ঢাকা ০১:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

প্রথম ধাপে ইউপি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ

  • আপডেট সময় : ০১:১২:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুন ২০২১
  • ১০২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিভিন্ন কেন্দ্রে সহিংসতা, মৃত্যুর মধ্য দিয়ে প্রথম ধাপের ২০৪টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে টানা ভোটগ্রহণ। ভোটগ্রহণ শেষে গতকাল রাত সাড়ে ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গণনা চলছিল। নির্বাচনে ২০টি ইউপিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হয়েছে। বাকি ১৮৪টিতে ভোটগ্রহণ হয়েছে ব্যালটের মাধ্যমে।
বরিশালে ভোট কেন্দ্রে সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণে বৃদ্ধ নিহত : বরিশালের গৌরনদীতে ককটেল বিস্ফোরণে মৌজা আলী মৃধা (৬৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দুজন। সোমবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের কমলাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান জানান, অপ্রাপ্তবয়স্ক একজন ওই কেন্দ্রে ভোট দিতে যায়। বিষয়টি ভোটগ্রহণকারীদের পক্ষ থেকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। তখন স্থানীয়দের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষ হয়। তিনি বলেন, ঘটনাটি কেন্দ্রের বাইরে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণে মৌজা আলী মৃধা আহত হন। গুরুতর অবস্থায় তাকে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আরও দুজন আহত হয়েছেন।
ইউপি ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে: ইসি সচিব : দুই-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সোমবার অনুষ্ঠিত ২০৪টি ইউনিয়ন পরিষদে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে দাবি করেছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব হুমায়ুন কবীর। লক্ষীপুর-২ আসনের উপ নির্বাচন এবং ঝালকাঠি ও দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
গতকাল সোমবার সারাদেশের নির্বাচন শেষে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইসি সচিব এসব কথা বলেন। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কয়েকটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার একটি কেন্দ্রের বাইরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এক জন এবং বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ওয়ার্ডের একটি ভোটকেন্দ্রে জালভোট দেওয়ার অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত হন।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন থেকে সারাদেশে অনুষ্ঠিত নির্বাচন মনিটরিং করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন মিডিয়ায় যেসব খবর প্রচারিত হয়েছে, তার ওপরে ভিত্তি করেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘কয়েকটি জায়গায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে, দু’জন নিহত হয়েছের। কোনও মৃত্যুই আমাদের কাম্য নয়। এছাড়া সব নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।’
দুই জন নিহতের ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘প্রার্থীরা নিজেদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় নিহতের ঘটনা ঘটেছে। কাজেই তারা এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেবেন। তাছাড়া ঘটনার তদন্ত হলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।’
নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেওয়ার পরেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এমন অভিযোগের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘যেসব জায়গার অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে, আমরা তার বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা গনমাধ্যমের সংবাদ দেখেও অনেক জায়গায় ব্যবস্থা নিয়েছি।’
স্থগিত ভোট কবে অনুষ্ঠিত হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে এটা বলা যাবে না। কমিশন সভা হলে তখন জানা যাবে। কমিশন বিষয়টি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।’
একটি মৃত্যুও কমিশন কামনা করে না। কেউ এটা কামনা করে না।এইবারের ঘটনা আমাদের একটি অভিজ্ঞতা হয়েছে বলে জানান ইসি সচিব। ভবিষ্যতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে একই ব্যবস্থা নেবেন কিনা জানতে চাইলে হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘আমরা প্রতিটি কেন্দ্রে যথেষ্ট সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করেছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো ছিল। আমরা মনে করি, কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া ভোট ভালো হয়েছে। শান্তিপূর্ণ হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে, কমিশন সেই বিষয়ে পর্যালোচনা করবে।’
উল্লেখ্য, প্রথমে ইসি ৩৬৭টি ইউপিতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলেও করোনাপ্রবণ এলাকার ১৬৩টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে।
