ঢাকা ০১:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

ঘুমের অভাবে সংসারে বিবাদ

  • আপডেট সময় : ১২:১৭:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ৭২ বার পড়া হয়েছে

লাইফস্টাইল ডেস্ক : গবেষকরা আগেই জানেন যে, যাদের গুরুতর ঘুমের সমস্যা আছে তাদের শরীরে প্রদাহ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি। আর এই প্রদাহ থেকেই শুরু হয় ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, হৃদরোগ ইত্যাদি বিভিন্ন দূরারোগ্য ব্যধি। তারা জানতে চাইছিলেন মাত্র এক কিংবা দুই রাত ভালোভাবে না ঘুমালে শরীরে প্রদাহ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা কতটুকু বাড়ে? মোট ৪৩টি বিবাহিত দম্পতি এই গবেষণায় অংশ নেন। প্রতিদিন সকালে তাদের রক্ত পরীক্ষা করে রিপোর্ট জমা নেন গবেষকরা। গবেষণার প্রধান লেখক, ‘ওহিও স্টেট’স ইন্সটিটিউট ফর বিহেইভিওরাল মেডিসিন রিসার্চ’য়ের ‘পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চার’ স্টেফানি উইলসন বলেন, “আমাদের ধারণা ছিল মানুষ যদি রাতে কম ঘুমায় তবে ভোর বেলাতেই তার শরীরের প্রদাহের মাত্রা বেশি থাকবে। তবে আমাদের প্রাথমিক সেই ধারণা ছিল ভুল। বরং আগের রাতে যাদের ভালো ঘুম হয়নি তারাই যখন পরদিন কোনো ঝগড়ার বিষয় নিয়ে আবার আলোচনা করেছেন, মোটকথা আবার ঝগড়া করেছেন, তখন তাদের শরীরে প্রদাহের মাত্রা বেড়ে যেতে দেখা গেছে।”
রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তিনি আরও বলেন, “প্রতি ঘণ্টা কম ঘুমানোর কারণে অংশগ্রহণকারীদের দুটি ‘ইনফ্লামাটরি মার্কার’য়ের মাত্রা বাড়তে দেখা গেছে ছয় শতাংশ।” পর্যাপ্ত ঘুমের গুরুত্ব সম্পর্কে আরও বেশি তথ্য জানান গেছে এই গবেষণা থেকে। এছাড়াও ২০১৬ সালের এক গবেষণা দাবি করেছিল যে, দৈনিক সাত ঘণ্টার কম ঘুমালে তা সরাসরি শরীরের প্রদাহের মাত্রার ওপর প্রভাব ফেলে। স্টেফানি বলেন, “কিন্তু এখন আমরা জানি এই দুইয়ের মধ্যে সম্পর্কটা আসলে সহজ কোনো বিষয় নয়। শুধু ঘুম নয়, ঘুমের ঘাটতি আর মানসিক চাপ যখন একসঙ্গে দেখা দেয় তখনই সৃষ্টি হয় প্রবল সমস্যা।” গবেষণায় আরও জানা যায়, “ঘুম কম হলে ঝগড়ায় তীব্রতা থাকে বেশি, রাগের মাত্রা হয় বেশি। ঝগড়ার আগের দুরাত যদি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কারও একজনের ঘুম কম হয়, তবে সেই ঝগড়া হাতাহাতি পর্যায়ে গড়াতে পারে। আর তা শরীরের প্রদাহের মাত্রা আরও বাড়ায়।” অনিদ্রা আর দাম্পত্য কলহ আমাদের জীবনের নিত্যদিনের ঘটনা। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অর্ধেক সংখ্যক সাত ঘণ্টার কম ঘুমিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্টর ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’য়ের তথ্যানুসারে, “প্রায় ৩৫ শতাংশ মানুষই দৈনিক ঘুমের চাহিদা পূরণ করতে পারেন না।” গবেষণার জ্যেষ্ঠ লেখক জ্যানিস কিকোল্ট গ্লেইজার, ‘ইন্সটিটিউট অফ বিহেইভিয়োরাল মেডিসিন রিসার্চ’য়ের পরিচালক বলেন, “দাম্পত্য জীবনের ঘুমের সমস্যা একজনের থাকলে অপরজনও ভুক্তভোগী হন। কারণ একজনকে রেখে আরেকজন ঘুমাতে যায় না। এতে একসময় দুজনই সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন। আর তার প্রভাবে মেজাজ খিটখিটে হয় এবং ঝগড়ার মাত্রা বাড়ে।” স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একজন যদি পূর্ণাঙ্গ বিশ্রাম পায়, তবে কলহ ওই পক্ষই মীমাংসা করে দিতে পারে কিংবা সম্পর্ক নষ্ট না করার জন্য কলহের ইতি টানতে চায়। ফলে কলহ বড় আকার ধারন করতে পারে না।-

