর এ পদযাত্রার লক্ষ্য অর্থনৈতিক অসাম্য, সামাজিক মেরুকরণ এবং অত্যধিক রাজনৈতিক কেন্দ্রিকতার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে জনমত গড়ে তোলা। তাঁর এ চেষ্টার বিরোধিতা করে হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, রাহুল গান্ধীর পরিবারই দেশভাগ করেছিল। অথচ এখন তিনিই আবার দেশ জোড়ার কথা বলছেন।
বিশ্বশর্মা বলেন, ‘১৯৪৭ সালে কংগ্রেস ভারত ভেঙেছিল। তারা ভারত থেকে পাকিস্তান গড়েছিল, যা থেকে পড়ে বাংলাদেশ তৈরি হয়। এখন রাহুল গান্ধী হয়তো ক্ষমা চাইতে চান, তিনি হয়তো বলতে চান যে আমার মাতামহ। রাহুল গান্ধী হয়তো বলতে চান যে প-িত নেহরুর সময় যা হয়েছিল, তা হওয়া উচিত হয়নি। তাঁর মনে এই আফসোস যদি থাকে, তবে তার জন্য ভারতের ভূ-অঞ্চলকে নতুন করে ঢুকতে যাওয়ার কোনো মানে হয় না। যদি সত্যিই যুদ্ধ হয়, তাহলে তাঁর উচিত পাকিস্তানকে (ভারতের সঙ্গে) জোড়া বা বাংলাদেশকে (ভারতের সঙ্গে) জোড়ার জন্য পরিশ্রম করা। অখ-িত ভারত তৈরি করার জন্য তাঁর চেষ্টা করা উচিত।’ ভারতজুড়ে সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার ‘পদযাত্রা’ কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী উল্লেখ্য, ভারতের হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের চিন্তা অখ- ভারতের কল্পনা রয়েছে, যে ভারত দক্ষিণ এশিয়ার মুসলমানপ্রধান দেশগুলো নিয়ে গঠিত। বিশ্বশর্মা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরের সময় এ মন্তব্য করেন, তাই রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের অখ- ভারতের চেতনাকেই সামনে নিয়ে এসেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। আসামের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বর্তমানের ভারত খ-িত ভারত নয়, সম্পূর্ণ একত্রিত একটি শক্তি। যে শক্তির বিস্তার কাশ্মীর থেকে তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী, দক্ষিণ আসামের শিলচর থেকে গুজরাটের সৌরাষ্ট্র পর্যন্ত। এই ভারত জুড়েই রয়েছে, তাকে নতুন করে জোড়ার প্রয়োজন রাহুল গান্ধীর নেই। যে দেশকে আপনার দলই ভেঙেছিল, সেই দলকে আপনি জোড়ার কথা বলছেন, একে আমি একটা কমেডি বলব।’ হায়দরাবাদ হাউসে একান্ত বৈঠকের আগে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবার, নয়াদিল্লি, ভারত আসামে বেসরকারি মাদ্রাসা ভেঙে ফেলার প্রশ্নে হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, ‘এই তিন মাদ্রাসা মাদ্রাসা ছিল না, আল–কায়েদার দপ্তর ছিল। এখন সাধারণ মানুষ এবং মুসলমান সমাজ নিজেরাই মাদ্রাসাগুলো ভেঙে ফেলছে। তাঁরা বলছেন, এমন মাদ্রাসা আমাদের অঞ্চলে চাই না, যেখানে আল-কায়েদার কাজকর্ম চলে। যেখানে আল-কায়েদার কাজকর্ম চলে, সেখানে মাদ্রাসার চরিত্র স্বাভাবিকভাবেই পরিবর্তিত হয়।’ উত্তর আসামের গোয়ালপাড়া জেলার সাধারণ মানুষ নিজেরাই গত মঙ্গলবার একটি মাদ্রাসা ভেঙে ফেলেছেন দাবি করে বিশ্বশর্মা বলেন, তাঁর সরকারের তরফে এ চতুর্থ মাদ্রাসাটি ভাঙার ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা হয়নি।
আসামের মুসলমানকে ‘দেশপ্রেমিক’ বলে বর্ণনা করে বিশ্বশর্মা বলেন, ভারতবর্ষের জনপ্রিয় মুসলমান সমাজের নেতা হায়দরাবাদের আসাদউদ্দিন ওয়াইসি আসামে এসে মুসলমান সমাজের মধ্যে প্রচার করতে পারেন। কিন্তু তিনি আসামের মুসলমানকে প্রভাবিত করতে পারবেন না।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

কংগ্রেসের অনুষ্ঠান নিয়ে আসামের মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে বিতর্ক

