নিজস্ব প্রতিবেদক : চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে বাসায় মদ ও মাদক রাখার অভিযোগে বনানী থানার মামলায় বাদীর জেরা শেষ করলেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
গতকাল রোববার ঢাকার ১০ নম্বর বিশেষ জজ মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালতে মামলার বাদী র্যাব-১ এর কর্মকর্তা মজিবর রহমানের জেরা শেষ হয়। পরবর্তী সাক্ষীর জবানবন্দি শোনার জন্য আগামী ১৩ অক্টোবর দিন রেখেছেন বিচারক। এদিকে আসামি পরীমনি যেন মামলার শুনানিতে উপস্থিত থাকেন, আদালতের কাছে সেই আদেশ চেয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মাহাবুবুল হাসান। তিনি আদালতকে বলেন, “অন্তঃসত্ত্বা থাকায় পরীমণির পক্ষে তার আইনজীবী হাজিরা দিতেন।এখন তিনি মা হয়েছেন। তাই আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ধার্য তারিখে তাকে সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার আবেদন জানাচ্ছি।”
সেই আবেদনে বিরোধিতা করে পরীমনির আইনজীবী মজিবুর রহমান ও নীলাঞ্জনা রিফাত (সুরভী) আদালতে বলেন, “মাস খানেক হলো পরীমণি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তিনি এখনও পুরোপুরি সুস্থ না। তাছাড়া সরকারিভাবেও মাতৃত্বকালীন ছুটিও ৬ মাস। তিনি সুস্থ হলে আদালতে হাজিরা দেবেন।” দুই পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আবেদনটি নথিভুক্ত করেন। রোববারও পরীমনির পক্ষে তার আইনজীবী হাজিরা দেন। মামলার অপর দুই আসামি পরিমনির ব্যবস্থাপক আশরাফুল ইসলাম দিপু ও খালু কবীর হাওলাদার আদালতে হাজির ছিলেন।
২০২১ সালের ৪ আগস্ট রাতে ঢাকার বনানীতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তারের পর পরদিন তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদক আইনে এ মামলা করা হয়। র্যাবের জব্দ তালিকায় পরীমনির বাসা থেকে ‘মদ এবং আইস ও এলএসডির মতো মাদকদ্রব্য’ উদ্ধারের কথা বলা হয়। পরীমনিকে গ্রেপ্তারের পর র্যাব মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন বলেছিলেন, চিত্রনায়িকা পরীমনির ফ্ল্যাটে ‘মিনি বার’ ছিল। তিনি নিয়মিত মদ পান করতেন এবং ‘ঘরোয়া পার্টি’ আয়োজন করতেন। তার কাছে মদ ব্যবহারের একটি লাইসেন্স পাওয়া গেলেও তার মেয়াদ শেষ হয়েছে ‘অনেক আগে’। পরীমনিকে গ্রেপ্তারের পর তিন দফা রিমান্ডে নেওয়া নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যে হাই কোর্টও বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলে। পরে ওই বছরের ৩১ অগাস্ট তার জামিনের আদেশ হয় বিচারিক আদালত থেকে। পরদিন তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ছাড়া পান। চিত্রনায়িকা পরীমনির সঙ্গে এক ডিবি কর্মকর্তার ‘১৮ ঘণ্টা সময় কাটানোর’ খবর গণমাধ্যমে আসার পর এ মামলার তদন্তভার সিআইডির কাছে গিয়েছিল। তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৪ অক্টোবর পরীমনিসহ তিনজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। এরপর ১২ অক্টোবর মামলাটি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত থেকে মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়। তারপর ১৫ নভেম্বর তিনজনের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করে আদালত। গত ৫ জানুয়ারি পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক বিচারক নজরুল ইসলাম। নড়াইলের মেয়ে শামসুন্নাহার স্মৃতির ২০১৫ সালে ঢাকার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে পরীমনি নামে। এরপর দুই ডজন চলচ্চিত্রে নায়িকার চরিত্র রূপায়ন করেছেন তিনি। গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক মাস আগে ঢাকা বোট ক্লাবে যৌন নিপীড়িত হওয়ার অভিযোগ তুলে শোরগোল তুলেছিলেন পরীমনি। তার করা মামলায় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।
পরীমনির মাদক মামলায় বাদীর জেরা শেষ
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