ঢাকা ০১:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশনের দাবি মেনে নিয়েছে কেয়ার মেডিকেল কলেজ

  • আপডেট সময় : ১০:৫৬:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ অগাস্ট ২০২২
  • ৯১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশনের দাবি মেনে নিয়েছে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কেয়ার মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ করে রাখার পর রবিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে মাইগ্রেশন লেটারে স্বাক্ষর করেন কলেজের চেয়ারম্যান ও প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. পারভিন ফাতেমা। পরে চেয়ারম্যানের সই নিয়ে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরে যান। আন্দোলনরত শিক্ষার্থী রায়হান হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘কলেজ কর্তৃপক্ষ যে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে অক্ষম এবং মাইগ্রেশন দিতে চায়, সেটা চেয়ারম্যান স্মারকলিপিতে লিখে দিয়েছেন। আমরা স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরে সেটা জমা দিয়েছি।’ ‘অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন’-বলেন রায়হান। অনুমোদন ছাড়াই রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কেয়ার মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি করে কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) অনুমোদন না থাকায় ইর্ন্টানশিপ বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের। ফলে সনদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। এরপরই অন্যান্য মেডিকেল কলেজে তাদের মাইগ্রেশনের দাবিতে গত ৬ আগস্ট থেকে আন্দোলন করে আসছেন তারা। এর মধ্যেই অভিযোগ নিয়ে গত ২১ আগস্ট শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে স্মারকলিপি দেন। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে সেসময় শিক্ষার্থীদের বলা হয় কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে মাইগ্রেশন লেটার নিয়ে আসতে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক এ কে এম আমিরুল মোরশেদ সেসময় বলেছিলেন, ‘কেয়ার মেডিকেল কর্তৃপক্ষ কলেজ চালাতে পারছে না জানিয়ে মাইগ্রেশন দিতে চাইলে অধিদপ্তর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। কলেজ কর্তৃপক্ষ যদি মাইগ্রেশন দিতে চায়, তাহলেই আমরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারি। আমরা তো তাদের অনুমোদন বাতিল করে দিয়েছিলাম। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টে রিট আবেদন করে। হাইকোর্ট ভর্তি বন্ধের আদেশ স্থগিত করে দেয়। এর মাধ্যমেই তারা ভর্তি করিয়েছে শিক্ষার্থীদের। এখন শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে দাবির কথা জানিয়েছে। তারা স্মারকলিপি দিয়েছে। কিন্তু সেখানে কর্তৃপক্ষ যে মেডিকেল কলেজটি চালাতে ব্যর্থ হয়েছে, সে বিষয়টি থাকতে হবে। তাছাড়া আমরা কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারব না।’ বেসরকারি কেয়ার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি ২০১৩ সালে রাজধানীর ইকবাল রোডে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৪ সাল থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু হয় এই কলেজে। কিন্তু বেসরকারি মেডিকেল কলেজ পরিচালনা নীতিমালা পরিপূর্ণ করতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে ভর্তি নিষেধাজ্ঞা দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বাতিল হয় কলেজের সনদও। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কলেজটিতে শিক্ষার কোনো ধরনের পরিবেশ নেই। শ্রেণিকক্ষ, ল্যাবসহ নানা প্রয়োজনীয় জিনিসের সংকট প্রকট। শিক্ষাদান ও প্রশিক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষকও নেই। কলেজের নানা অসঙ্গতি তুলে ধরে শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগে জানা যায়, ২০১৬-১৭ সেশনের ভর্তির পরে ২০১৭-১৮ সেশন থেকে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পরে হাইকোর্টের রিটের ওপর ভিত্তি করে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ২০১৭-১৮, ২০১৯-২০, ২০২০-২১ সেশন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হয়।
বিগত বছরগুলোতে রিটের ওপর ভিত্তি করে ভর্তি নেওয়া হলেও ২০২১-২২ সেশনে ভর্তি কার্যক্রম পুরোপুরিভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত কথা বললে তারা বরাবরের মতোই রেজিস্ট্রেশন পাওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দেয়। শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীর আগস্ট ২০২১ এ চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। পরবর্তীতে নভেম্বর ২০২১ থেকে তাদের ইন্টার্নশিপ শুরু করার কথা থাকলেও বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন না থাকায় বিগত নয় মাসেও তারা ইন্টার্নশিপ শুরু করতে পারেননি তারা। জানা গেছে, করোনাসহ বিশেষ মানবিক বিবেচনায় ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ২০২০ সালে ইন্টার্ন করার সুযোগ দিয়েছিল বিএমডিসি। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানের ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ইন্টার্নশিপের সুযোগ পায়নি। এজন্য গত এপ্রিল মাসে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছিলেন শিক্ষার্থীরা।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশনের দাবি মেনে নিয়েছে কেয়ার মেডিকেল কলেজ

