ঢাকা ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন নিয়ে হাই কোর্টের প্রশ্ন

  • আপডেট সময় : ০২:২৭:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ অগাস্ট ২০২২
  • ৮৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : চার ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে গত ৫ আগস্ট জারি করা প্রজ্ঞাপন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট। এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করে।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও উপ সচিব এবং বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন- বিইআরসির চেয়ারম্যান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব ও রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গণশুনানি না করে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর বৈধতা নিয়ে আদালতে করা রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ ও আইনজীবী জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়। ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, “শুনানিতে আদালতে বলেছি- বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন-২০০৩ এর ২২ এবং ৩৪ ধারা লঙ্ঘন করে এই সার্কুলার জারি করা হয়েছে। এখানে সংবিধানের ১৫ ও ৩১ অনুচ্ছেদও লঙ্ঘন করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইনের ৩৪ ধারায় বলা আছে যে, গণশুনানি করে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন তেলের মূল্য বৃদ্ধি করতে পারে।
“কিন্তু এ আইনে সরকারকে তেলের মূল্য বৃদ্ধির ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। মূল্যবৃদ্ধির ক্ষমতা এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের। সরকার রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এই মূল্যবৃদ্ধি করেছে, যা এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের ২২ এবং ৩৪ ধারার লঙ্ঘন। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে রুল দিয়ে বিবাদীদের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন।” এর আগে গত ৮ আগস্ট জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপনের কার্যকারিতা স্থগিত চেয়ে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। ওই রিট আবেদনে প্রজ্ঞাপনটি কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত করা হবে না এবং প্রজ্ঞাপনটি প্রত্যাহার বা বাতিল করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তাও জানতে আদেশ চাওয়া হয়েছিল।
গত ৫ আগস্ট রাতে ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনের দাম বৃদ্ধি করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। তাতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৪২.৫% বাড়িয়ে প্রতি লিটার ১১৪ টাকা করা হয়েছে। পেট্রোলের দাম ৫১.১৬% বেড়ে প্রতি লিটারের দাম হয়েছে ১৩০ টাকা। আর অকটেনের দাম ৫১.৬৮% বাড়িয়ে প্রতি লিটার করা হয়েছে ১৩৫ টাকা। ৬ অগাস্ট থেকে এই দাম কার্যকর করা হয়েছে। সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় তেল আমদানিতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এ অবস্থায় দেশের বাজারে দাম বাড়ানোর বিকল্প ছিল না। তবে তেলের দাম যে হারে বাড়ানো হয়েছে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের পাশাপাশি অর্থনীতিবিদদের অনেকেও প্রশ্ন তুলেছেন। এভাবে দাম বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত অর্থনীতিতে সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে বলেও হঁশিয়ার করেছেন কেউ কেউ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন নিয়ে হাই কোর্টের প্রশ্ন

আপডেট সময় : ০২:২৭:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : চার ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে গত ৫ আগস্ট জারি করা প্রজ্ঞাপন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট। এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করে।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও উপ সচিব এবং বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন- বিইআরসির চেয়ারম্যান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব ও রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গণশুনানি না করে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর বৈধতা নিয়ে আদালতে করা রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ ও আইনজীবী জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়। ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, “শুনানিতে আদালতে বলেছি- বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন-২০০৩ এর ২২ এবং ৩৪ ধারা লঙ্ঘন করে এই সার্কুলার জারি করা হয়েছে। এখানে সংবিধানের ১৫ ও ৩১ অনুচ্ছেদও লঙ্ঘন করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইনের ৩৪ ধারায় বলা আছে যে, গণশুনানি করে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন তেলের মূল্য বৃদ্ধি করতে পারে।
“কিন্তু এ আইনে সরকারকে তেলের মূল্য বৃদ্ধির ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। মূল্যবৃদ্ধির ক্ষমতা এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের। সরকার রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এই মূল্যবৃদ্ধি করেছে, যা এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের ২২ এবং ৩৪ ধারার লঙ্ঘন। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে রুল দিয়ে বিবাদীদের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন।” এর আগে গত ৮ আগস্ট জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপনের কার্যকারিতা স্থগিত চেয়ে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। ওই রিট আবেদনে প্রজ্ঞাপনটি কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত করা হবে না এবং প্রজ্ঞাপনটি প্রত্যাহার বা বাতিল করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তাও জানতে আদেশ চাওয়া হয়েছিল।
গত ৫ আগস্ট রাতে ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনের দাম বৃদ্ধি করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। তাতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৪২.৫% বাড়িয়ে প্রতি লিটার ১১৪ টাকা করা হয়েছে। পেট্রোলের দাম ৫১.১৬% বেড়ে প্রতি লিটারের দাম হয়েছে ১৩০ টাকা। আর অকটেনের দাম ৫১.৬৮% বাড়িয়ে প্রতি লিটার করা হয়েছে ১৩৫ টাকা। ৬ অগাস্ট থেকে এই দাম কার্যকর করা হয়েছে। সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় তেল আমদানিতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এ অবস্থায় দেশের বাজারে দাম বাড়ানোর বিকল্প ছিল না। তবে তেলের দাম যে হারে বাড়ানো হয়েছে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের পাশাপাশি অর্থনীতিবিদদের অনেকেও প্রশ্ন তুলেছেন। এভাবে দাম বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত অর্থনীতিতে সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে বলেও হঁশিয়ার করেছেন কেউ কেউ।