ক্রীড়া ডেস্ক : সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে আগে নিউ জিল্যান্ডের বড় ধাক্কা। চোটের কারণে ছিটকে গেলেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। তবে মাঠে নেমে কিউইদের দেখা গেল উজ্জীবিতই। ব্যাটিংয়ে দলকে টানলেন তরুণ ফিন অ্যালেন। বল হাতে জ্বলে উঠলেন দুই অভিজ্ঞ টিম সাউদি ও ট্রেন্ট বোল্ট। তাতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে গুঁড়িয়ে সমতায় নিউ জিল্যান্ড। বারবাডোজে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৫০ রানে হারাল নিউ জিল্যান্ড। প্রথম ম্যাচে ১৯০ রানে অলআউট হওয়া কিউইরা সেই একই উইকেটে এবার যেতে পারে ২১২ রান পর্যন্ত। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে অ্যালেন আউট হন ৯৬ রানে। আগের ম্যাচে ৫ উইকেটে জয়ী ক্যারিবিয়ানদের এবার দাঁড়াতেই দেননি কিউইরা। বোল্ট-সাউদির ছোবলে ৫৫ রানে হারায় ৭ উইকেট! পরে লোয়ার অর্ডারদের লড়াইয়ে ১৬১ রানের ভদ্রস্থ পর্যায়ে যেতে পারেন তারা। ২২ রানে ৪ উইকেট নেন সাউদি, ১৮ রানে ৩টি বোল্ট। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নিউ জিল্যান্ড শুরুতেই বিপাকে পড়ে যায়। অভিজ্ঞ মার্টিন গাপটিল (৩) ও এই ম্যাচের অধিনায়ক টম ল্যাথামকে (০) দ্রুত ফেরান জেসন হোল্ডার। ডেভন কনওয়ে স্টাম্পে টেনে আনেন আলজারি জোসেফের বল। ৩১ রানে তখন নেই ৩ উইকেট।
চতুর্থ উইকেটে অ্যালেন ও ড্যারেল মিচেল দলকে উদ্ধার করেন ৮৫ রানের জুটিতে। এমনিতে আগ্রাসী হলেও ব্যাটিংয়ের জন্য কঠিন উইকেটে লড়াই করে অ্যালেন এ দিন ফিফটি করেন ৭৩ বলে। ষষ্ঠ ওয়ানডেতে তার তৃতীয় পঞ্চাশ এটি। দুটি করে চার ও ছক্কায় ৪১ রানে বিদায় নেন মিচেল। নিউ জিল্যান্ডের পরের তিন ব্যাটসম্যান সুবিধে করতে পারেননি। দলকে এগিয়ে নেন তখন মূলত অ্যালেন। তার সেঞ্চুরি যখন মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার, হোল্ডারের নিচু হয়ে যাওয়া এক বল তার ব্যাটে লেগে আঘাত করে স্টাম্পে। ৭ চার ও ৩ ছক্কার ইনিংস থামে ১১৭ বলে ৯৬ রান করে। পরে মিচেল স্যান্টনারের অপরাজিত ২৬ ও শেষ ব্যাটসম্যান ট্রেন্ট বোল্টের ১৬ রানের সৌজন্যে ২১২ পর্যন্ত যেতে পারে নিউ জিল্যান্ড। শেষ জুটিতে এই দুজন যোগ করেন ৩১ রান। হোল্ডার দারুণ বোলিংয়ে নেন ৩ উইকেট। তবে ৪ উইকেট নিয়ে ক্যারিবিয়ানদের সফলতম বোলার দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামা অফ স্পিনার কেভিন সিনক্লেয়ার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ রান তাড়ায় নেমে পড়ে যায় বোল্ট-সাউদির তোপের মুখে। প্রথম ওভারে কাইল মেয়ার্সকে শূন্য রানে ফেরান বোল্ট। আগের ম্যাচে ৭৯ রান করে ম্যাচ সেরা হওয়া শামার ব্রুকসে এবার শূন্যতে থামান সাউদি। দুই কিউই পেসারের বোলিং কা-বে ২৭ রানে ৬ উইকে হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একটু পর কেসি কার্টিকে ১৬ রানে সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট করেন গাপটিল। ৫৫ রানে ৭ উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজ তখন বিব্রতকর অবস্থায়। তাদেরকে তখন খানিকটা স্বস্তি দেয় বৃষ্টি এসে। বিরতির পর তাদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪১ ওভারে ২১২। ইয়ানিক কারাইয়াহ ও আলজারি জোসেফরা নিজেদের ব্যাটিং প্রতিভা মেলে ধরার জন্য বেছে নেন এই দিনকে। নবম উইকেটে ৮৫ রানের জুটি গড়েন এই দুজন, ওয়ানডেতে যা ওয়েস্ট ইন্ডিজের রেকর্ড। পেছনে পড়ে যায় ২০০৬ সালে গড়া রামনরেশ সারওয়ান ও ইয়ান ব্র্যাডশর ৭৭ রানের জুটি। সেটিও ছিল নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষেই। আগের ৫২ ম্যাচে কখনও ৩০ ছুঁতে না পারা জোসেফ করে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৩১ বলে ৪৯। তাকে বোল্ড করে চতুর্থ শিকার ধরেন সাউদি। ক্যারিয়ারের মাত্র দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামা লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার কারাইয়াহ প্রথম ফিফটিতে করেন ৫২। তার বিদায়েই শেষ হয় ম্যাচ। সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ম্যাচ একই মাঠে, সোমবার।
বোল্ট-সাউদির সুইংয়ে নাকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