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ঘুমের অভাবে সংসারে বিবাদ

আপডেট সময় : ১২:১৭:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

লাইফস্টাইল ডেস্ক : গবেষকরা আগেই জানেন যে, যাদের গুরুতর ঘুমের সমস্যা আছে তাদের শরীরে প্রদাহ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি। আর এই প্রদাহ থেকেই শুরু হয় ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, হৃদরোগ ইত্যাদি বিভিন্ন দূরারোগ্য ব্যধি। তারা জানতে চাইছিলেন মাত্র এক কিংবা দুই রাত ভালোভাবে না ঘুমালে শরীরে প্রদাহ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা কতটুকু বাড়ে? মোট ৪৩টি বিবাহিত দম্পতি এই গবেষণায় অংশ নেন। প্রতিদিন সকালে তাদের রক্ত পরীক্ষা করে রিপোর্ট জমা নেন গবেষকরা। গবেষণার প্রধান লেখক, ‘ওহিও স্টেট’স ইন্সটিটিউট ফর বিহেইভিওরাল মেডিসিন রিসার্চ’য়ের ‘পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চার’ স্টেফানি উইলসন বলেন, “আমাদের ধারণা ছিল মানুষ যদি রাতে কম ঘুমায় তবে ভোর বেলাতেই তার শরীরের প্রদাহের মাত্রা বেশি থাকবে। তবে আমাদের প্রাথমিক সেই ধারণা ছিল ভুল। বরং আগের রাতে যাদের ভালো ঘুম হয়নি তারাই যখন পরদিন কোনো ঝগড়ার বিষয় নিয়ে আবার আলোচনা করেছেন, মোটকথা আবার ঝগড়া করেছেন, তখন তাদের শরীরে প্রদাহের মাত্রা বেড়ে যেতে দেখা গেছে।”
রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তিনি আরও বলেন, “প্রতি ঘণ্টা কম ঘুমানোর কারণে অংশগ্রহণকারীদের দুটি ‘ইনফ্লামাটরি মার্কার’য়ের মাত্রা বাড়তে দেখা গেছে ছয় শতাংশ।” পর্যাপ্ত ঘুমের গুরুত্ব সম্পর্কে আরও বেশি তথ্য জানান গেছে এই গবেষণা থেকে। এছাড়াও ২০১৬ সালের এক গবেষণা দাবি করেছিল যে, দৈনিক সাত ঘণ্টার কম ঘুমালে তা সরাসরি শরীরের প্রদাহের মাত্রার ওপর প্রভাব ফেলে। স্টেফানি বলেন, “কিন্তু এখন আমরা জানি এই দুইয়ের মধ্যে সম্পর্কটা আসলে সহজ কোনো বিষয় নয়। শুধু ঘুম নয়, ঘুমের ঘাটতি আর মানসিক চাপ যখন একসঙ্গে দেখা দেয় তখনই সৃষ্টি হয় প্রবল সমস্যা।” গবেষণায় আরও জানা যায়, “ঘুম কম হলে ঝগড়ায় তীব্রতা থাকে বেশি, রাগের মাত্রা হয় বেশি। ঝগড়ার আগের দুরাত যদি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কারও একজনের ঘুম কম হয়, তবে সেই ঝগড়া হাতাহাতি পর্যায়ে গড়াতে পারে। আর তা শরীরের প্রদাহের মাত্রা আরও বাড়ায়।” অনিদ্রা আর দাম্পত্য কলহ আমাদের জীবনের নিত্যদিনের ঘটনা। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অর্ধেক সংখ্যক সাত ঘণ্টার কম ঘুমিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্টর ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’য়ের তথ্যানুসারে, “প্রায় ৩৫ শতাংশ মানুষই দৈনিক ঘুমের চাহিদা পূরণ করতে পারেন না।” গবেষণার জ্যেষ্ঠ লেখক জ্যানিস কিকোল্ট গ্লেইজার, ‘ইন্সটিটিউট অফ বিহেইভিয়োরাল মেডিসিন রিসার্চ’য়ের পরিচালক বলেন, “দাম্পত্য জীবনের ঘুমের সমস্যা একজনের থাকলে অপরজনও ভুক্তভোগী হন। কারণ একজনকে রেখে আরেকজন ঘুমাতে যায় না। এতে একসময় দুজনই সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন। আর তার প্রভাবে মেজাজ খিটখিটে হয় এবং ঝগড়ার মাত্রা বাড়ে।” স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একজন যদি পূর্ণাঙ্গ বিশ্রাম পায়, তবে কলহ ওই পক্ষই মীমাংসা করে দিতে পারে কিংবা সম্পর্ক নষ্ট না করার জন্য কলহের ইতি টানতে চায়। ফলে কলহ বড় আকার ধারন করতে পারে না।-