ঢাকা ০১:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বাজেটে বন্ধ পাটকল চালুর নির্দেশনা দাবি

  • আপডেট সময় : ০১:০০:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুন ২০২১
  • ৭১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো চালুর জন্য দিক নির্দেশনা দাবি করেছে পাট, সুতা, বস্ত্রকল, শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদ। গতকাল শনিবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশ থেকে এই দাবি তোলা হয়। আধুনিকায়ন করে পাটকল চালু, বদলি শ্রমিকসহ সবার বকেয়া পাওনা পরিশোধ, পিপিপি বা ব্যক্তি মালিকানার নামে লুটপাট বন্ধ, বিরাষ্ট্রীয়করণ বাতিলের দাবিতে ওই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। একই সঙ্গে এক হাজার ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে পাটকল আধুনিকায়ন করতে শ্রমিক কর্মচারি ঐক্য পরিষদের প্রস্তাব গ্রহণ করার দাবি জানানো হয়। সমাবেশে সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক সহিদুল্লাহ চৌধুরী বলেন, “গত বছরের ২৮ জুন আকস্মিক এক ঘোষণার মধ্য দিয়ে সরকার অবশিষ্ট ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করেছিল। আজ এই জুন মাসে তা এক বছরে গড়াল। এতে সেদিন স্থায়ী, বদলি ও ক্যাজুয়াল-সব মিলিয়ে প্রায় ৫১ হাজার পাটকল শ্রমিককে বেকার করে দেয়া হয়েছিল।” তিনি বলেন, “বন্ধকৃত মিলের শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে ৫০ শতাংশ নগদ অর্থ এবং বাকি ৫০ ভাগ সঞ্চয় স্কিমের মাধ্যমে তিন মাস অন্তর মুনাফা পাওয়ার যে ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছিল, শ্রমিকরা সেই অর্থ এখনো পায়নি। ইতিমধ্যে তাদের প্রাপ্ত নগদ টাকা সংসারের জন্য খরচের ফলে তা শূন্য হতে চলেছে। অন্যদিকে বদলি শ্রমিকদের কোনো পাওনা পরিশোধ করা হয়নি। ফলে তারা মানবেতর জীবন অতিবাহিত করছেন। গত একবছর ধরে তারা তাদের পাওনার জন্য ধর্না দিয়ে বিফল হয়েছেন।” করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে গত ১ জুলাই থেকে ‘শতভাগ’ পাওনা বুঝিয়ে দিয়ে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত সব পাটকল বন্ধের ঘোষণা কার্যকর হয়। সরকারের তরফ থেকে বলা হয়, ধারাবাহিকভাবে লোকসানে থাকা এসব রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের পুঞ্জীভূত দেনা বাড়তে থাকায় বন্ধ করা ছাড়া উপায় ছিল না। আপাতত বন্ধ রেখে পাটকলগুলো পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় আধুনিকায়ন করে ছয় মাসের মধ্যে নতুন করে চালু করার পরিকল্পনার কথা সে সময় জানানো হয়। রাষ্ট্রায়ত্ত ২৬টি পাটকলে ২৪ হাজার ৮৮৬ জন স্থায়ী শ্রমিক ছিলেন, যাদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে অবসরে পাঠানো হয়। শ্রমিকদের শতভাগ পাওনা এককালীন পরিশোধের ব্যবস্থা হয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে। গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার করিম জুট মিলসের ১ হাজার ৭৫৯ জন শ্রমিকের পাওনা বুঝিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ কার্যক্রম শুরু করে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, “সরকার ৬ লাখ টাকার অধিক বাজেট ঘোষণা করেছে। ওই বাজেটে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল চালু ও শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের কোনো দিক-নির্দেশনা নেই। বিশেষ বরাদ্দও নেই।“ নেতারা রাষ্ট্রায়াত্ত পাটকল চালু, আধুনিকায়ন ও উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রপাতির সংযোজন এবং উপযুক্ত ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা ও শ্রমিক কর্মচারীর সমুদয় বকেয়া পরিশোধের আহ্বান জানান। এজন্য বাজেটে দিক-নির্দেশনা ও পর্যাপ্ত বরাদ্দেরও দাবি জানান। সহিদুল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন শ্রমিকনেতা কামরুল আহসান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন শ্রমিকনেতা আসলাম খান, শরিফুজ্জামান শরিফ, আব্দুল গাফ্ফার, হাসু বেগম প্রমুখ। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দিপক শীল।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

