ঢাকা ১২:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫

রাশিয়া থেকে ৫ লাখ টন গম, ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে চাল কিনছে সরকার

  • আপডেট সময় : ১২:৩৩:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ অগাস্ট ২০২২
  • ৯৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাশিয়া থেকে পাঁচ লাখ টন গম আমদানি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দেশের বাজারে সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রতি টন ৪৩০ ডলার দরে গম আমদানি করা হবে। পাশাপাশি ভারত থেকে ১ লাখ টন ও ভিয়েতনাম থেকে ২ লাখ ৩০ হাজার টন চাল কেনা হবে।
গতকাল বুধবার ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল বারিক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কেনার আলোচনার মধ্যেই দেশটি থেকে বিপুল পরিমাণ গম আমদানির সিদ্ধান্ত নিল সরকার। ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও গম আমদানিতে সংকটে পড়ে। এরই মধ্যে গত মে মাসে বাংলাদেশে গমের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী দেশ ভারত রফতানি বন্ধ করে দিলে সংকট আরো ঘনীভূত হয়। চলতি বছরের শুরুতে গত তিন বছরের মধ্যে গমের সর্বনি¤œ মজুদ ছিল। ভারত রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে মজুদ বাড়ানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু বিশ্ববাজারে অস্থিরতার কারণে কিছু দরপত্র বাতিল করতে হয়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ক্রেমলিনের অভিযান শুরুর পর রাশিয়া থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর ব্যাংকিং লেনদেনসহ বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ফলে পণ্য আমদানি বাধাগ্রস্ত হয়। এর পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞার কারণে লেনদেনের ধরন নিয়েও অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কৃষ্ণ সাগরে জাহাজ চলাচল এখনো নিরাপদ ছিল না। তবে সম্প্রতি রাশিয়ার কৃষি ও খাদ্যপণ্য আমদানি থেকে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।
ভারত-ভিয়েতনাম থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার টন চাল কিনবে : ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে জিটুজি পর্যায়ে ৩ লাখ ৩০ হাজার টন সেদ্ধ ও আতপ চাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। ভারতের প্রতিটন চালের দাম পড়বে ৪৪৩ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার। ভিয়েতনামের প্রতিটন সেদ্ধ চালের দাম পড়বে ৫২১ মার্কিন ডলার এবং আতপ চাল ৪৯৪ মার্কিন ডলার। বুধবার দুপুরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত দুইটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল বারিক বলেন, আজকের ক্রয় কমিটিতে টেবিলে উত্থাপিত প্রস্তাবসহ মোট ১৫টি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। সবগুলো প্রাস্তাবই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, টেবিলে উত্থাপিত প্রস্তাবের মধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় ভারত থেকে জিটুজি পর্যায়ে এক লাখ টন ননবাসমতি সেদ্ধ চাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৪১৭ কোটি ৫ লাখ টাকা। ৭০ হাজার টন লটের চাল আসবে সমুদ্রবন্দরের মাধ্যমে। প্রতি কেজি চালের দাম পড়বে ৪২ টাকা ১৩ পয়সা। বাকি ৩০ হাজার টন লটের চাল স্থলবন্দরের মাধ্যেমে আসবে। এতে প্রতি কেজি চালের দাম পড়বে ৪০ টাকা ৭০ পয়সা। আর প্রতিটনের দাম পড়বে ৪৪৩ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার। তিনি জানান, ভিয়েতনাম থেকে জিটুজি পর্যায়ে দুই লাখ টন থাই ননবাসমতি চাল এবং ভারত থেকে ৩০ হাজার টন আতপ চাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দুইটি মিলিয়ে একত্রে দুই লাখ ৩০ হাজার টন চাল আমদানি করা হবে। ভিয়েতনামের ননবাসসতি সেদ্ধ চাল প্রতিকেজির ক্রয় মূল্য ৪৯ টাকা ৫০ পয়সা এবং আতপ চাল ৪৬ টাকা ৯৩ পয়সা। প্রতিটন চালে খরচ পড়বে ৫২১ মার্কিন ডলার। এছাড়াও ভারতের ৩০ হাজার টন আতপ চাল প্রতিটন ৪৯৪ মার্কিন ডলারে কেনা হবে। এতে খরচ হবে এক কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। সর্বমোট ২ লাখ ৩০ হাজার টন চাল আমদানিতে খরচ হবে ১১ কোটি ৯০ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা এক হাজার ১৩০ কোটি ৬৯ টাকা।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রাশিয়া থেকে ৫ লাখ টন গম, ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে চাল কিনছে সরকার

