নড়াইল সংবাদদাতা : ফেইসবুকে ‘ধর্ম অবমাননার’ পোস্ট ঘিরে লাঞ্ছিত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস ‘যন্ত্রণা ভুলে কাজ শুরু করেছেন; শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে গ্রহণ করেছেন পরিকল্পনা’। গতকাল বৃহস্পতিবার সারাদিন কলেজে থেকে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে বিভিন্ন পরিকল্পনা করেন বলে তিনি নিজে সংবাদ মাধ্যমকে জানান। স্বপন কুমার বলেন, “সেদিনের ঘটনায় আমি মানসিকভাবে প্রচ- হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। জীবন-মৃত্যুর মাঝামাঝি ছিলাম। কিন্তু যখন দেখলাম সারাদেশের বিবেকবান শিক্ষিত সমাজ আমার সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন, বিভিন্ন জায়গায় আমার জন্য রাস্তায় নেমেছেন, তখন যন্ত্রণা ভুলে আবার বাঁচার শক্তি ফিরে পেয়েছি।”
গত ১৮ জুন নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের এক ছাত্রের ফেইসবুকে প্রকাশিত পোস্টে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ উঠলে উত্তেজনা দেখা দেয়। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওই ছাত্রের পক্ষ নিয়েছেন এমন খবর রটানো হলে পুলিশের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ বাধে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় কয়েকজন। তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই দিনই কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ঘটনার পর থেকে বাড়ির বাইরে ছিলেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। এক মাসের বেশি সময় পরে গত ২৪ জুলাই উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষে পাঠদান শুরুর মধ্য দিয়ে কলেজ চালু হলেও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কলেজে যোগ দেন বুধবার দুপুরে। সে সময় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ফুলের মালায় বরণ করে নেন তাকে। স্বপন কুমার বলেন, “বেশ কিছুদিন কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া পড়ায় ঘাটতি হয়েছে। এ বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে বিভিন্ন পরিকল্পনা করেছি। সহকর্মীরা অত্যন্ত আন্তরিকভাবে আমাকে সহযোগিতা করেছেন। আশা করছি সবকিছু ভালভাবেই চলবে।” সেদিনের ঘটনায় তিনি ‘প্রচ- হতাশ’ হলেও এখন আবার উজ্জীবিত। স্বপন বলেন, “আমাকে একদিন যেখানে গলায় জুতার মালা দেওয়া হয়েছিল, সবার সমর্থনে আমি আবার আমার সেই প্রাণের প্রতিষ্ঠানে ফিরে আসতে পেরেছি। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”
বাঁচার শক্তি ফিরে পেয়েছি: অধ্যক্ষ স্বপন কুমার
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