হাসিনার সহিংস আচরণের প্রতিক্রিয়ায় বাড়ি ভাঙার ঘটনা: অন্তর্বর্তী সরকার

বাজেটে বন্ধ পাটকল চালুর নির্দেশনা দাবি

আপডেট সময় : ০১:০০:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুন ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো চালুর জন্য দিক নির্দেশনা দাবি করেছে পাট, সুতা, বস্ত্রকল, শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদ। গতকাল শনিবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশ থেকে এই দাবি তোলা হয়। আধুনিকায়ন করে পাটকল চালু, বদলি শ্রমিকসহ সবার বকেয়া পাওনা পরিশোধ, পিপিপি বা ব্যক্তি মালিকানার নামে লুটপাট বন্ধ, বিরাষ্ট্রীয়করণ বাতিলের দাবিতে ওই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। একই সঙ্গে এক হাজার ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে পাটকল আধুনিকায়ন করতে শ্রমিক কর্মচারি ঐক্য পরিষদের প্রস্তাব গ্রহণ করার দাবি জানানো হয়। সমাবেশে সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক সহিদুল্লাহ চৌধুরী বলেন, “গত বছরের ২৮ জুন আকস্মিক এক ঘোষণার মধ্য দিয়ে সরকার অবশিষ্ট ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করেছিল। আজ এই জুন মাসে তা এক বছরে গড়াল। এতে সেদিন স্থায়ী, বদলি ও ক্যাজুয়াল-সব মিলিয়ে প্রায় ৫১ হাজার পাটকল শ্রমিককে বেকার করে দেয়া হয়েছিল।” তিনি বলেন, “বন্ধকৃত মিলের শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে ৫০ শতাংশ নগদ অর্থ এবং বাকি ৫০ ভাগ সঞ্চয় স্কিমের মাধ্যমে তিন মাস অন্তর মুনাফা পাওয়ার যে ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছিল, শ্রমিকরা সেই অর্থ এখনো পায়নি। ইতিমধ্যে তাদের প্রাপ্ত নগদ টাকা সংসারের জন্য খরচের ফলে তা শূন্য হতে চলেছে। অন্যদিকে বদলি শ্রমিকদের কোনো পাওনা পরিশোধ করা হয়নি। ফলে তারা মানবেতর জীবন অতিবাহিত করছেন। গত একবছর ধরে তারা তাদের পাওনার জন্য ধর্না দিয়ে বিফল হয়েছেন।” করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে গত ১ জুলাই থেকে ‘শতভাগ’ পাওনা বুঝিয়ে দিয়ে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত সব পাটকল বন্ধের ঘোষণা কার্যকর হয়। সরকারের তরফ থেকে বলা হয়, ধারাবাহিকভাবে লোকসানে থাকা এসব রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের পুঞ্জীভূত দেনা বাড়তে থাকায় বন্ধ করা ছাড়া উপায় ছিল না। আপাতত বন্ধ রেখে পাটকলগুলো পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় আধুনিকায়ন করে ছয় মাসের মধ্যে নতুন করে চালু করার পরিকল্পনার কথা সে সময় জানানো হয়। রাষ্ট্রায়ত্ত ২৬টি পাটকলে ২৪ হাজার ৮৮৬ জন স্থায়ী শ্রমিক ছিলেন, যাদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে অবসরে পাঠানো হয়। শ্রমিকদের শতভাগ পাওনা এককালীন পরিশোধের ব্যবস্থা হয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে। গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার করিম জুট মিলসের ১ হাজার ৭৫৯ জন শ্রমিকের পাওনা বুঝিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ কার্যক্রম শুরু করে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, “সরকার ৬ লাখ টাকার অধিক বাজেট ঘোষণা করেছে। ওই বাজেটে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল চালু ও শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের কোনো দিক-নির্দেশনা নেই। বিশেষ বরাদ্দও নেই।“ নেতারা রাষ্ট্রায়াত্ত পাটকল চালু, আধুনিকায়ন ও উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রপাতির সংযোজন এবং উপযুক্ত ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা ও শ্রমিক কর্মচারীর সমুদয় বকেয়া পরিশোধের আহ্বান জানান। এজন্য বাজেটে দিক-নির্দেশনা ও পর্যাপ্ত বরাদ্দেরও দাবি জানান। সহিদুল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন শ্রমিকনেতা কামরুল আহসান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন শ্রমিকনেতা আসলাম খান, শরিফুজ্জামান শরিফ, আব্দুল গাফ্ফার, হাসু বেগম প্রমুখ। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দিপক শীল।