আপডেট সময় : ১০:৫৬:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশনের দাবি মেনে নিয়েছে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কেয়ার মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ করে রাখার পর রবিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে মাইগ্রেশন লেটারে স্বাক্ষর করেন কলেজের চেয়ারম্যান ও প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. পারভিন ফাতেমা। পরে চেয়ারম্যানের সই নিয়ে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরে যান। আন্দোলনরত শিক্ষার্থী রায়হান হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘কলেজ কর্তৃপক্ষ যে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে অক্ষম এবং মাইগ্রেশন দিতে চায়, সেটা চেয়ারম্যান স্মারকলিপিতে লিখে দিয়েছেন। আমরা স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরে সেটা জমা দিয়েছি।’ ‘অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন’-বলেন রায়হান। অনুমোদন ছাড়াই রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কেয়ার মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি করে কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) অনুমোদন না থাকায় ইর্ন্টানশিপ বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের। ফলে সনদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। এরপরই অন্যান্য মেডিকেল কলেজে তাদের মাইগ্রেশনের দাবিতে গত ৬ আগস্ট থেকে আন্দোলন করে আসছেন তারা। এর মধ্যেই অভিযোগ নিয়ে গত ২১ আগস্ট শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে স্মারকলিপি দেন। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে সেসময় শিক্ষার্থীদের বলা হয় কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে মাইগ্রেশন লেটার নিয়ে আসতে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক এ কে এম আমিরুল মোরশেদ সেসময় বলেছিলেন, ‘কেয়ার মেডিকেল কর্তৃপক্ষ কলেজ চালাতে পারছে না জানিয়ে মাইগ্রেশন দিতে চাইলে অধিদপ্তর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। কলেজ কর্তৃপক্ষ যদি মাইগ্রেশন দিতে চায়, তাহলেই আমরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারি। আমরা তো তাদের অনুমোদন বাতিল করে দিয়েছিলাম। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টে রিট আবেদন করে। হাইকোর্ট ভর্তি বন্ধের আদেশ স্থগিত করে দেয়। এর মাধ্যমেই তারা ভর্তি করিয়েছে শিক্ষার্থীদের। এখন শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে দাবির কথা জানিয়েছে। তারা স্মারকলিপি দিয়েছে। কিন্তু সেখানে কর্তৃপক্ষ যে মেডিকেল কলেজটি চালাতে ব্যর্থ হয়েছে, সে বিষয়টি থাকতে হবে। তাছাড়া আমরা কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারব না।’ বেসরকারি কেয়ার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি ২০১৩ সালে রাজধানীর ইকবাল রোডে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৪ সাল থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু হয় এই কলেজে। কিন্তু বেসরকারি মেডিকেল কলেজ পরিচালনা নীতিমালা পরিপূর্ণ করতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে ভর্তি নিষেধাজ্ঞা দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বাতিল হয় কলেজের সনদও। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কলেজটিতে শিক্ষার কোনো ধরনের পরিবেশ নেই। শ্রেণিকক্ষ, ল্যাবসহ নানা প্রয়োজনীয় জিনিসের সংকট প্রকট। শিক্ষাদান ও প্রশিক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষকও নেই। কলেজের নানা অসঙ্গতি তুলে ধরে শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগে জানা যায়, ২০১৬-১৭ সেশনের ভর্তির পরে ২০১৭-১৮ সেশন থেকে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পরে হাইকোর্টের রিটের ওপর ভিত্তি করে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ২০১৭-১৮, ২০১৯-২০, ২০২০-২১ সেশন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হয়।
বিগত বছরগুলোতে রিটের ওপর ভিত্তি করে ভর্তি নেওয়া হলেও ২০২১-২২ সেশনে ভর্তি কার্যক্রম পুরোপুরিভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত কথা বললে তারা বরাবরের মতোই রেজিস্ট্রেশন পাওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দেয়। শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীর আগস্ট ২০২১ এ চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। পরবর্তীতে নভেম্বর ২০২১ থেকে তাদের ইন্টার্নশিপ শুরু করার কথা থাকলেও বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন না থাকায় বিগত নয় মাসেও তারা ইন্টার্নশিপ শুরু করতে পারেননি তারা। জানা গেছে, করোনাসহ বিশেষ মানবিক বিবেচনায় ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ২০২০ সালে ইন্টার্ন করার সুযোগ দিয়েছিল বিএমডিসি। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানের ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ইন্টার্নশিপের সুযোগ পায়নি। এজন্য গত এপ্রিল মাসে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছিলেন শিক্ষার্থীরা।