ঢাকা ০৭:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫

কৌতূহলী শিশুর বিজ্ঞান পাঠ

  • আপডেট সময় : ১১:১৯:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ জুন ২০২২
  • ১০৯ বার পড়া হয়েছে

মো. ইয়াকুব আলী : বই: টুটুম জানতে চায় মেঘের কথা, লেখক: চমক হাসান ও ফিরোজা বহ্নি, অলঙ্করণ: সমীরণ বর্মণ, প্রকাশনী: আদর্শ প্রকাশনী, প্রথম প্রকাশ: একুশে বইমেলা-২০২২, পৃষ্ঠা: ২৪, গায়ের মূল্য: ২০০ টাকা
টুটুম জানালার পাশে বসে মেঘ দেখছে। মেঘের রং বদলায়, মেঘ থেকে আবার বৃষ্টিও পড়ে!
আকাশের মেঘগুলো কে উড়িয়ে দেয়? আকাশের দিকে তাকিয়ে টুটুম ভাবে, টুটুম মায়ের কাছে যায়। মা রান্না করছে। টুটুম জানতে চায়- মা, মেঘের ভেতর কী থাকে?
মা বলে, এত্তগুলো ছোট ছোট পানি।
টুটুম অবাক হয়ে বলে – কয়টা পানি?
অনেক পানি।
ওমা! এত পানি আকাশে কে উড়িয়ে দেয় মা?
চুলায় পানি ফুটছে। তাই দেখিয়ে মা বলে, দেখো পানির কণার যখন অনেক গরম লাগে ওরা আর একসাথে জড়াজড়ি করে থাকতে চায় না। ছুটোছুটি করে, উড়ে যেতে চায়। একসময় এমন হালকা হয়ে যায় যে বেলুনের মতো ভেসে ভেসে আকাশের দিকে চলে যায়। ওরে বাবারে আমি থাকব না, গেলাম রে দূরে সর, গরম লাগছে!
‘টুটুম জানতে চায় মেঘের কথা’ বইটা হাতে পেয়েই এক বসায় পড়ে শেষ করে ফেললাম। ভেতরে ছবি আছে এমন বই শিশুদের সবসময়ই প্রিয়। শিশুরা সবকিছুর আগে ছবিগুলো দেখে আর ছবির শিরোনামগুলো পড়ে। তারপর পুরো বইটা পড়ে। অবশ্য এই পেপারব্যাক বইয়ের প্রত্যেকটা পাতাতেই চমৎকার সব ছবি আছে।
সহজ কথায় এ গল্পটাতে ‘পানিচক্র’ বুঝানো হয়েছে, যেটাকে বলে ‘জলবৎ তরলং’। এতো মধুর ভাষায় বর্ণনা করা হয়েছে যে শিশুরা অনেক আনন্দ নিয়ে পড়বে বলেই আমার বিশ্বাস। লেখার ফন্টও দুর্দান্ত। দেখলে মনে হয় পুরো বইটা হাতে লেখা। আর ছবিগুলো খুবই মায়াবী। পানির কণাগুলো দেখে কেন জানি ভালোবেসে ফেলতে হয়। আর টুটুম নামটাও খুব সুন্দর। বইয়ের একেবারে শেষে বাবা-মায়েদের জন্য একটা নোট আছে। সেখানে বলা আছে- কীভাবে শিশুদের আরও জানতে ইচ্ছে করলে সেটাকে নিবৃত করতে হবে। আনন্দ নিয়ে কোনকিছু পড়লে বা শুনলে সেটা আমরা সারা জীবন মনে রাখি। তাই আমরা একেবারে ছোটবেলায় দাদা-দাদি, নানা-নানির কাছে শোনা রূপকথা কখনও ভুলি না। তেমনি ভুলি না গল্পের বইয়ের চরিত্রগুলো। বইটি সম্পর্কে লেখক ফিরোজা বহ্নি বলেন, “যখন কোনকিছু নিয়ে শিশুরা প্রশ্ন করে তখন তাকে ‘বড় হলে জানতে পারবে’ বলা কিংবা তাকে যেনতেন কিছু একটা বলে দেওয়ার পক্ষে আমি কিংবা চমক হাসান নই। বরং যদি বয়স অনুযায়ী তাকে সে বিষয়টার হালকা ধারণা দেওয়া যায়- সেটাই আমার কাছে যুক্তিযুক্ত প্রয়াস মনে হয়। আমাদের মেয়ে বর্ণমালাকেও আমি বা আমরা সেভাবেই অনেককিছু শেখাই। বর্ণমালার বন্ধুদেরও শেখাই। দেখি, শিশুরারা খুব সুন্দর শিখে নেয়!”
চমক হাসান আর তার স্ত্রী ফিরোজা বহ্নি দুজন মিলে শিশুদের বইয়ের একটা সিরিজ লেখার পরিকল্পনা করছিলেন বহুদিন ধরে। সিরিজের নাম হবে ‘টুটুম জানতে চায়’। টুটুম খুব কৌতূহলী একটা শিশু, তার মা তাকে গল্পে গল্পে জ্ঞান-বিজ্ঞানের জিনিসপত্র বোঝায়। সেই সিরিজের প্রথম বই ‘টুটুম জানতে চায় মেঘের কথা’। এটা চমক হাসান আর ফিরোজা বহ্নির একসঙ্গে লেখা প্রথম বই। তাদের এই সিরিজ বিজ্ঞানের বিষয়গুলো শিশু-কিশোরদের উপযোগী করে তুলবে বলে আমার বিশ্বাস। শিশুরা অনেক আনন্দ নিয়ে বিজ্ঞানের খটমট বিষয়গুলো পানি খাওয়ার মতো করে সহজে পড়ে ফেলবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কৌতূহলী শিশুর বিজ্ঞান পাঠ

