ঢাকা ১০:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫

লালবাগ কেল্লা ও জাতীয় জাদুঘরে দর্শনার্থীর ভিড়

  • আপডেট সময় : ০১:২৩:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ জুলাই ২০২২
  • ১১৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দর্শনার্থীর ভিড় বেড়েছে রাজধানীর ঐতিহাসিক লালবাগ কেল্লা ও শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরে। সরকার ঘোষিত ঈদের ছুটি শেষ হলেও জাদুঘর এলাকায় এখনো ছুটির আমেজ। কেউ এসেছেন পরিবার নিয়ে আবার কেউ বন্ধুবান্ধব নিয়ে ঘুরতে এসেছেন এখানে। গতকাল বুধবার জাতীয় জাদুঘরের সামনে গিয়ে দেখা যায়, টিকিট কাউন্টারে দীর্ঘ লাইন। ছোট থেকে বড় সব বয়সী মানুষ ভিড় করছে এখানে। লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করার ঝমেলা এড়াতে অনেকে বাসা থেকে অনলাইনে টিকিট কেটে এসেছেন। আবার অনেকে জাদুঘরের প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে তাৎক্ষণিক টিকিট কেটে প্রবেশ করছেন।
অনলাইনে টিকিট কেটে পরিবার নিয়ে জাদুঘরে প্রবেশ করেন রিয়াজ উদ্দিন। তার সঙ্গে আছে দুই সন্তান, স্ত্রী ও দুই বোন। অনলাইনে টিকিট কেটে প্রবেশ করেন তিনি। তিনি বলেন, ঈদ গ্রামে করেছি। মঙ্গলবার রাতেই ঢাকা ফিরেছি। দেখলাম এখনো রাস্তাঘাট ফাঁকা । তাই ভাবলাম সবাইকে নিয়ে একটু ঘুরে আসি। জাদুঘর আমাদের ঐতিহ্য। এখানে আসলে গ্রাম বাংলার অনেক হারিয়ে যাওয়া বিষয় ও ইতিহাসের সঙ্গে সন্তানদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া যায়। ঢাকায়ই ঈদ করেছেন মোসলেম উদ্দিন। ছোট সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে এসেছেন জাদুঘরে ঘুরতে। তিনি বলেন, যেহেতু ঈদ রাজধানীতেই করেছি তাই এখানে আসলাম। খিলগাঁও এলাকা থেকে রাসেল ও রবিউল দুই বন্ধু ঘুরতে এসেছেন জাদুঘরে। রাসেল বলেন, জাদুঘরে আমরা এর আগেও এসেছি। মাত্র ২০ টাকায় অনেক কিছু দেখা যায়। প্রত্যেক দর্শনার্থীকে তল্লাশি করে প্রবেশ করাচ্ছেন জাদুঘরের প্রধান ফটকের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আল-আমিন। তিনি বলেন, অনলাইনে টিকিট কাটা থাকলে সরাসরি ভেতরে প্রবেশ করা যায়। সরাসরি টিকিট কেটে সিরিয়াল ধরে প্রবেশ করতে হচ্ছে। অনেকেই গেটের সামনে থেকেই টিকিট কেটে প্রবেশ করছেন। কেমন দর্শনার্থী আসছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঈদের ছুটি শেষ হলেও ভালোই লোকজন আসছে। দুপুরের পর আরও বাড়ে। সপ্তাহে শনি থেকে বুধবার পর্যন্ত সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে জাদুঘর। বৃহস্পতিবার ছুটির দিন। শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখা হয়। এছাড়া ঈদের ছুটিতে কোনো শিডিউল পরিবর্তন করেনি জাদুঘর কর্তৃপক্ষ।
লালবাগ কেল্লায় দর্শনার্থীর ভিড় : ঈদুল আজহার চতুর্থ দিনেও পুরান ঢাকার লালবাগ কেল্লায় দেখা গেছে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধসহ সব বয়সী মানুষ এসেছেন ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে। কেউ ছেলে-মেয়ে, কেউ স্ত্রী কিংবা বন্ধুবান্ধবসহ পরিবারের লোকজন নিয়ে ঘুরছেন।
