ঢাকা ০৭:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫

আইফোন ফিরিয়ে দেওয়া রিকশাচালক পেলেন ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার

  • আপডেট সময় : ০১:১৯:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ অগাস্ট ২০২২
  • ৮৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক মার্কিন নাগরিকের আইফোন ফিরিয়ে দিয়ে আলোচনায় ছিলেন রিকশাচালক আমিনুল ইসলাম। তার এই সততায় মুগ্ধ হয়ে অনেকে প্রশংসা করেন। এবার পেলেন ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার। তাকে এই পুরস্কার দেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। গতকাল রোববার দুপুরে ডিএনসিসির অডিটোরিয়ামে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। পুরস্কার পেয়ে বেশ আনন্দিত রিকশাচালক আমিনুল। পুরস্কার দেওয়ার আগে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমিনুল যে সততা দেখিয়েছেন, তা একটি দৃষ্টান্ত। আমিনুলের সততাকে সম্মান জানাতে ও এই ধরনের কাজে অন্যদের উৎসাহিত করতে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এর আগে ৫ আগস্ট রাজধানীর গুলশানে রিকশার গদির ফাঁকে বন্ধ অবস্থায় আইফোন ১৩ প্রো ম্যাক্স পান আমিনুল। পরে ৯ আগস্ট পুলিশের মাধ্যমে আইফোনটি তিনি মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেন। এ ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে বেশ আলোচনা শুরু হয়। পরে আমিনুল ইসলামকে পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেন ডিএনসিসি মেয়র। ফলে সেই পুরস্কারের টাকা রিকশাচালক আমিনুল ইসলামের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আমিনুল বলেন, মোবাইলটি (আইফোন) রিকশায় পেয়ে হাতে নিয়ে দেখি বন্ধ। মোবাইল বন্ধ থাকায় এর মালিককে ফেরত দেবো কীভাবে। খোলা থাকলে মালিক ফোন দিতে পারে। এই চিন্তা করে রিকশা রেখে মোবাইলটির চার্জার কিনতে যাই। দোকানে চার্জার কিনতে যেয়ে দেখি চার্জারের দাম ৭০০-৮০০ টাকা। দিনে আমার ইনকাম ৫০০-৬০০ টাকা। এই টাকা দিয়ে চার্জার কীভাবে কিনবো?
‘চার্জারের দাম বেশি চাওয়ায় পরে বুদ্ধি করে মোবাইলটি থেকে সিম খুলে আমার নিজের মোবাইলে ঢুকালাম। এর একদিন পর রাত ১১টার দিকে ওই সিমে ফোন আসে। পরদিন বাড্ডা থানায় গিয়ে যে নম্বর থেকে ফোন এসেছিল সেই নম্বরসহ পুলিশের কাছে আইফোন দিয়ে আসি।’
মোবাইলটি অনেক দামি। আপনি বিক্রি না করে ফেরত দিলেন কেন এমন প্রশ্নের জবাবে রিকশাচালক বলেন, মোবাইল পাওয়ার পর আমার একটাই উদ্দেশ্য ছিল যার মোবাইল তাকে ফেরত দিয়ে দেবো। মোবাইলটি ফেরত দিয়ে আমার নিজের কাছে অনেক ভালো লাগছে।
জানা গেছে, আমিনুলের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে। স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে নিয়ে তিনি থাকেন বাড্ডায়। তাদের সংসারে দুই সন্তান রয়েছে। অভাবের কারণে আমিনুল অষ্টম শ্রেণির পর লেখাপড়া করেননি। তবে তিনি কষ্ট করে হলেও তার দুই সন্তানকে লেখাপড়া করাতে চান। সন্তানদের নিয়ে তার অনেক স্বপ্ন, অনেক আশা। ৮ বছর ধরে গুলশান এলাকায় রিকশা চালান আমিনুল।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

আইফোন ফিরিয়ে দেওয়া রিকশাচালক পেলেন ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার

আপডেট সময় : ০১:১৯:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক মার্কিন নাগরিকের আইফোন ফিরিয়ে দিয়ে আলোচনায় ছিলেন রিকশাচালক আমিনুল ইসলাম। তার এই সততায় মুগ্ধ হয়ে অনেকে প্রশংসা করেন। এবার পেলেন ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার। তাকে এই পুরস্কার দেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। গতকাল রোববার দুপুরে ডিএনসিসির অডিটোরিয়ামে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। পুরস্কার পেয়ে বেশ আনন্দিত রিকশাচালক আমিনুল। পুরস্কার দেওয়ার আগে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমিনুল যে সততা দেখিয়েছেন, তা একটি দৃষ্টান্ত। আমিনুলের সততাকে সম্মান জানাতে ও এই ধরনের কাজে অন্যদের উৎসাহিত করতে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এর আগে ৫ আগস্ট রাজধানীর গুলশানে রিকশার গদির ফাঁকে বন্ধ অবস্থায় আইফোন ১৩ প্রো ম্যাক্স পান আমিনুল। পরে ৯ আগস্ট পুলিশের মাধ্যমে আইফোনটি তিনি মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেন। এ ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে বেশ আলোচনা শুরু হয়। পরে আমিনুল ইসলামকে পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেন ডিএনসিসি মেয়র। ফলে সেই পুরস্কারের টাকা রিকশাচালক আমিনুল ইসলামের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আমিনুল বলেন, মোবাইলটি (আইফোন) রিকশায় পেয়ে হাতে নিয়ে দেখি বন্ধ। মোবাইল বন্ধ থাকায় এর মালিককে ফেরত দেবো কীভাবে। খোলা থাকলে মালিক ফোন দিতে পারে। এই চিন্তা করে রিকশা রেখে মোবাইলটির চার্জার কিনতে যাই। দোকানে চার্জার কিনতে যেয়ে দেখি চার্জারের দাম ৭০০-৮০০ টাকা। দিনে আমার ইনকাম ৫০০-৬০০ টাকা। এই টাকা দিয়ে চার্জার কীভাবে কিনবো?
‘চার্জারের দাম বেশি চাওয়ায় পরে বুদ্ধি করে মোবাইলটি থেকে সিম খুলে আমার নিজের মোবাইলে ঢুকালাম। এর একদিন পর রাত ১১টার দিকে ওই সিমে ফোন আসে। পরদিন বাড্ডা থানায় গিয়ে যে নম্বর থেকে ফোন এসেছিল সেই নম্বরসহ পুলিশের কাছে আইফোন দিয়ে আসি।’
মোবাইলটি অনেক দামি। আপনি বিক্রি না করে ফেরত দিলেন কেন এমন প্রশ্নের জবাবে রিকশাচালক বলেন, মোবাইল পাওয়ার পর আমার একটাই উদ্দেশ্য ছিল যার মোবাইল তাকে ফেরত দিয়ে দেবো। মোবাইলটি ফেরত দিয়ে আমার নিজের কাছে অনেক ভালো লাগছে।
জানা গেছে, আমিনুলের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে। স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে নিয়ে তিনি থাকেন বাড্ডায়। তাদের সংসারে দুই সন্তান রয়েছে। অভাবের কারণে আমিনুল অষ্টম শ্রেণির পর লেখাপড়া করেননি। তবে তিনি কষ্ট করে হলেও তার দুই সন্তানকে লেখাপড়া করাতে চান। সন্তানদের নিয়ে তার অনেক স্বপ্ন, অনেক আশা। ৮ বছর ধরে গুলশান এলাকায় রিকশা চালান আমিনুল।