প্ত্যশা ডেস্ক : ব্র্যাকের কর্মসূচিতে যুক্তরাজ্য সরকারের তহবিল হ্রাসের সিদ্ধান্ত ‘বিপর্যয় ডেকে আনবে’ বলে মনে করছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা।
গার্ডিয়ানে সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, এমন আচমক তহবিল কমিয়ে দেওয়া ছিল ‘সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত’।
“এটা পেটে ঘুষি মারার মত। আমরা ভাবতেও পারিনি তারা পুরো অংশীদারিত্ব তুলে নেবে। পাঁচ বছরে ২০ কোটি পাউন্ড তহবিলের প্রতিশ্রুতি থেকে একদম কিচ্ছু না! কোথাও ভুল হচ্ছে।”
আসিফ সালেহ বলেন, যুক্তরাজ্য সরকার সহায়তা তুলে নেওয়ায় লাখ লাখ মেয়ে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে, পরিবার পরিকল্পনায় থাকবে না লাখ লাখ নারী। কোনো সহায়তা পাবে না চরম দারিদ্র্যে থাকা কয়েক লাখ মানুষ।
তহবিল না থাকায় মাত্র ৯০ দিনের নোটিসে বেশ কিছু কর্মসূচি বন্ধ করে দিতে হচ্ছে জানিয়ে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক গার্ডিয়ানকে বলেন, “আমরা এই ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করছি, কোভিডের কারণে আমাদের চিকিৎসা কর্মসূচি চলমান আছে।
“অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসূচি, শিক্ষা কর্মসূচিতে কাটছাঁট করা হয়েছে। ৃ যখন আমি স্কুল চালু করতে পারব না, যখন বাল্যবিয়ে কমানোর কর্মসূচি বন্ধ করে দিতে হবে, সেটা হবে ওই মানুষগুলোর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।”
আগামী পাঁচ বছরে মেয়েদের শিক্ষায় ৯০টি দেশে যুক্তরাজ্য সরকারের ৪৩ কোটি পাউন্ড খরচ করার ঘোষণা দেওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সেখান থেকে ২০ কোটি পাউন্ড কমিয়ে ফেলার ঘটনায় এমন প্রতিক্রিয়া জানান সালেহ। বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কর্মসূচি চালিয়ে আসছে ব্র্যাক। এক কোটি ২০ লাখ শিশু তাদের শিক্ষাকার্যক্রমের আওতায় লেখাপড়া করেছে।
আসিফ সালেহ বলেন “এমন হঠাৎ করে তহবিল তুলে নেওয়া ভুল বার্তা দেয়। বৈশ্বিক উন্নয়নের চালিকাশক্তি হয়ে ওঠার আশ্চর্যজনক সুনাম যুক্তরাজ্যের ঝেড়ে ফেলা উচিত নয়। যুক্তরাজ্য অনেক বড় বন্ধু। এক্ষেত্রে আরও চিন্তাভাবনা করা প্রয়োজন। এখানে অনেক মানুষের জীবন জড়িত।”
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সেইভ দ্য চিলড্রেনের হিসাব বলছে, যুক্তরাজ্য সরকার ২০১৯-২০ সালের তুলনায় ২০২১-২১ সালে শিক্ষাখাতে সহায়তা ৩৬ শতাংশ কমিয়ে ৮২ কোটি ১০ লাখ পাউন্ড থেকে ৫২ কোটি ৮০ লাখে নামিয়ে এনেছে ।
এভাবে তহবিল কমিয়ে ফেলাকে ‘নিষ্ঠুরতা’হিসেবে বর্ণনা করেছেন শিশুদের নিয়ে বিশ্বব্যাপী কাজ করা দাতব্য প্রতিষ্ঠান ‘দেয়ারওয়ার্ল্ড’ এর প্রধান সারা ব্রাউন। গার্ডিয়ান লিখেছে, বিষয়টি নিয়ে তারা যুক্তরাজ্য সরকারের ফরেইন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কারও বক্তব্য পায়নি।
যুক্তরাজ্যের তহবিল কমানোর সিদ্ধান্ত বিপর্যয়কর: ব্র্যাক
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