বিনোদন প্রতিবেদক : করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কারণে ‘বঙ্গবন্ধু’ চলচ্চিত্রের শুটিংয়ে অংশ নিতে পারেননি রিয়াজ, এত দিন এমনটাই জানতেন সবাই। আজ জানা গেল, এই তথ্য আংশিক সত্য। মুম্বাইয়ে দুই দফা শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন রিয়াজ, প্রথম দফায় গত ৫ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি, দ্বিতীয় দফায় ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত। তবে তৃতীয় দফায় ৩১ মার্চ মুম্বাইয়ে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। এর ঠিক দুই দিন আগেই জানতে পারেন, তিনি কোভিড–১৯ পজিটিভ। ফলে আর যাওয়া সম্ভব হয়নি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে ‘বঙ্গবন্ধু’র শুটিংয়ে অংশ নেওয়ার খবরটি প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমকে জানান তিনি।
‘বঙ্গবন্ধু’ ছবিতে তাজউদ্দীন আহমেদের চরিত্রটি করছেন রিয়াজ। শুরুতে চরিত্রটি করার কথা ছিল ফেরদৌসের। কিন্তু ভারতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় শেষ পর্যন্ত আর কাজটি করার সুযোগ হয়নি। মুম্বাইয়ে ‘বঙ্গবন্ধু’ চলচ্চিত্রে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা বেশ সুখকর ছিল বলে জানান রিয়াজ। তিনি বলেন, কাজের পুরো সিস্টেম তো অসাধারণ লেগেছে। একসঙ্গে ১২০০ শিল্পী নিয়েও দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে, তবে পরিবেশ ছিল খুবই সুশৃঙ্খল। শিল্পীর কলটাইম মানে কলটাইম, এক সেকেন্ডের এদিক-সেদিক নেই।
ভারতীয় কলাকুশলীদের সঙ্গে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা রিয়াজের আগেও আছে। তবে এবারের পরিবেশ ভিন্ন, পরিসরও অনেক বড়। তাই তো বাংলাদেশ এবং ভারতের শুটিংয়ের মধ্যে কিছু পার্থক্য চোখে পড়েছে। রিয়াজ বলেন, ‘প্রথম পার্থক্য মনে হয়েছে, আমরা বড় করে চিন্তা করতে পারি না। বাজেটও এখানে বড় ফ্যাক্টর। অভ্যস্ত না থাকায় আবার বাজেট দিলেও ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারে না। কনফিউজড হয়ে যায়। আমার কাছে তো পুরো শুটিং সময় অন্য রকম অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ ছিল। তাঁরা পরিষ্কার জানেন, তাঁরা কী করতে চান। সবকিছুই আগে থেকেই সেট করা, প্ল্যান অনুযায়ী করেছেন। চলচ্চিত্রের প্রতিটি বিভাগের মধ্যে যে অসাধারণ সমন্বয়, তা থেকেও অনেক কিছু শেখার আছে। পেশাদার ইউনিট, পেশাদারভাবেই কাজ করে।’
আর ‘বঙ্গবন্ধু’ চলচ্চিত্রের পরিচালক শ্যাম বেনেগালের সঙ্গে কাজ করা সম্পর্কে রিয়াজ জানান, ‘পরিচালক নিয়ে তো কিছু বলার নেই, অসাধারণ সব সিনেমা নির্মাণ করেছেন তিনি। আমরা তাঁর পরিচালনায় কাজ করতে পেরে ভীষণ আনন্দিত। এই পরিচালকের নিজস্ব স্টাইল আছে। তিনি তাঁর স্টাইলে যা দরকার, সবার কাছ থেকে তা–ই আদায় করে নিচ্ছেন। তাঁকে যাঁরা সহযোগিতা করছেন, তাঁরাও বেশ সংগঠিত। এত বয়স হয়েছে, তারপরও কাজের স্ট্যামিনা মারাত্মক। এই বয়সেও খুব সকালে ওঠেন। দেখতে বয়স হয়েছে মনে হলেও, কাজের সময় তিনি টগবগে তরুণ। আমরা সব সময় জেনে এসেছি, ডিরেক্টর ইজ দ্য ক্যাপ্টেন অব দ্য শিপ। বাংলাদেশে এটা অনেক ক্ষেত্রে মনে হয় না। ওখানে কাজ করতে গিয়ে মনে হয়েছে, সত্যিকারের ক্যাপ্টেনের সঙ্গে কাজ করছি।’
‘বঙ্গবন্ধু’ চলচ্চিত্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র তাজউদ্দীন। তাই এই চরিত্রের জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। রিয়াজ বলেন, ‘আমি তো আমার কাজ করার বিষয়টা সবার পরে জানতে পেরেছি। তাই সময়ও পেয়েছি কম। এরপরও যা সময় পেয়েছি, প্রস্তুতি নিয়েছি। তাঁর কিছু ভিডিও দেখেছি। বই পড়ে জেনেছি। যতটুকু করা দরকার করেছি। বাকিটা পরিচালক যেভাবে বলেছেন, সেভাবেই কাজ করে গেছি। তাঁর নির্দেশনা অনুসরণ করে গেছি।’
এ বছরের যেকোনো একসময় আবার বাংলাদেশ অংশের শুটিংয়ে অংশ নেবেন রিয়াজ। তবে এখনো শুটিংয়ের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি। নীরবেই কাজ করার প্রসঙ্গ উঠতেই রিয়াজ বলেন, ‘আমি নীরবে কাজ করতেই ভালোবাসি। তা ছাড়া প্রচার করার দায়িত্ব আমার নয়। একটা দল আছে, দুই দেশের সরকার জড়িত আছে। আমি আবার নন–ডিসক্লোজার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছি। আমাকে সেই চুক্তির প্রতিও তো সম্মান দেখাতে হবে। তাই এসব নিয়ে নিজে থেকেও কোনো কথা বলতে চাইনি।’
নীরবেই ‘বঙ্গবন্ধু’ চলচ্চিত্রের শুটিং করলেন রিয়াজ
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