ঢাকা ০৫:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আফগানিস্তানে তালেবানের অগ্রযাত্রায় শঙ্কিত জাতিসংঘ

  • আপডেট সময় : ১১:৩২:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুন ২০২১
  • ৬৮ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের চলমান প্রক্রিয়ার মধ্যে দেশটিতে হামলা জোরদার করেছে তালেবান। তারা ইতিমধ্যে আফগানিস্তানের কয়েক ডজন জেলা দখল করেছে। এ ঘটনায় শঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
আফগানিস্তান–বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত দেবোরা লিয়নস নিরাপত্তা পরিষদকে জানিয়েছেন, গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত দেশটির ৩৭০টির মধ্যে ৫০টির বেশি জেলা দখল করে নিয়েছে তালেবান। এ অবস্থায় আফগানিস্তানে মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছেন তিনি। জাতিসংঘের বিশেষ দূত বলেছেন, আফগানিস্তানে সংঘাত বৃদ্ধির অর্থ হলো, কাছের বা দূরবর্তী সময়ে অন্য অনেক দেশের নিরাপত্তাহীনতা বৃদ্ধি
আফগানিস্তান থেকে সব সেনা প্রত্যাহার করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো। চলতি বছরের ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব সেনা প্রত্যাহারের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের কার্যক্রম চলছে।
বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের সুযোগে আফগানিস্তানে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে সামরিক তৎপরতা জোরদার করেছে তালেবান। তালেবানের এই তৎপরতায় দেশটির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ও দেশটির শান্তিপ্রক্রিয়ার প্রধান আবদুল্লাহ আগামী শুক্রবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে জাতিসংঘের বিশেষ দূত বলেছেন, সামরিক তৎপরতা জোরদার করে তালেবান আফগানিস্তানের বেশ কিছু জেলা দখল করেছে। তারা যেসব জেলা দখল করেছে, সেগুলো দেশটির বিভিন্ন প্রাদেশিক রাজধানীর চারপাশে অবস্থিত। তালেবানের তৎপরতায় মনে হচ্ছে, আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হলেই তারা প্রাদেশিক রাজধানীগুলো দখল করার জন্য অবস্থান নিচ্ছে।
তালেবানের অগ্রযাত্রার মুখে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের নির্ধারিত সময়সীমায় কোনো পরিবর্তন আনা হচ্ছে না বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর। তবে সেনা প্রত্যাহারের গতি শ্লথ করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে পেন্টাগন।
আফগান প্রেসিডেন্ট গনির দাবি, দেশটির সরকারি বাহিনী তালেবানসহ অন্য জঙ্গিদের মোকাবিলা করতে সক্ষম। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, তারা তালেবানের সঙ্গে পেরে উঠছে না।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলা হয়। সেই হামলার জেরে আফগানিস্তানে সামরিক অভিযানে যায় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ইতিহাসের দীর্ঘতম এ যুদ্ধের ২০ বছর পূর্তির আগেই আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে গত এপ্রিলে ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এই ঘোষণা অনুযায়ী, আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের কার্যক্রম অনেকটা এগিয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, আফগানিস্তানে তাদের সামরিক উপস্থিতি থাকবে না। কিন্তু কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মানবিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
অবশ্য সংশ্লিষ্ট অনেক বিশ্লেষক আগে থেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করে বলে আসছেন, আফগানিস্তান থেকে সব বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের পর তালেবান জঙ্গিরা দেশটির ক্ষমতা দখল করে নিতে পারে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

আফগানিস্তানে তালেবানের অগ্রযাত্রায় শঙ্কিত জাতিসংঘ

আপডেট সময় : ১১:৩২:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুন ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের চলমান প্রক্রিয়ার মধ্যে দেশটিতে হামলা জোরদার করেছে তালেবান। তারা ইতিমধ্যে আফগানিস্তানের কয়েক ডজন জেলা দখল করেছে। এ ঘটনায় শঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
আফগানিস্তান–বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত দেবোরা লিয়নস নিরাপত্তা পরিষদকে জানিয়েছেন, গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত দেশটির ৩৭০টির মধ্যে ৫০টির বেশি জেলা দখল করে নিয়েছে তালেবান। এ অবস্থায় আফগানিস্তানে মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছেন তিনি। জাতিসংঘের বিশেষ দূত বলেছেন, আফগানিস্তানে সংঘাত বৃদ্ধির অর্থ হলো, কাছের বা দূরবর্তী সময়ে অন্য অনেক দেশের নিরাপত্তাহীনতা বৃদ্ধি
আফগানিস্তান থেকে সব সেনা প্রত্যাহার করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো। চলতি বছরের ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব সেনা প্রত্যাহারের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের কার্যক্রম চলছে।
বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের সুযোগে আফগানিস্তানে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে সামরিক তৎপরতা জোরদার করেছে তালেবান। তালেবানের এই তৎপরতায় দেশটির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ও দেশটির শান্তিপ্রক্রিয়ার প্রধান আবদুল্লাহ আগামী শুক্রবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে জাতিসংঘের বিশেষ দূত বলেছেন, সামরিক তৎপরতা জোরদার করে তালেবান আফগানিস্তানের বেশ কিছু জেলা দখল করেছে। তারা যেসব জেলা দখল করেছে, সেগুলো দেশটির বিভিন্ন প্রাদেশিক রাজধানীর চারপাশে অবস্থিত। তালেবানের তৎপরতায় মনে হচ্ছে, আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হলেই তারা প্রাদেশিক রাজধানীগুলো দখল করার জন্য অবস্থান নিচ্ছে।
তালেবানের অগ্রযাত্রার মুখে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের নির্ধারিত সময়সীমায় কোনো পরিবর্তন আনা হচ্ছে না বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর। তবে সেনা প্রত্যাহারের গতি শ্লথ করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে পেন্টাগন।
আফগান প্রেসিডেন্ট গনির দাবি, দেশটির সরকারি বাহিনী তালেবানসহ অন্য জঙ্গিদের মোকাবিলা করতে সক্ষম। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, তারা তালেবানের সঙ্গে পেরে উঠছে না।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলা হয়। সেই হামলার জেরে আফগানিস্তানে সামরিক অভিযানে যায় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ইতিহাসের দীর্ঘতম এ যুদ্ধের ২০ বছর পূর্তির আগেই আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে গত এপ্রিলে ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এই ঘোষণা অনুযায়ী, আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের কার্যক্রম অনেকটা এগিয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, আফগানিস্তানে তাদের সামরিক উপস্থিতি থাকবে না। কিন্তু কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মানবিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
অবশ্য সংশ্লিষ্ট অনেক বিশ্লেষক আগে থেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করে বলে আসছেন, আফগানিস্তান থেকে সব বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের পর তালেবান জঙ্গিরা দেশটির ক্ষমতা দখল করে নিতে পারে।