ইসির যুগ্ম-সচিব আসাদুজ্জামান জানান, সোমবার ১৩টি জেলার ৪১টি উপজেলায় ২০৪টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম ধাপের এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোট প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৮৫৯ জন, সংরক্ষিত (নারী) সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন দুই হাজার ১৫৪ এবং সাধারণ সদস্য পদে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছয় হাজার ৯৬০ জন। ইতোমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন ২৮ জন।
ইসি সূত্র জানায়, প্রথম ধাপের ইউপি নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল এক হাজার ৮৩৬টি। মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা ১০ হাজার ২৬০টি। এই নির্বাচনে উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে কাজ করেন। নির্বাচনে মোবাইল পুলিশের সদস্য ছিলেন ২০৪ জন, স্ট্রাইকিং পুলিশ ছিলেন ৭৪ জন। র‌্যাবের ১২৪টি টিম, বিজিবির ১২৩ প্লাটুনসহ মোট ৫০৮৮টি ফোর্স মোতায়েন ছিল। অন্যদিকে, ৩৯৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ৪১ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে ছিলেন। প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ছিলেন ১২ হাজার ২০৭ জন। পোলিং অফিসার ছিলেন ২০ হাজার ৫২০ জন।
এর আগে ১০ জুন ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেছিলেন, ২১ জুন নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত ৩৬৭টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে করোনার উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন এলাকা খুলনা বিভাগের সব ইউনিয়ন পরিষদ, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার ইউনিয়ন পরিষদসহ মোট ১৬৩টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে- বাগেরহাট জেলায় ৬৮টি, খুলনা জেলায় ৩৪টি, সাতক্ষীরা জেলায় ২১টি, নোয়াখালী জেলায় ১৩টি, চট্টগ্রাম জেলায় ১২টি এবং কক্সবাজার জেলায় ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদ।
ইউনিয়ন পরিষদ ছাড়াও লক্ষ্মীপুর-২ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন, ঝালকাঠি ও দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ পৌরসভার ভোটগ্রহণও সোমবার অনুষ্ঠিত হয়। এই ভোটের দিন নির্বাচনী এলাকায় কোনো সাধারণ ছুটি ছিল না। ভোটকেন্দ্রসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও কর্মকর্তারা সাধারণ ছুটির আওতায় ছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্রথম ধাপে ইউপি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ

আপডেট সময় : ০১:১২:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুন ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিভিন্ন কেন্দ্রে সহিংসতা, মৃত্যুর মধ্য দিয়ে প্রথম ধাপের ২০৪টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে টানা ভোটগ্রহণ। ভোটগ্রহণ শেষে গতকাল রাত সাড়ে ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গণনা চলছিল। নির্বাচনে ২০টি ইউপিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হয়েছে। বাকি ১৮৪টিতে ভোটগ্রহণ হয়েছে ব্যালটের মাধ্যমে।
বরিশালে ভোট কেন্দ্রে সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণে বৃদ্ধ নিহত : বরিশালের গৌরনদীতে ককটেল বিস্ফোরণে মৌজা আলী মৃধা (৬৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দুজন। সোমবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের কমলাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান জানান, অপ্রাপ্তবয়স্ক একজন ওই কেন্দ্রে ভোট দিতে যায়। বিষয়টি ভোটগ্রহণকারীদের পক্ষ থেকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। তখন স্থানীয়দের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষ হয়। তিনি বলেন, ঘটনাটি কেন্দ্রের বাইরে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণে মৌজা আলী মৃধা আহত হন। গুরুতর অবস্থায় তাকে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আরও দুজন আহত হয়েছেন।
ইউপি ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে: ইসি সচিব : দুই-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সোমবার অনুষ্ঠিত ২০৪টি ইউনিয়ন পরিষদে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে দাবি করেছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব হুমায়ুন কবীর। লক্ষীপুর-২ আসনের উপ নির্বাচন এবং ঝালকাঠি ও দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