গতকাল বুধবার বিকেলে লালবাগ কেল্লায় গিয়ে এমনটি দেখা যায়। সকাল ১০টা থেকে কেল্লা খুললেও বিকেলে ছিল দর্শনার্থীদের চাপ বেশি। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে লালবাগ কেল্লা। ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, কেউ ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আবার কেউ তুলছেন ছবি। কেউ ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদের ছুটি কিংবা বিশেষ দিনে লালবাগ কেল্লায় প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ হাজার দর্শনার্থী আসে। রাজধানীর পোস্তা থেকে ছেলেমেয়েসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে আসা শাহিনুর আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, প্রায় বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে যাই। ঈদের সময়ও আসি ঘুরতে। রাজধানীর পুরান ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থেকে আসা মো. শামীম শেখ বলেন, পুরান ঢাকায় থাকলেও এবার এই প্রথম লালবাগ কেল্লা দেখতে আসলাম। ঈদের ছুটিতে ঘুরে বেড়ানো, একই সঙ্গে ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার জন্য এখানে এসেছি। যাত্রাবাড়ী থেকে আসা মো. আল-আমিন বলেন, ঢাকায় সময় ব্যয় করার জন্য খোলা জায়গা তেমন নেই। তাই ঈদের ছুটিতে লালবাগ কেল্লায় আসা। এদিকে প্রচ- গরমে আবার অনেকে কাহিল। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে আসা এমনই একজন নাঈমা ইসলাম রুমা। তিনি বলেন, অনেক বড় জায়গা। রোদের মধ্যে বাচ্চাদের নিয়ে হাটা একটু কষ্টকর। তাই বসে বিশ্রাম নিচ্ছি।
জিঞ্জিরা থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা মো. জাবেদ বলেন, রোদে আধা ঘণ্টা ঘুরার পরই অনেকটা ক্লান্ত হয়ে পরি। তাই স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ছায়ার মধ্যে বসে আছি। লালবাগ কেল্লার কর্মকর্তারা জানান, ঈদ উপলক্ষে দর্শনার্থীদের চাপ বেশি থাকে। বিকেলে সেই চাপটা বেশি হয়। বাড়তি নিরাপত্তার জন্য পুলিশসহ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

লালবাগ কেল্লা ও জাতীয় জাদুঘরে দর্শনার্থীর ভিড়

আপডেট সময় : ০১:২৩:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ জুলাই ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : দর্শনার্থীর ভিড় বেড়েছে রাজধানীর ঐতিহাসিক লালবাগ কেল্লা ও শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরে। সরকার ঘোষিত ঈদের ছুটি শেষ হলেও জাদুঘর এলাকায় এখনো ছুটির আমেজ। কেউ এসেছেন পরিবার নিয়ে আবার কেউ বন্ধুবান্ধব নিয়ে ঘুরতে এসেছেন এখানে। গতকাল বুধবার জাতীয় জাদুঘরের সামনে গিয়ে দেখা যায়, টিকিট কাউন্টারে দীর্ঘ লাইন। ছোট থেকে বড় সব বয়সী মানুষ ভিড় করছে এখানে। লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করার ঝমেলা এড়াতে অনেকে বাসা থেকে অনলাইনে টিকিট কেটে এসেছেন। আবার অনেকে জাদুঘরের প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে তাৎক্ষণিক টিকিট কেটে প্রবেশ করছেন।
অনলাইনে টিকিট কেটে পরিবার নিয়ে জাদুঘরে প্রবেশ করেন রিয়াজ উদ্দিন। তার সঙ্গে আছে দুই সন্তান, স্ত্রী ও দুই বোন। অনলাইনে টিকিট কেটে প্রবেশ করেন তিনি। তিনি বলেন, ঈদ গ্রামে করেছি। মঙ্গলবার রাতেই ঢাকা ফিরেছি। দেখলাম এখনো রাস্তাঘাট ফাঁকা । তাই ভাবলাম সবাইকে নিয়ে একটু ঘুরে আসি। জাদুঘর আমাদের ঐতিহ্য। এখানে আসলে গ্রাম বাংলার অনেক হারিয়ে যাওয়া বিষয় ও ইতিহাসের সঙ্গে সন্তানদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া যায়। ঢাকায়ই ঈদ করেছেন মোসলেম উদ্দিন। ছোট সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে এসেছেন জাদুঘরে ঘুরতে। তিনি বলেন, যেহেতু ঈদ রাজধানীতেই করেছি তাই এখানে আসলাম। খিলগাঁও