ঢাকা ০৭:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

দেড় লাখ টাকা চুক্তিতে ফাঁস হয় প্রাথমিকে নিয়োগের প্রশ্নপত্র

  • আপডেট সময় : ০১:৪৩:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ মে ২০২২
  • ৯০ বার পড়া হয়েছে

রাজবাড়ী প্রতিনিধি : দেড় লাখ টাকার চুক্তিতে প্রাথমিকে নিয়োগের প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা স্বীকার করেছেন রাজবাড়ীর ডা. আবুল হোসেন কলেজের সহকারী অধ্যাপক মতিয়র রহমান হিমেল (৪৬)। গত বৃহস্পতিবার (২৬ মে) রাজবাড়ী আদালতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমন হোসেনের কাছে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। এর আগে বুধবার (২৫ মে) দিবাগত রাতে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার জালিয়াতি চক্রের মামলায় ডিবির একটি দল শিক্ষক মতিয়র রহমান হিমেল ও একই কলেজের অফিস সহকারী জাবেদ আলীকে (৪০) গ্রেফতার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজবাড়ী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি প্রাণবন্ধু বিশ্বাস।
গ্রেফতার মতিয়র রহমান হিমেল বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে। এছাড়া জাবেদ আলী রাজবাড়ী শহরের আটাশকলোনি এলাকার মৃত কুতুবউদ্দিনের ছেলে। ডিবির ওসি বলেন, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে শিক্ষক মতিয়র রহমান হিমেল জানিয়েছেন, গত ২০ মে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় গ্রেফতার মাঈনুল ইসলাম হাওলাদার পরীক্ষার কয়েক দিন আগে থেকেই তাকে দেড় লাখ টাকার চুক্তিতে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেওয়ার প্রস্তাব দেন। পরে শিক্ষক মতিয়র তাতে রাজি হলে পরীক্ষার আগের দিন ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। বাকি এক লাখ টাকা প্রশ্ন হাতে পাওয়ার পর দেওয়ার চুক্তি হয়। টাকা পাওয়ার পর হিমেল কলেজর অফিস সহকারী জাবেদকে নিয়ে প্রশ্নফাঁসের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী জাবেদ পরীক্ষা শুরুর ২০ মিনিট পর প্রশ্নপত্র প্রশাসনিক ভবনের বাথরুমে রেখে আসেন। পরে শিক্ষক মতিয়র প্রশ্ন নিয়ে কলেজ গেটের সামনে অপেক্ষমাণ মাঈনুল ইসলামকে দিয়ে দেন।
এদিকে রাজবাড়ী পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান বলেন, ইতোমধ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের মোট ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও যারা জড়িত, তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় গত ২০ মে শহরের দক্ষিণ ভবানীপুর গ্রামের মিজানুরের বাড়ি থেকে ১৩ জনকে আটক করে ডিবি পুলিশ। আটকরা হলেন, ইব্রাহীম হোসেন, সাগর আহম্মেদ, বিজয় বালা, মো. নুরুল হক হাওলাদার, মো. হারুন সরদার, রেজাউল করিম, আবু সালাম, মুনছুর ম-ল, রুবেল মাহমুদ, মিজানুর রহমান, রুমান হাসান, মাইনুল ইসলাম ও ফরিদা বেগম। আটকদের মধ্যে পাঁচ জন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকও রয়েছেন। তাদের কাছ থেকে ২০টি সেলফোন, দুটি মাস্টারকার্ডের মতো ডিভাইস (সিমসহ), দুটি হেডফোন, আড়িপাতা ডিভাইসের ছয়টি ব্যাটারি, পুরনো একটি মডেম, ১০ হাজার টাকা, পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের হাতে লেখা উত্তর, পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্রের ফটোকপি, বিভিন্ন গাইড বই, সোনালী ব্যাংকের একটি ভিসা ডেবিট কার্ড, ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেডের একটি ডেবিট কার্ড এবং দুটি স্যামসাং পাওয়ার ব্যাংক উদ্ধার করা হয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দেড় লাখ টাকা চুক্তিতে ফাঁস হয় প্রাথমিকে নিয়োগের প্রশ্নপত্র