আপডেট সময় : ১২:৩৩:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাশিয়া থেকে পাঁচ লাখ টন গম আমদানি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দেশের বাজারে সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রতি টন ৪৩০ ডলার দরে গম আমদানি করা হবে। পাশাপাশি ভারত থেকে ১ লাখ টন ও ভিয়েতনাম থেকে ২ লাখ ৩০ হাজার টন চাল কেনা হবে।
গতকাল বুধবার ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল বারিক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কেনার আলোচনার মধ্যেই দেশটি থেকে বিপুল পরিমাণ গম আমদানির সিদ্ধান্ত নিল সরকার। ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও গম আমদানিতে সংকটে পড়ে। এরই মধ্যে গত মে মাসে বাংলাদেশে গমের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী দেশ ভারত রফতানি বন্ধ করে দিলে সংকট আরো ঘনীভূত হয়। চলতি বছরের শুরুতে গত তিন বছরের মধ্যে গমের সর্বনি¤œ মজুদ ছিল। ভারত রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে মজুদ বাড়ানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু বিশ্ববাজারে অস্থিরতার কারণে কিছু দরপত্র বাতিল করতে হয়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ক্রেমলিনের অভিযান শুরুর পর রাশিয়া থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর ব্যাংকিং লেনদেনসহ বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ফলে পণ্য আমদানি বাধাগ্রস্ত হয়। এর পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞার কারণে লেনদেনের ধরন নিয়েও অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কৃষ্ণ সাগরে জাহাজ চলাচল এখনো নিরাপদ ছিল না। তবে সম্প্রতি রাশিয়ার কৃষি ও খাদ্যপণ্য আমদানি থেকে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।
ভারত-ভিয়েতনাম থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার টন চাল কিনবে : ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে জিটুজি পর্যায়ে ৩ লাখ ৩০ হাজার টন সেদ্ধ ও আতপ চাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। ভারতের প্রতিটন চালের দাম পড়বে ৪৪৩ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার। ভিয়েতনামের প্রতিটন সেদ্ধ চালের দাম পড়বে ৫২১ মার্কিন ডলার এবং আতপ চাল ৪৯৪ মার্কিন ডলার। বুধবার দুপুরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত দুইটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল বারিক বলেন, আজকের ক্রয় কমিটিতে টেবিলে উত্থাপিত প্রস্তাবসহ মোট ১৫টি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। সবগুলো প্রাস্তাবই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, টেবিলে উত্থাপিত প্রস্তাবের মধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় ভারত থেকে জিটুজি পর্যায়ে এক লাখ টন ননবাসমতি সেদ্ধ চাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৪১৭ কোটি ৫ লাখ টাকা। ৭০ হাজার টন লটের চাল আসবে সমুদ্রবন্দরের মাধ্যমে। প্রতি কেজি চালের দাম পড়বে ৪২ টাকা ১৩ পয়সা। বাকি ৩০ হাজার টন লটের চাল স্থলবন্দরের মাধ্যেমে আসবে। এতে প্রতি কেজি চালের দাম পড়বে ৪০ টাকা ৭০ পয়সা। আর প্রতিটনের দাম পড়বে ৪৪৩ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার। তিনি জানান, ভিয়েতনাম থেকে জিটুজি পর্যায়ে দুই লাখ টন থাই ননবাসমতি চাল এবং ভারত থেকে ৩০ হাজার টন আতপ চাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দুইটি মিলিয়ে একত্রে দুই লাখ ৩০ হাজার টন চাল আমদানি করা হবে। ভিয়েতনামের ননবাসসতি সেদ্ধ চাল প্রতিকেজির ক্রয় মূল্য ৪৯ টাকা ৫০ পয়সা এবং আতপ চাল ৪৬ টাকা ৯৩ পয়সা। প্রতিটন চালে খরচ পড়বে ৫২১ মার্কিন ডলার। এছাড়াও ভারতের ৩০ হাজার টন আতপ চাল প্রতিটন ৪৯৪ মার্কিন ডলারে কেনা হবে। এতে খরচ হবে এক কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। সর্বমোট ২ লাখ ৩০ হাজার টন চাল আমদানিতে খরচ হবে ১১ কোটি ৯০ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা এক হাজার ১৩০ কোটি ৬৯ টাকা।