এলাকা থেকে রাসেল ও রবিউল দুই বন্ধু ঘুরতে এসেছেন জাদুঘরে। রাসেল বলেন, জাদুঘরে আমরা এর আগেও এসেছি। মাত্র ২০ টাকায় অনেক কিছু দেখা যায়। প্রত্যেক দর্শনার্থীকে তল্লাশি করে প্রবেশ করাচ্ছেন জাদুঘরের প্রধান ফটকের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আল-আমিন। তিনি বলেন, অনলাইনে টিকিট কাটা থাকলে সরাসরি ভেতরে প্রবেশ করা যায়। সরাসরি টিকিট কেটে সিরিয়াল ধরে প্রবেশ করতে হচ্ছে। অনেকেই গেটের সামনে থেকেই টিকিট কেটে প্রবেশ করছেন। কেমন দর্শনার্থী আসছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঈদের ছুটি শেষ হলেও ভালোই লোকজন আসছে। দুপুরের পর আরও বাড়ে। সপ্তাহে শনি থেকে বুধবার পর্যন্ত সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে জাদুঘর। বৃহস্পতিবার ছুটির দিন। শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখা হয়। এছাড়া ঈদের ছুটিতে কোনো শিডিউল পরিবর্তন করেনি জাদুঘর কর্তৃপক্ষ।
লালবাগ কেল্লায় দর্শনার্থীর ভিড় : ঈদুল আজহার চতুর্থ দিনেও পুরান ঢাকার লালবাগ কেল্লায় দেখা গেছে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধসহ সব বয়সী মানুষ এসেছেন ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে। কেউ ছেলে-মেয়ে, কেউ স্ত্রী কিংবা বন্ধুবান্ধবসহ পরিবারের লোকজন নিয়ে ঘুরছেন।
গতকাল বুধবার বিকেলে লালবাগ কেল্লায় গিয়ে এমনটি দেখা যায়। সকাল ১০টা থেকে কেল্লা খুললেও বিকেলে ছিল দর্শনার্থীদের চাপ বেশি। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে লালবাগ কেল্লা। ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, কেউ ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আবার কেউ তুলছেন ছবি। কেউ ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদের ছুটি কিংবা বিশেষ দিনে লালবাগ কেল্লায় প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ হাজার দর্শনার্থী আসে। রাজধানীর পোস্তা থেকে ছেলেমেয়েসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে আসা শাহিনুর আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, প্রায় বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে যাই। ঈদের সময়ও আসি ঘুরতে। রাজধানীর পুরান ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থেকে আসা মো. শামীম শেখ বলেন, পুরান ঢাকায় থাকলেও এবার এই প্রথম লালবাগ কেল্লা দেখতে আসলাম। ঈদের ছুটিতে ঘুরে বেড়ানো, একই সঙ্গে ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার জন্য এখানে এসেছি। যাত্রাবাড়ী থেকে আসা মো. আল-আমিন বলেন, ঢাকায় সময় ব্যয় করার জন্য খোলা জায়গা তেমন নেই। তাই ঈদের ছুটিতে লালবাগ কেল্লায় আসা। এদিকে প্রচ- গরমে আবার অনেকে কাহিল। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে আসা এমনই একজন নাঈমা ইসলাম রুমা। তিনি বলেন, অনেক বড় জায়গা। রোদের মধ্যে বাচ্চাদের নিয়ে হাটা একটু কষ্টকর। তাই বসে বিশ্রাম নিচ্ছি।
জিঞ্জিরা থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা মো. জাবেদ বলেন, রোদে আধা ঘণ্টা ঘুরার পরই অনেকটা ক্লান্ত হয়ে পরি। তাই স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ছায়ার মধ্যে বসে আছি। লালবাগ কেল্লার কর্মকর্তারা জানান, ঈদ উপলক্ষে দর্শনার্থীদের চাপ বেশি থাকে। বিকেলে সেই চাপটা বেশি হয়। বাড়তি নিরাপত্তার জন্য পুলিশসহ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।