আপডেট সময় : ১১:১৯:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ জুন ২০২২

মো. ইয়াকুব আলী : বই: টুটুম জানতে চায় মেঘের কথা, লেখক: চমক হাসান ও ফিরোজা বহ্নি, অলঙ্করণ: সমীরণ বর্মণ, প্রকাশনী: আদর্শ প্রকাশনী, প্রথম প্রকাশ: একুশে বইমেলা-২০২২, পৃষ্ঠা: ২৪, গায়ের মূল্য: ২০০ টাকা
টুটুম জানালার পাশে বসে মেঘ দেখছে। মেঘের রং বদলায়, মেঘ থেকে আবার বৃষ্টিও পড়ে!
আকাশের মেঘগুলো কে উড়িয়ে দেয়? আকাশের দিকে তাকিয়ে টুটুম ভাবে, টুটুম মায়ের কাছে যায়। মা রান্না করছে। টুটুম জানতে চায়- মা, মেঘের ভেতর কী থাকে?
মা বলে, এত্তগুলো ছোট ছোট পানি।
টুটুম অবাক হয়ে বলে – কয়টা পানি?
অনেক পানি।
ওমা! এত পানি আকাশে কে উড়িয়ে দেয় মা?
চুলায় পানি ফুটছে। তাই দেখিয়ে মা বলে, দেখো পানির কণার যখন অনেক গরম লাগে ওরা আর একসাথে জড়াজড়ি করে থাকতে চায় না। ছুটোছুটি করে, উড়ে যেতে চায়। একসময় এমন হালকা হয়ে যায় যে বেলুনের মতো ভেসে ভেসে আকাশের দিকে চলে যায়। ওরে বাবারে আমি থাকব না, গেলাম রে দূরে সর, গরম লাগছে!
‘টুটুম জানতে চায় মেঘের কথা’ বইটা হাতে পেয়েই এক বসায় পড়ে শেষ করে ফেললাম। ভেতরে ছবি আছে এমন বই শিশুদের সবসময়ই প্রিয়। শিশুরা সবকিছুর আগে ছবিগুলো দেখে আর ছবির শিরোনামগুলো পড়ে। তারপর পুরো বইটা পড়ে। অবশ্য এই পেপারব্যাক বইয়ের প্রত্যেকটা পাতাতেই চমৎকার সব ছবি আছে।
সহজ কথায় এ গল্পটাতে ‘পানিচক্র’ বুঝানো হয়েছে, যেটাকে বলে ‘জলবৎ তরলং’। এতো মধুর ভাষায় বর্ণনা করা হয়েছে যে শিশুরা অনেক আনন্দ নিয়ে পড়বে বলেই আমার বিশ্বাস। লেখার ফন্টও দুর্দান্ত। দেখলে মনে হয় পুরো বইটা হাতে লেখা। আর ছবিগুলো খুবই মায়াবী। পানির কণাগুলো দেখে কেন জানি ভালোবেসে ফেলতে হয়। আর টুটুম নামটাও খুব সুন্দর। বইয়ের একেবারে শেষে বাবা-মায়েদের জন্য একটা নোট আছে। সেখানে বলা আছে- কীভাবে শিশুদের আরও জানতে ইচ্ছে করলে সেটাকে নিবৃত করতে হবে। আনন্দ নিয়ে কোনকিছু পড়লে বা শুনলে সেটা আমরা সারা জীবন মনে রাখি। তাই আমরা একেবারে ছোটবেলায় দাদা-দাদি, নানা-নানির কাছে শোনা রূপকথা কখনও ভুলি না। তেমনি ভুলি না গল্পের বইয়ের চরিত্রগুলো। বইটি সম্পর্কে লেখক ফিরোজা বহ্নি বলেন, “যখন কোনকিছু নিয়ে শিশুরা প্রশ্ন করে তখন তাকে ‘বড় হলে জানতে পারবে’ বলা কিংবা তাকে যেনতেন কিছু একটা বলে দেওয়ার পক্ষে আমি কিংবা চমক হাসান নই। বরং যদি বয়স অনুযায়ী তাকে সে বিষয়টার হালকা ধারণা দেওয়া যায়- সেটাই আমার কাছে যুক্তিযুক্ত প্রয়াস মনে হয়। আমাদের মেয়ে বর্ণমালাকেও আমি বা আমরা সেভাবেই অনেককিছু শেখাই। বর্ণমালার বন্ধুদেরও শেখাই। দেখি, শিশুরারা খুব সুন্দর শিখে নেয়!”
চমক হাসান আর তার স্ত্রী ফিরোজা বহ্নি দুজন মিলে শিশুদের বইয়ের একটা সিরিজ লেখার পরিকল্পনা করছিলেন বহুদিন ধরে। সিরিজের নাম হবে ‘টুটুম জানতে চায়’। টুটুম খুব কৌতূহলী একটা শিশু, তার মা তাকে গল্পে গল্পে জ্ঞান-বিজ্ঞানের জিনিসপত্র বোঝায়। সেই সিরিজের প্রথম বই ‘টুটুম জানতে চায় মেঘের কথা’। এটা চমক হাসান আর ফিরোজা বহ্নির একসঙ্গে লেখা প্রথম বই। তাদের এই সিরিজ বিজ্ঞানের বিষয়গুলো শিশু-কিশোরদের উপযোগী করে তুলবে বলে আমার বিশ্বাস। শিশুরা অনেক আনন্দ নিয়ে বিজ্ঞানের খটমট বিষয়গুলো পানি খাওয়ার মতো করে সহজে পড়ে ফেলবে।