নিজস্ব প্রতিবেদক : ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচিতে নারী ভোটার বাড়াতে দেশের স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি, বিশেষত নারী জনপ্রতিনিধিদের বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির নির্বাচন সহায়তা শাখার সহকারী সচিব মো. মোশাররফ হোসেন স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা গত বুধবার সব নারী জনপ্রতিধিদের পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়, ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে নারীদের নিবন্ধনের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের, বিশেষত নারী জনপ্রতিনিধিদের (উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান, সিটি/পৌর এলাকার সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর এবং ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের সদস্যসহ সাধারণ আসনের বিপরীতে নির্বাচিত নারী জনপ্রতিনিধিদের) সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। অন্যদিকে বিগত হালানাগাদ কর্মসূচিতে নারী ভোটাদের সাড়া কম পাওয়ার পেছনে আটটি কারণ চিহ্নিত করেছে নির্বাচন। নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ভোটারযোগ্য ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ ও সুপারভাইজার কর্তৃক যাচাই কার্যক্রম ২০ মে ২০২২ থেকে পরবর্তী তিন সপ্তাহ অথবা শুরুর তারিখের পরবর্তী তিন সপ্তাহ ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এতে ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি অথবা তার আগে যাদের জন্ম তাদের এবং বিগত ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে যারা বাদ পড়েছেন, তাদের নিবন্ধনের জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হবে। একইসঙ্গে যাদের জন্ম ০১/০১/২০০৬ ও ০১/০১/২০০৭ তাদেরও নিবন্ধনের জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এছাড়া, এ কর্মসূচিতে ভোটার তালিকা হতে মৃত ভোটারের নাম কর্তন এবং আবাসস্থল পরিবর্তনের কারণে স্থানান্তরের বিষয়েও কার্যক্রম গৃহিত হবে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ সংক্রান্ত কার্যক্রম সুষ্ঠু, সুন্দর, নির্ভুল ও সুচারুরূপে সম্পাদনের লক্ষ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিগত ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে নারী ভোটার কম হওয়ার বিষয়ে কমিশন যেসব কারণ সামনে এনেছে- (১) নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে জন্মনিবন্ধন সনদ সংগ্রহে অনীহা; (২) হিন্দু অবিবাহিত মেয়েদের পিত্রালয়ে নিবন্ধন করতে অনীহা; (৩) অবিবাহিত, অনগ্রসর ও নিরক্ষর মেয়েদের ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহ কম; (৪) বাবা-মা’র জাতীয় পরিচয়পত্র দাখিল করতে ব্যর্থ হওয়া; (৫) রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্র দূরবর্তী হওয়া; (৬) আবহাওয়া অনুকূল না থাকা; (৭) সামাজিক সংস্কার ও ধর্মীয় অজুহাতে ছবি তুলতে অনীহা এবং (৮) প্রত্যন্ত অঞ্চলের মাহিলাদের অসচেতনতা অন্যতম। নির্দেশনায় বলা হয়, এবার নারীদের অন্তর্ভুক্তির হার যেন উল্লেখযোগ্যভাবে কম না হয় সে লক্ষ্যে হালনাগাদ কার্যক্রমের সময় সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য (বিশেষ করে সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর/সদস্যগণকে), দফাদার ও গ্রাম পুলিশকে সম্পৃক্ত করতে পারেন। সিটি করপোরেশন ও উপজেলা পর্যায়ের সমন্বয় কমিটিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে সমন্বয় কমিটি এরইমধ্যে গঠন করা হয়েছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এ কাজে নারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিতকল্পে সংশ্লিষ্ট সদস্যদের নির্দ্বিধায় ওই কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন। বিশেষ করে প্রচারের কাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। আগামী ২০ মে দেশে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু করবে নির্বাচন কমিশন। এ ক্ষেত্রে প্রথম পর্যায়ে ১৪০টি উপজেলায় এ কার্যক্রম শুরু হবে। অন্যান্য উপজেলায় তিন ধাপে এ হালানাগাদ কার্যক্রম শেষ করা হবে।