রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় শিফটে ৯২ দশমিক ৭৫ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছিলেন তানভীর আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী। তাঁর হয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ধরা পড়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী বায়েজিদ খান। তিনি বর্তমানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দ-িত হয়ে এক বছরের কারাভোগ করছেন। গত মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
এদিকে এই ঘটনা জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এক জরুরি সভা শেষে গতকাল বুধবার দুপুরে তানভীর আহমেদের ফলাফল বাতিল ঘোষণা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পান্ডে স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ফলাফল বাতিলের কথা জানানো হয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, ‘এ’ ইউনিটের ৩৯৫৩৪ রোল নম্বরধারী তানভীর আহমেদ নামের একজন দ্বিতীয় শিফটে প্রথম হয়েছেন। পরীক্ষার দিন জনসংযোগ দপ্তর প্রশাসকের পক্ষ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও উল্লেখ করা হয়েছিল, এই রোল নম্বরধারী তানভীরের হয়ে প্রক্সি দিতে গিয়ে আটক হয়েছেন বায়েজিদ খান।
এমনকি ওই দিন বায়েজিদ জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুশফিক তাহমিদ তন্ময়ের নাম উল্লেখ করে বলেছিলেন, তাঁকে এ কাজে নিয়োগ দিয়েছিলেন তন্ময়। এ নিয়ে প্রথম আলোয় গত ২৭ জুলাই ‘“প্রক্সি পরীক্ষা” দিতে গিয়ে আটক শিক্ষার্থী বললেন “জড়িত” ছাত্রলীগ নেতার নাম’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফলাফলে আরও দেখা যায়, ওই দিন ৬২৮২৮ রোল নম্বরধারী ইশরাত জাহানের হয়ে প্রক্সি দেন জান্নাতুল মেহজাবিন। যথারীতি ইশরাত জাহানও পাস করেছেন। তিনি তৃতীয় শিফটে ৪৬ দশমিক ৯০ পেয়ে ৬ হাজার ৯২১তম অবস্থানে আছেন। তবে ওই দিন ১৭২২৮ রোল নম্বরধারী মো. তামিম হাসান লিমনের হয়ে প্রক্সি দেওয়া এখলাসুর রহমানের ও ৮৪৬৪৮ নম্বরধারী রাহাত আমিনের হয়ে পরীক্ষা দেওয়া ডা. সমীর রায়ের ফলাফল বাতিল দেখা গেছে।
তবে বুধবার দুপুরের পর থেকে সব কটি ফলাফলই বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এই রোল নম্বর দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ফলাফল দেখতে গিয়ে দেখা গেছে, সব কটিই ‘এক্সপেলড’।
প্রক্সিতে ধরা পড়ার পরও এমন ফলাফল কেন এল—এ বিষয়ে জানতে চাইলে ‘এ’ ইউনিটের সমন্বয়ক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ইলিয়াছ হোসেন বলেন, ‘কো-অর্ডিনেটর হিসেবে যতগুলো ভ্যালিড ওমআর শিট আসে, সেগুলোর আমি রেজাল্ট তৈরি করে দিই। এদের যে বহিষ্কার করা হয়েছে কিংবা প্রক্সি দেওয়া শিক্ষার্থীকে যে কারাদ- দেওয়া হয়েছে, এটা জানতাম না। এ ব্যাপারে আমার কাছে লিখিতভাবে কেউ জানাননি। আমি তো উত্তরপত্র ভ্যালিড দেখে রেজাল্ট তৈরি করেছি।’ তিনি আরও বলেন, এটা প্রক্টর দপ্তরের জানানোর কথা ছিল। তারা এটা জানায়নি। এটা অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়ে গেছে। আর এটা প্রাথমিক ফলাফল। ফলাফল বাতিল করা হয়েছে।
‘প্রক্সি’ সুবিধা নেওয়া ছাত্র হলেন প্রথম, জানাজানির পর ফল বাতিল
জনপ্রিয় সংবাদ