ঢাকা ০১:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

প্রবেশপত্র, প্রশ্নপত্র, নিয়োগপত্র সবই ভুয়া, গ্রেপ্তার ২

  • আপডেট সময় : ০২:১২:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ মে ২০২২
  • ৮৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি দেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের দুইজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।
গত সোমবার রাতে রাজধানীর দারুস সালাম থানার আনন্দনগর এলাকা থেকে মোশারফ হোসেন ও জিয়া উদ্দিন নামের দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছে বিভিন্ন প্রশ্নপত্র, প্রবেশপত্র ও নিয়োগপত্র জব্দ করা হয়েছে, যার সবই ভুয়া।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মিন্টো রোডে গোয়েন্দা কার্যালয়ে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ জানান, গত ১৫ মে বনানী থানায় একটি মামলা করে এক ভুক্তভোগী। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তির সহায়তায় আনন্দনগর এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
“প্রতারক চক্রটি বিভিন্ন দপ্তরের বিভিন্ন পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলো তাদের সংগ্রহে রাখে। পরে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে সাধারণ চাকরিপ্রার্থী ও তাদের অভিভাবকদের কাছে নিজেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেয় এবং বিভিন্ন পদে চাকরি পাইয়ে দিবে বলে আশ্বস্ত করে।”
গ্রেপ্তারদের প্রতারণা সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ তারেক জানান, প্রতারকরা প্রথমে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে ই-মেইলের মাধ্যমে চাকরিপ্রত্যাশীর জীবনবৃত্তান্ত, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, স্বাক্ষরের স্ক্যান কপি ও অন্যান্য সকল ডকুমেন্ট ইত্যাদি সংগ্রহ করে। পরে ওই তথ্যের মাধ্যমে একটি ভুয়া প্রবেশপত্র তৈরি করে প্রার্থীর ইমেইলে পাঠাত। এরপর বিকাশ বা রকেটের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করে প্রার্থী ‘ভাইভা’র জন্য মনোনীত হয়েছে বলে জানানো হতো। পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, “কিছুদিন পরে ভুয়া নিবন্ধিত সিম কার্ডের মাধ্যমে অপর এক ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে পুনরায় কল করে মেডিকেল ও অন্যান্য খরচ বাবদ কিছু টাকা বিকাশ বা রকেটের মাধ্যমে দিতে বলে।”
টাকা পাওয়ার পর চক্রটি ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করত উল্লেখ করে উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ তারেক জানান, ‘কিউআর কোড জেনারেটর’ সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রার্থীর নাম ঠিকানা সম্বলিত একটি ‘কিউআর কোড’ তৈরি করে তা ওই নিয়োগপত্রে দেওয়া হতো। “প্রার্থীকে বলা হতো যে, ‘কিউআর কোড স্ক্যানার’ দিয়ে আপনার নিয়োগপত্রটি সঠিক কি না যাচাই করুন। প্রার্থী যখন তার মোবাইলের ‘কিউআর কোড স্ক্যানার’ দিয়ে চেক করে, তখন সেখানে নিজের তথ্য দেখায় এবং প্রার্থী চুক্তির সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করেন।”
পরে এই নিয়োগপত্র নিয়ে চাকরিপ্রত্যাশীরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গেলে প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ত জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ তারেক বলেন, এর মধ্যে প্রতারকরা ব্যবহৃত ফোন নম্বরগুলো বন্ধ করে দিত। নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কোনোভাবেই আগে পাওয়ার সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি এমন প্রতারকের সন্ধান পেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্রবেশপত্র, প্রশ্নপত্র, নিয়োগপত্র সবই ভুয়া, গ্রেপ্তার ২

আপডেট সময় : ০২:১২:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ মে ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি দেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের দুইজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।
গত সোমবার রাতে রাজধানীর দারুস সালাম থানার আনন্দনগর এলাকা থেকে মোশারফ হোসেন ও জিয়া উদ্দিন নামের দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছে বিভিন্ন প্রশ্নপত্র, প্রবেশপত্র ও নিয়োগপত্র জব্দ করা হয়েছে, যার সবই ভুয়া।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মিন্টো রোডে গোয়েন্দা কার্যালয়ে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ জানান, গত ১৫ মে বনানী থানায় একটি মামলা করে এক ভুক্তভোগী। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তির সহায়তায় আনন্দনগর এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
“প্রতারক চক্রটি বিভিন্ন দপ্তরের বিভিন্ন পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলো তাদের সংগ্রহে রাখে। পরে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে সাধারণ চাকরিপ্রার্থী ও তাদের অভিভাবকদের কাছে নিজেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেয় এবং বিভিন্ন পদে চাকরি পাইয়ে দিবে বলে আশ্বস্ত করে।”
গ্রেপ্তারদের প্রতারণা সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ তারেক জানান, প্রতারকরা প্রথমে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে ই-মেইলের মাধ্যমে চাকরিপ্রত্যাশীর জীবনবৃত্তান্ত, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, স্বাক্ষরের স্ক্যান কপি ও অন্যান্য সকল ডকুমেন্ট ইত্যাদি সংগ্রহ করে। পরে ওই তথ্যের মাধ্যমে একটি ভুয়া প্রবেশপত্র তৈরি করে প্রার্থীর ইমেইলে পাঠাত। এরপর বিকাশ বা রকেটের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করে প্রার্থী ‘ভাইভা’র জন্য মনোনীত হয়েছে বলে জানানো হতো। পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, “কিছুদিন পরে ভুয়া নিবন্ধিত সিম কার্ডের মাধ্যমে অপর এক ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে পুনরায় কল করে মেডিকেল ও অন্যান্য খরচ বাবদ কিছু টাকা বিকাশ বা রকেটের মাধ্যমে দিতে বলে।”
টাকা পাওয়ার পর চক্রটি ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করত উল্লেখ করে উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ তারেক জানান, ‘কিউআর কোড জেনারেটর’ সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রার্থীর নাম ঠিকানা সম্বলিত একটি ‘কিউআর কোড’ তৈরি করে তা ওই নিয়োগপত্রে দেওয়া হতো। “প্রার্থীকে বলা হতো যে, ‘কিউআর কোড স্ক্যানার’ দিয়ে আপনার নিয়োগপত্রটি সঠিক কি না যাচাই করুন। প্রার্থী যখন তার মোবাইলের ‘কিউআর কোড স্ক্যানার’ দিয়ে চেক করে, তখন সেখানে নিজের তথ্য দেখায় এবং প্রার্থী চুক্তির সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করেন।”
পরে এই নিয়োগপত্র নিয়ে চাকরিপ্রত্যাশীরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গেলে প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ত জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ তারেক বলেন, এর মধ্যে প্রতারকরা ব্যবহৃত ফোন নম্বরগুলো বন্ধ করে দিত। নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কোনোভাবেই আগে পাওয়ার সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি এমন প্রতারকের সন্ধান পেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর পরামর্শ দিয়েছেন।