সিএনবিসি : রুশ আগ্রাসনের ফলে এ বছর ইউক্রেনের ফসল উৎপাদন স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অর্ধেকে নেমে আসতে পারে। গতকাল রবিবার টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি। টুইটে জেলেনস্কি বলেন, ‘এ বছর ইউক্রেনের ফসল উৎপাদন অর্ধেকে নেমে যাওয়ার হুমকির মধ্যে রয়েছে। আমাদের মূল লক্ষ্য রুশ হামলার ফলে বিশ্বব্যাপী তৈরি হওয়া খাদ্য সংকট প্রতিরোধ করা।’ ইউক্রেন বিশ্বের চতুর্থ খাদ্যশস্য রফতানিকারক দেশ। বিশ্বের ৪২ ভাগ সূর্যমুখী তেল উৎপাদন হয় এই দেশটিতে। এছাড়া মোট ভুট্টার ১৬ শতাংশ এবং গমের ৯ শতাংশ উৎপাদন করে দেশটি। এই যুদ্ধের জেরে বিশ্বে গমের সবচেয়ে বড় রফতানিকারক রাশিয়া থেকেও রফতানি কমে গেছে। রাশিয়ার কৃষির ওপর কোনও নিষেধাজ্ঞা পশ্চিমারা দেয়নি। তবে পেমেন্ট সিস্টেমে প্রভাব পড়ার পাশাপাশি ইন্স্যুরেন্স ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে মস্কোর রফতানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। রাশিয়ার কৃষিপণ্যবাহী জাহাজগুলোকেও অবশ্য ইউরোপের বন্দরগুলোতে এখনো কোন বাধা দেয়া হচ্ছে না। আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক জানিয়েছে, আফ্রিকার প্রয়োজনীয় গমের ৪০ ভাগই সরবরাহ করে রাশিয়া ও ইউক্রেন। কিন্তু যুদ্ধের কারণে প্রায় তিন কোটি টন খাদ্যের ঘাটতি তৈরি হয়েছে আফ্রিকায়। যার ফলে পুরো মহাদেশজুড়ে খাবারের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। নাইজেরিয়ায় পাস্তা ও ব্রেডের দাম বেড়েছে অন্তত ৫০ শতাংশ। সিরিয়া ইউক্রেনের গমের আরেক বড় ক্রেতা দেশ। সেখানে ব্রেডের দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
এদিকে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মাইকোলাইভে ব্যাপক গোলাবর্ষণ করেছে রুশ বাহিনী। শহরটিতে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার চালানো সবচেয়ে শক্তিশালী হামলা বলে ধারণা করছেন মেয়র অলেক্সান্ডার সেনকেভিচ। রবিবার দিবাগত রাতে শহরের একটি হোটেল, স্পোর্ট কমপ্লেক্স ও স্কুলে হামলা হয়েছে বলে বিবিসি’র প্রতিবেদনে এসেছে। গত রাতের হামলা নিয়ে মস্কোর পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয় হামলার গতি বাড়িয়েছে রুশ বাহিনী। কৃষ্ণ সাগরের কাছে হওয়ায় মাইকোলাইভ শহরটি ইউক্রেনের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এদিকে ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণাধীন পূর্ব ডনেস্ক অঞ্চলে এখনও যেসব বাসিন্দা রয়ে গেছেন তাদের অবিলম্বে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রবিবার দিবাগত রাতে দেওয়া ভাষণে রুশ সীমান্তবর্তী অঞ্চলটিতে তীব্র লড়াইয়ের আভাস দিয়ে সতর্ক করেছেন তিনি। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘এখন যত বেশি মানুষ ডনেস্ক অঞ্চল ছেড়ে যেতে পারবেন, তত কম লোক হত্যা করার সময় পাবে রাশিয়ান সেনাবাহিনী’।
ফসল উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসতে পারে: জেলেনস্কি
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