ঢাকা ০২:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

মাছের বাজারে আগুন

  • আপডেট সময় : ০২:৪৫:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ অগাস্ট ২০২২
  • ৮৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাজারে প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম লাফিয়ে বেড়েছে। তবে মাছের বাজারে সীমাহীন দাম বেড়েছে, যা চলতি বছরে সর্বোচ্চ। এতে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, মূলত জ্বালানি তেলের মূল্যের প্রভাব পরিবহন খাতসহ সব দিকে পড়েছে। এ কারণেই বাজারের এমন পরিস্থিতি।
গতকাল সোমবার একটি সংবাদসংস্থা সরেজমিনে রাজধানীর ফার্মগেট, হাতিরপুল, কারওয়ান বাজার এলাকার মাছ বাজার ঘুরে দেখে জানিয়েছে, পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০ থেকে ৫২০ টাকা, রুই মাছ ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, তেলাপিয়া মাছের কেজি ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৮০ টাকা, পাঙাস মাছ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা।
চিংড়ি মাছ মাঝারি সাইজের প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায়, প্রমাণ সাইজের চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ১১৫৫ থেকে ১৮৫০ টাকা কেজি দরে। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মাছের দামে কেজিতে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইলিশের দাম লাগামের বাইরে চলে গেছে। এক কেজি ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০০ থেকে ১৮৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১১০০ থেকে ১৩০০ টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে ১০০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা। আর ৪০০-৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
একাধিক পাইকারী ব্যবসায়ী ও খুচরা বিক্রেতা জানান, প্রতিদিন বাজারে সব পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। জ্বালানিসহ আনুষাঙ্গিক জিনিসের দাম না কমলে, বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকবে।
হাতিরপুল বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ী খায়রুল হাসান বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় মাছ বিভিন্ন জায়গা থেকে পরিবহন দিয়ে আনতে হয়ে। এজন্য বাধ্য হয়ে অন্যান্য জিনিসপত্রের মতো মাছও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। চলতি বছরে এখন মাছের দাম সর্বোচ্চ বেড়েছে।
কারওয়ান বাজারের মাছ বিক্রেতা শুকুর মিয়া বলেন, আমাদের তো ব্যবসায় কিছু টাকা লাভ করতে হবে। বাজারে সব পণ্যের দাম বেড়েছে। আমাদেরও তো ওইসব পণ্য কিনে খেতে হয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রাজধানীতে মাছগুলো আসতে আসতে গাড়ি ভাড়া দিতে দিতে দাম বেড়ে যায়। আমরা জনগণ চাই জ্বালানি তেলের দাম কমুক। আমরাও কমে দামে কেনাকাটা করতে পারব।
কারওয়ান বাজারে মাছ কিনতে আসা ফার্মগেট এলাকার বাসিন্দা আদিল হোসেন বলেন, ‘আমাদের এই দেশে সাধারণ মানুষই দুর্ভোগে পরে সব সময়। আমাদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খায় সরকার। কিন্তু এই জনতার জন্যই নেতা তৈরি হয়। জনতা যদি চায় দেশে কোনো নেতা থাকবে না, তাও সম্ভব। জনতা এখন ক্ষ্যাপা আছে। পেটে ক্ষুধা থাকলে, খাবারের জন্য যুদ্ধ করতেও রাজি। তবে আমরা আর যুদ্ধ চাই না। আমাদের দেশ খুব চমৎকার মানুষকেও সুন্দর ও ভালো রাখতে বাজার মূল্য কমিয়ে আনা হোক। না হয় আগামীতে জনগণ চিন্তাধারা বদল করতে পারে।’
বাদাম বিক্রেতা মুক্তার মিয়া বলেন, ‘বাদাম বিক্রি করে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। এর মধ্যে বাজারে সব কিছুর দাম বেশি। আমার ছেলে অসুস্থ, মাছ খেতে চেয়েছে। মাছের বাজারে এসে তো বোকা হয়ে গেছি। এত বেশি দাম কল্পনাও করি না। এমনিতেই মাছ বিক্রেতারা যার কাছ থেকে যত নিতে পারে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় তো সব ব্যবসায়ীরা ক্রেতার পকেট কাটছে।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

