ঢাকা ১২:৪৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫

মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীরের বরখাস্তের আদেশ কেন অবৈধ নয়: হাই কোর্ট

  • আপডেট সময় : ১২:৫৭:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ অগাস্ট ২০২২
  • ১০২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট। জাহাঙ্গীরের করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এই রুল জারি করে। স্থানীয় সরকার সচিব, উপ সচিব, আইন সচিব ও গাজীপুর জেলাপ্রশাসককে আগামী দুই সপ্তাহের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মশিউর রহমান সবুজ। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলমকে সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
শুনানিতে জাহাঙ্গীরের আইনজিবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “জাহাঙ্গীর আলমকে যেসব অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে সেই একই অভিযোগ ২০২০ সালেও একবার আনা হয়েছিল। এরপর একই বছরের ১২ অগাস্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে অভিযোগকারীদের ডেকে শুনানি করা হয়। শুনানি শেষে ওই সব অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে রিপোর্ট দিয়েছিলেন।”
জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত ‘চলছে’ জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “তাকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হলে তিনি গত ২০ জুলাই লিখিত জবাব দিয়েছেন। সে বিষয়টি তদন্তে দায়িত্বশীল ব্যক্তিগণ যাচাই-বাছাই করে দেখছেন। এই তদন্ত চলমান আছে।” বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীরকে গত বছরের ১৯ নভেম্বর দল থেকে বহিষ্কার করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এর এর এক সপ্তাহের মাথায় ২৫ নভেম্বর জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ওই সময় জাহাঙ্গীরকে বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় মামলাও হয়। বরখাস্তের ওই আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ১৪ অগাস্ট হাই কোর্টে রিট করেন জাহাঙ্গীর আলম। ওই রিটের উপরে প্রথম শুনানি হয় গত ১৭ অগাস্ট। মঙ্গলবার রিটের দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষে রুল দিল আদালত।
বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে ‘বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য’ করা মামলায় জাহাঙ্গীর আগাম জামিনে আছেন বলে জানান তার আইনজীবী মশিউর রহমান সবুজ। তিনি বলেন, “তার বিরুদ্ধে যে কটি জেলায় মামলা হয়েছিল, এর মধ্যে পঞ্চগড়, রাজবাড়ী, গাজীপুর, নওগাঁ, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ জেলায় হওয়া সাত মামলা থেকে তিনি গত ৪ অগাস্ট ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন।”
২০১৮ সালে গাজীপুর সিটি করপোরশেন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দলীয় প্রতীকে মেয়র নির্বাচিত হন জাহাঙ্গীর। তাকে দল থেকে বহিষ্কার এবং মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত করার পর স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছিলেন, “জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে অনেকগুলো অভিযোগ দাখিল হয়েছে। সেগুলো সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আমলে নেওয়া হয়েছে। আইনের ধারা অনুযায়ী সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।” একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি বিষয়গুলো তদন্ত করছে বলেও জানিয়েছিলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীরের বরখাস্তের আদেশ কেন অবৈধ নয়: হাই কোর্ট

আপডেট সময় : ১২:৫৭:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট। জাহাঙ্গীরের করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এই রুল জারি করে। স্থানীয় সরকার সচিব, উপ সচিব, আইন সচিব ও গাজীপুর জেলাপ্রশাসককে আগামী দুই সপ্তাহের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মশিউর রহমান সবুজ। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলমকে সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
শুনানিতে জাহাঙ্গীরের আইনজিবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “জাহাঙ্গীর আলমকে যেসব অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে সেই একই অভিযোগ ২০২০ সালেও একবার আনা হয়েছিল। এরপর একই বছরের ১২ অগাস্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে অভিযোগকারীদের ডেকে শুনানি করা হয়। শুনানি শেষে ওই সব অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে রিপোর্ট দিয়েছিলেন।”
জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত ‘চলছে’ জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “তাকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হলে তিনি গত ২০ জুলাই লিখিত জবাব দিয়েছেন। সে বিষয়টি তদন্তে দায়িত্বশীল ব্যক্তিগণ যাচাই-বাছাই করে দেখছেন। এই তদন্ত চলমান আছে।” বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীরকে গত বছরের ১৯ নভেম্বর দল থেকে বহিষ্কার করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এর এর এক সপ্তাহের মাথায় ২৫ নভেম্বর জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ওই সময় জাহাঙ্গীরকে বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় মামলাও হয়। বরখাস্তের ওই আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ১৪ অগাস্ট হাই কোর্টে রিট করেন জাহাঙ্গীর আলম। ওই রিটের উপরে প্রথম শুনানি হয় গত ১৭ অগাস্ট। মঙ্গলবার রিটের দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষে রুল দিল আদালত।
বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে ‘বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য’ করা মামলায় জাহাঙ্গীর আগাম জামিনে আছেন বলে জানান তার আইনজীবী মশিউর রহমান সবুজ। তিনি বলেন, “তার বিরুদ্ধে যে কটি জেলায় মামলা হয়েছিল, এর মধ্যে পঞ্চগড়, রাজবাড়ী, গাজীপুর, নওগাঁ, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ জেলায় হওয়া সাত মামলা থেকে তিনি গত ৪ অগাস্ট ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন।”
২০১৮ সালে গাজীপুর সিটি করপোরশেন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দলীয় প্রতীকে মেয়র নির্বাচিত হন জাহাঙ্গীর। তাকে দল থেকে বহিষ্কার এবং মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত করার পর স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছিলেন, “জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে অনেকগুলো অভিযোগ দাখিল হয়েছে। সেগুলো সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আমলে নেওয়া হয়েছে। আইনের ধারা অনুযায়ী সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।” একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি বিষয়গুলো তদন্ত করছে বলেও জানিয়েছিলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।