আপডেট সময় : ০১:৪৩:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ মে ২০২২

রাজবাড়ী প্রতিনিধি : দেড় লাখ টাকার চুক্তিতে প্রাথমিকে নিয়োগের প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা স্বীকার করেছেন রাজবাড়ীর ডা. আবুল হোসেন কলেজের সহকারী অধ্যাপক মতিয়র রহমান হিমেল (৪৬)। গত বৃহস্পতিবার (২৬ মে) রাজবাড়ী আদালতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমন হোসেনের কাছে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। এর আগে বুধবার (২৫ মে) দিবাগত রাতে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার জালিয়াতি চক্রের মামলায় ডিবির একটি দল শিক্ষক মতিয়র রহমান হিমেল ও একই কলেজের অফিস সহকারী জাবেদ আলীকে (৪০) গ্রেফতার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজবাড়ী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি প্রাণবন্ধু বিশ্বাস।
গ্রেফতার মতিয়র রহমান হিমেল বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে। এছাড়া জাবেদ আলী রাজবাড়ী শহরের আটাশকলোনি এলাকার মৃত কুতুবউদ্দিনের ছেলে। ডিবির ওসি বলেন, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে শিক্ষক মতিয়র রহমান হিমেল জানিয়েছেন, গত ২০ মে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় গ্রেফতার মাঈনুল ইসলাম হাওলাদার পরীক্ষার কয়েক দিন আগে থেকেই তাকে দেড় লাখ টাকার চুক্তিতে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেওয়ার প্রস্তাব দেন। পরে শিক্ষক মতিয়র তাতে রাজি হলে পরীক্ষার আগের দিন ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। বাকি এক লাখ টাকা প্রশ্ন হাতে পাওয়ার পর দেওয়ার চুক্তি হয়। টাকা পাওয়ার পর হিমেল কলেজর অফিস সহকারী জাবেদকে নিয়ে প্রশ্নফাঁসের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী জাবেদ পরীক্ষা শুরুর ২০ মিনিট পর প্রশ্নপত্র প্রশাসনিক ভবনের বাথরুমে রেখে আসেন। পরে শিক্ষক মতিয়র প্রশ্ন নিয়ে কলেজ গেটের সামনে অপেক্ষমাণ মাঈনুল ইসলামকে দিয়ে দেন।
এদিকে রাজবাড়ী পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান বলেন, ইতোমধ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের মোট ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও যারা জড়িত, তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় গত ২০ মে শহরের দক্ষিণ ভবানীপুর গ্রামের মিজানুরের বাড়ি থেকে ১৩ জনকে আটক করে ডিবি পুলিশ। আটকরা হলেন, ইব্রাহীম হোসেন, সাগর আহম্মেদ, বিজয় বালা, মো. নুরুল হক হাওলাদার, মো. হারুন সরদার, রেজাউল করিম, আবু সালাম, মুনছুর ম-ল, রুবেল মাহমুদ, মিজানুর রহমান, রুমান হাসান, মাইনুল ইসলাম ও ফরিদা বেগম। আটকদের মধ্যে পাঁচ জন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকও রয়েছেন। তাদের কাছ থেকে ২০টি সেলফোন, দুটি মাস্টারকার্ডের মতো ডিভাইস (সিমসহ), দুটি হেডফোন, আড়িপাতা ডিভাইসের ছয়টি ব্যাটারি, পুরনো একটি মডেম, ১০ হাজার টাকা, পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের হাতে লেখা উত্তর, পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্রের ফটোকপি, বিভিন্ন গাইড বই, সোনালী ব্যাংকের একটি ভিসা ডেবিট কার্ড, ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেডের একটি ডেবিট কার্ড এবং দুটি স্যামসাং পাওয়ার ব্যাংক উদ্ধার করা হয়।