তত্ত্বাবধায়ক পুনর্বহাল ও সীমানা পুনর্নির্ধারণে সব দল একমত

মাছের বাজারে আগুন

আপডেট সময় : ০২:৪৫:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাজারে প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম লাফিয়ে বেড়েছে। তবে মাছের বাজারে সীমাহীন দাম বেড়েছে, যা চলতি বছরে সর্বোচ্চ। এতে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, মূলত জ্বালানি তেলের মূল্যের প্রভাব পরিবহন খাতসহ সব দিকে পড়েছে। এ কারণেই বাজারের এমন পরিস্থিতি।
গতকাল সোমবার একটি সংবাদসংস্থা সরেজমিনে রাজধানীর ফার্মগেট, হাতিরপুল, কারওয়ান বাজার এলাকার মাছ বাজার ঘুরে দেখে জানিয়েছে, পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০ থেকে ৫২০ টাকা, রুই মাছ ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, তেলাপিয়া মাছের কেজি ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৮০ টাকা, পাঙাস মাছ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা।
চিংড়ি মাছ মাঝারি সাইজের প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায়, প্রমাণ সাইজের চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ১১৫৫ থেকে ১৮৫০ টাকা কেজি দরে। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মাছের দামে কেজিতে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইলিশের দাম লাগামের বাইরে চলে গেছে। এক কেজি ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০০ থেকে ১৮৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১১০০ থেকে ১৩০০ টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে ১০০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা। আর ৪০০-৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
একাধিক পাইকারী ব্যবসায়ী ও খুচরা বিক্রেতা জানান, প্রতিদিন বাজারে সব পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। জ্বালানিসহ আনুষাঙ্গিক জিনিসের দাম না কমলে, বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকবে।
হাতিরপুল বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ী খায়রুল হাসান বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় মাছ বিভিন্ন জায়গা থেকে পরিবহন দিয়ে আনতে হয়ে। এজন্য বাধ্য হয়ে অন্যান্য জিনিসপত্রের মতো মাছও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। চলতি বছরে এখন মাছের দাম সর্বোচ্চ বেড়েছে।
কারওয়ান বাজারের মাছ বিক্রেতা শুকুর মিয়া বলেন, আমাদের তো ব্যবসায় কিছু টাকা লাভ করতে হবে। বাজারে সব পণ্যের দাম বেড়েছে। আমাদেরও তো ওইসব পণ্য কিনে খেতে হয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রাজধানীতে মাছগুলো আসতে আসতে গাড়ি ভাড়া দিতে দিতে দাম বেড়ে যায়। আমরা জনগণ চাই জ্বালানি তেলের দাম কমুক। আমরাও কমে দামে কেনাকাটা করতে পারব।
কারওয়ান বাজারে মাছ কিনতে আসা ফার্মগেট এলাকার বাসিন্দা আদিল হোসেন বলেন, ‘আমাদের এই দেশে সাধারণ মানুষই দুর্ভোগে পরে সব সময়। আমাদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খায় সরকার। কিন্তু এই জনতার জন্যই নেতা তৈরি হয়। জনতা যদি চায় দেশে কোনো নেতা থাকবে না, তাও সম্ভব। জনতা এখন ক্ষ্যাপা আছে। পেটে ক্ষুধা থাকলে, খাবারের জন্য যুদ্ধ করতেও রাজি। তবে আমরা আর যুদ্ধ চাই না। আমাদের দেশ খুব চমৎকার মানুষকেও সুন্দর ও ভালো রাখতে বাজার মূল্য কমিয়ে আনা হোক। না হয় আগামীতে জনগণ চিন্তাধারা বদল করতে পারে।’
বাদাম বিক্রেতা মুক্তার মিয়া বলেন, ‘বাদাম বিক্রি করে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। এর মধ্যে বাজারে সব কিছুর দাম বেশি। আমার ছেলে অসুস্থ, মাছ খেতে চেয়েছে। মাছের বাজারে এসে তো বোকা হয়ে গেছি। এত বেশি দাম কল্পনাও করি না। এমনিতেই মাছ বিক্রেতারা যার কাছ থেকে যত নিতে পারে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় তো সব ব্যবসায়ীরা ক্রেতার পকেট কাটছে।’