ঢাকা ০২:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫

এবার ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা

  • আপডেট সময় : ০১:৫৮:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ মে ২০২২
  • ১৩৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীতে একশোটি পাত্রের মধ্যে ১০টিতেই পাওয়া যাচ্ছে এডিসের লার্ভা। বর্ষা মৌসুম পুরোপুরি শুরু হলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়ানক রূপ নিতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কীটতত্ত্ববিদরা। রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকার বাসাবাড়িতে উত্তর সিটি করপোরেশনের অভিযানে বেরিয়ে এসেছে এ চিত্র।
কীটতত্ত্ববিদদের মতে, ডেঙ্গু সংকট মোকাবিলায় এখন থেকেই এডিসের প্রজননস্থল ধ্বংসের জোরালো প্রক্রিয়া ছাড়া এ থেকে উত্তরণের কোনো বিকল্প নেই। এর পাশাপাশি নগরবাসীদের বাসা বাড়ি নিয়মিত পরিষ্কার রাখার ব্যাপারে অনেক বেশি সচেতন হতে হবে বলেও জানিয়েছেন তারা।
সম্প্রতি রাজধানীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা পরিচালিত এক জরিপে জানা গেছে, গত বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গুর প্রজননস্থলের পরিমাণ বেড়েছে। ওই জরিপে মশার ঘনত্ব পরিমাপের সূচক ব্রুটো ইনডেক্স ১০ এর বেশি পাওয়া গেছে রাজধানীর ২৩টি ওয়ার্ডে। এসব এলাকার বিভিন্ন বাসা বাড়ি ও নির্মাণাধীন বিভিন্ন ভবনের ১০০টি মধ্যে ১০টি পাত্রে মিলেছে এডিসের লার্ভা। রাজধানীর দুই সিটির ৯৮টি ওয়ার্ডের ৩ হাজার ১৫০টি বাড়িতে পরিচালিত হয় এই জরিপ কার্যক্রম।
ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. একরামুল হক বলেন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মাত্র ৩টি সাইটে আমরা ব্রুটো ইনডেক্স ২০- এর বেশি পেয়েছি। হাউজ ইনডেক্স হিসাব করে দেখা গেছে, এটি চার দশমিক ৭৫ অর্থাৎ ৫ এর কাছাকাছি। সে কারণে ধারণা করছি, এ বছর বর্ষা মৌসুম নগরবাসীর জন্য ডেঙ্গু রোগ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এই জরিপের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনকে যত দ্রুত সম্ভব মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন কীটতত্ত্ববিদরা।
কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, সম্ভাব্য যে সকল পাত্রে এডিস মশা জন্মায় বা জন্মানোর সম্ভাবনা রয়েছে; সেই সব পাত্র অপসারণ করা সবচেয়ে বেশি জরুরি। বর্ষা শুরুর আগেই সিটি মেয়রদের উচিত কাউন্সিলরদের নিয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে, পাড়া মহল্লায় ভাগ করে স্থানীয় সমাজকর্মী এবং যুব সমাজকে সম্পৃক্ত করে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করা।
এদিকে, আসন্ন ডেঙ্গু পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রয়োজনীয় লোকবল ও কীটনাশক নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। ডেঙ্গু মোকাবিলায় উত্তর সিটি করপোরেশন কঠোর হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে মেয়র আতিক বলেন, এডিসের লার্ভা পাওয়া গেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আইন অনুযায়ী নিয়মিত মামলা হবে। গতবার ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করেছি। এবার শুধু জরিমানা নয়, প্রয়োজনে জেলও হবে। অপরদিকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, লোকবল, যন্ত্রপাতি এবং ওষুধ কী পরিমাণ মজুত আছে সেগুলো নিয়ে দুই সিটির মেয়রের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের অবস্থাটা পর্যালোচনা করেছি। পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দুই সিটি করপোরেশেনই ডেঙ্গু মোকাবিলায় পুরোপুরি প্রস্তুত আছে। প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে; গত ২০২১ সালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। আর প্রাণ হারিয়েছেন ১০৫ হন। যাদের অধিকাংশই ছিলেন, রাজধানীর বাসিন্দা।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