আপডেট সময় : ১২:৩১:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময়েই আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা গত বুধবার সন্ধ্যায় বলেছেন, বাংলাদেশকে বর্তমানে ভারতের সঙ্গে জোড়ার (এক করার) কাজ করতে পারে কংগ্রেস। কংগ্রেসের ১৫০ দিনের ‘ভারত জোড়ো’ পদযাত্রা নিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন। বিজেপিশাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে ভারতে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সম্ভবত সেই কারণেই, তাঁর সামাজিক মাধ্যম টুইটারে মন্তব্যটি রাখা হলেও বাংলাদেশের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। যদিও বার্তাটি তাঁর টুইটার পাতার একেবারে উপরে রয়েছে। বিশ্বশর্মার মন্তব্যটি ভারতের একাধিক পত্রপত্রিকায় প্রতিবেদন আকারে বেরিয়েছে আজ বৃহস্পতিবার। গত বুধবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী তাঁর ১৫০ দিনের ‘ভারত জোড়ো’ পদযাত্রা শুরু করেছেন দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু থেকে। তাঁর এ পদযাত্রার লক্ষ্য অর্থনৈতিক অসাম্য, সামাজিক মেরুকরণ এবং অত্যধিক রাজনৈতিক কেন্দ্রিকতার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে জনমত গড়ে তোলা। তাঁর এ চেষ্টার বিরোধিতা করে হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, রাহুল গান্ধীর পরিবারই দেশভাগ করেছিল। অথচ এখন তিনিই আবার দেশ জোড়ার কথা বলছেন।
বিশ্বশর্মা বলেন, ‘১৯৪৭ সালে কংগ্রেস ভারত ভেঙেছিল। তারা ভারত থেকে পাকিস্তান গড়েছিল, যা থেকে পড়ে বাংলাদেশ তৈরি হয়। এখন রাহুল গান্ধী হয়তো ক্ষমা চাইতে চান, তিনি হয়তো বলতে চান যে আমার মাতামহ। রাহুল গান্ধী হয়তো বলতে চান যে প-িত নেহরুর সময় যা হয়েছিল, তা হওয়া উচিত হয়নি। তাঁর মনে এই আফসোস যদি থাকে, তবে তার জন্য ভারতের ভূ-অঞ্চলকে নতুন করে ঢুকতে যাওয়ার কোনো মানে হয় না। যদি সত্যিই যুদ্ধ হয়, তাহলে তাঁর উচিত পাকিস্তানকে (ভারতের সঙ্গে) জোড়া বা বাংলাদেশকে (ভারতের সঙ্গে) জোড়ার জন্য পরিশ্রম করা। অখ-িত ভারত তৈরি করার জন্য তাঁর চেষ্টা করা উচিত।’ ভারতজুড়ে সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার ‘পদযাত্রা’ কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী উল্লেখ্য, ভারতের হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের চিন্তা অখ- ভারতের কল্পনা রয়েছে, যে ভারত দক্ষিণ এশিয়ার মুসলমানপ্রধান দেশগুলো নিয়ে গঠিত। বিশ্বশর্মা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরের সময় এ মন্তব্য করেন, তাই রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের অখ- ভারতের চেতনাকেই সামনে নিয়ে এসেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। আসামের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বর্তমানের ভারত খ-িত ভারত নয়, সম্পূর্ণ একত্রিত একটি শক্তি। যে শক্তির বিস্তার কাশ্মীর থেকে তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী, দক্ষিণ আসামের শিলচর থেকে গুজরাটের সৌরাষ্ট্র পর্যন্ত। এই ভারত জুড়েই রয়েছে, তাকে নতুন করে জোড়ার প্রয়োজন রাহুল গান্ধীর নেই। যে দেশকে আপনার দলই ভেঙেছিল, সেই দলকে আপনি জোড়ার কথা বলছেন, একে আমি একটা কমেডি বলব।’ হায়দরাবাদ হাউসে একান্ত বৈঠকের আগে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবার, নয়াদিল্লি, ভারত আসামে বেসরকারি মাদ্রাসা ভেঙে ফেলার প্রশ্নে হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, ‘এই তিন মাদ্রাসা মাদ্রাসা ছিল না, আল–কায়েদার দপ্তর ছিল। এখন সাধারণ মানুষ এবং মুসলমান সমাজ নিজেরাই মাদ্রাসাগুলো ভেঙে ফেলছে। তাঁরা বলছেন, এমন মাদ্রাসা আমাদের অঞ্চলে চাই না, যেখানে আল-কায়েদার কাজকর্ম চলে। যেখানে আল-কায়েদার কাজকর্ম চলে, সেখানে মাদ্রাসার চরিত্র স্বাভাবিকভাবেই পরিবর্তিত হয়।’ উত্তর আসামের গোয়ালপাড়া জেলার সাধারণ মানুষ নিজেরাই গত মঙ্গলবার একটি মাদ্রাসা ভেঙে ফেলেছেন দাবি করে বিশ্বশর্মা বলেন, তাঁর সরকারের তরফে এ চতুর্থ মাদ্রাসাটি ভাঙার ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা হয়নি।
আসামের মুসলমানকে ‘দেশপ্রেমিক’ বলে বর্ণনা করে বিশ্বশর্মা বলেন, ভারতবর্ষের জনপ্রিয় মুসলমান সমাজের নেতা হায়দরাবাদের আসাদউদ্দিন ওয়াইসি আসামে এসে মুসলমান সমাজের মধ্যে প্রচার করতে পারেন। কিন্তু তিনি আসামের মুসলমানকে প্রভাবিত করতে পারবেন না।