গতকাল সোমবার সারাদেশের নির্বাচন শেষে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইসি সচিব এসব কথা বলেন। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কয়েকটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার একটি কেন্দ্রের বাইরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এক জন এবং বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ওয়ার্ডের একটি ভোটকেন্দ্রে জালভোট দেওয়ার অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত হন।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন থেকে সারাদেশে অনুষ্ঠিত নির্বাচন মনিটরিং করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন মিডিয়ায় যেসব খবর প্রচারিত হয়েছে, তার ওপরে ভিত্তি করেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘কয়েকটি জায়গায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে, দু’জন নিহত হয়েছের। কোনও মৃত্যুই আমাদের কাম্য নয়। এছাড়া সব নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।’
দুই জন নিহতের ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘প্রার্থীরা নিজেদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় নিহতের ঘটনা ঘটেছে। কাজেই তারা এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেবেন। তাছাড়া ঘটনার তদন্ত হলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।’
নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেওয়ার পরেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এমন অভিযোগের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘যেসব জায়গার অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে, আমরা তার বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা গনমাধ্যমের সংবাদ দেখেও অনেক জায়গায় ব্যবস্থা নিয়েছি।’
স্থগিত ভোট কবে অনুষ্ঠিত হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে এটা বলা যাবে না। কমিশন সভা হলে তখন জানা যাবে। কমিশন বিষয়টি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।’
একটি মৃত্যুও কমিশন কামনা করে না। কেউ এটা কামনা করে না।এইবারের ঘটনা আমাদের একটি অভিজ্ঞতা হয়েছে বলে জানান ইসি সচিব। ভবিষ্যতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে একই ব্যবস্থা নেবেন কিনা জানতে চাইলে হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘আমরা প্রতিটি কেন্দ্রে যথেষ্ট সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করেছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো ছিল। আমরা মনে করি, কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া ভোট ভালো হয়েছে। শান্তিপূর্ণ হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে, কমিশন সেই বিষয়ে পর্যালোচনা করবে।’
উল্লেখ্য, প্রথমে ইসি ৩৬৭টি ইউপিতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলেও করোনাপ্রবণ এলাকার ১৬৩টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে।
ইসির যুগ্ম-সচিব আসাদুজ্জামান জানান, সোমবার ১৩টি জেলার ৪১টি উপজেলায় ২০৪টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম ধাপের এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোট প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৮৫৯ জন, সংরক্ষিত (নারী) সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন দুই হাজার ১৫৪ এবং সাধারণ সদস্য পদে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছয় হাজার ৯৬০ জন। ইতোমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন ২৮ জন।
ইসি সূত্র জানায়, প্রথম ধাপের ইউপি নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল এক হাজার ৮৩৬টি। মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা ১০ হাজার ২৬০টি। এই নির্বাচনে উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে কাজ করেন। নির্বাচনে মোবাইল পুলিশের সদস্য ছিলেন ২০৪ জন, স্ট্রাইকিং পুলিশ ছিলেন ৭৪ জন। র‌্যাবের ১২৪টি টিম, বিজিবির ১২৩ প্লাটুনসহ মোট ৫০৮৮টি ফোর্স মোতায়েন ছিল। অন্যদিকে, ৩৯৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ৪১ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে ছিলেন। প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ছিলেন ১২ হাজার ২০৭ জন। পোলিং অফিসার ছিলেন ২০ হাজার ৫২০ জন।
এর আগে ১০ জুন ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেছিলেন, ২১ জুন নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত ৩৬৭টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে করোনার উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন এলাকা খুলনা বিভাগের সব ইউনিয়ন পরিষদ, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার ইউনিয়ন পরিষদসহ মোট ১৬৩টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে- বাগেরহাট জেলায় ৬৮টি, খুলনা জেলায় ৩৪টি, সাতক্ষীরা জেলায় ২১টি, নোয়াখালী জেলায় ১৩টি, চট্টগ্রাম জেলায় ১২টি এবং কক্সবাজার জেলায় ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদ।
ইউনিয়ন পরিষদ ছাড়াও লক্ষ্মীপুর-২ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন, ঝালকাঠি ও দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ পৌরসভার ভোটগ্রহণও সোমবার অনুষ্ঠিত হয়। এই ভোটের দিন নির্বাচনী এলাকায় কোনো সাধারণ ছুটি ছিল না। ভোটকেন্দ্রসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও কর্মকর্তারা সাধারণ ছুটির আওতায় ছিলেন।