এবার ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা

আপডেট সময় : ০১:৫৮:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ মে ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীতে একশোটি পাত্রের মধ্যে ১০টিতেই পাওয়া যাচ্ছে এডিসের লার্ভা। বর্ষা মৌসুম পুরোপুরি শুরু হলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়ানক রূপ নিতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কীটতত্ত্ববিদরা। রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকার বাসাবাড়িতে উত্তর সিটি করপোরেশনের অভিযানে বেরিয়ে এসেছে এ চিত্র।
কীটতত্ত্ববিদদের মতে, ডেঙ্গু সংকট মোকাবিলায় এখন থেকেই এডিসের প্রজননস্থল ধ্বংসের জোরালো প্রক্রিয়া ছাড়া এ থেকে উত্তরণের কোনো বিকল্প নেই। এর পাশাপাশি নগরবাসীদের বাসা বাড়ি নিয়মিত পরিষ্কার রাখার ব্যাপারে অনেক বেশি সচেতন হতে হবে বলেও জানিয়েছেন তারা।
সম্প্রতি রাজধানীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা পরিচালিত এক জরিপে জানা গেছে, গত বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গুর প্রজননস্থলের পরিমাণ বেড়েছে। ওই জরিপে মশার ঘনত্ব পরিমাপের সূচক ব্রুটো ইনডেক্স ১০ এর বেশি পাওয়া গেছে রাজধানীর ২৩টি ওয়ার্ডে। এসব এলাকার বিভিন্ন বাসা বাড়ি ও নির্মাণাধীন বিভিন্ন ভবনের ১০০টি মধ্যে ১০টি পাত্রে মিলেছে এডিসের লার্ভা। রাজধানীর দুই সিটির ৯৮টি ওয়ার্ডের ৩ হাজার ১৫০টি বাড়িতে পরিচালিত হয় এই জরিপ কার্যক্রম।
ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. একরামুল হক বলেন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মাত্র ৩টি সাইটে আমরা ব্রুটো ইনডেক্স ২০- এর বেশি পেয়েছি। হাউজ ইনডেক্স হিসাব করে দেখা গেছে, এটি চার দশমিক ৭৫ অর্থাৎ ৫ এর কাছাকাছি। সে কারণে ধারণা করছি, এ বছর বর্ষা মৌসুম নগরবাসীর জন্য ডেঙ্গু রোগ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এই জরিপের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনকে যত দ্রুত সম্ভব মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন কীটতত্ত্ববিদরা।
কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, সম্ভাব্য যে সকল পাত্রে এডিস মশা জন্মায় বা জন্মানোর সম্ভাবনা রয়েছে; সেই সব পাত্র অপসারণ করা সবচেয়ে বেশি জরুরি। বর্ষা শুরুর আগেই সিটি মেয়রদের উচিত কাউন্সিলরদের নিয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে, পাড়া মহল্লায় ভাগ করে স্থানীয় সমাজকর্মী এবং যুব সমাজকে সম্পৃক্ত করে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করা।
এদিকে, আসন্ন ডেঙ্গু পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রয়োজনীয় লোকবল ও কীটনাশক নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। ডেঙ্গু মোকাবিলায় উত্তর সিটি করপোরেশন কঠোর হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে মেয়র আতিক বলেন, এডিসের লার্ভা পাওয়া গেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আইন অনুযায়ী নিয়মিত মামলা হবে। গতবার ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করেছি। এবার শুধু জরিমানা নয়, প্রয়োজনে জেলও হবে। অপরদিকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, লোকবল, যন্ত্রপাতি এবং ওষুধ কী পরিমাণ মজুত আছে সেগুলো নিয়ে দুই সিটির মেয়রের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের অবস্থাটা পর্যালোচনা করেছি। পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দুই সিটি করপোরেশেনই ডেঙ্গু মোকাবিলায় পুরোপুরি প্রস্তুত আছে। প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে; গত ২০২১ সালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। আর প্রাণ হারিয়েছেন ১০৫ হন। যাদের অধিকাংশই ছিলেন, রাজধানীর বাসিন্দা।