তাজুল ইসলাম ছামি : অনেক শিশুই ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে যুক্ত। পেটের দায়েই কাজে নামে কোমলমতি একেকটি শিশু। খেটে খাওয়া এই শিশুদের অনেকে নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়। কাজ করতে করতে ছোট হাত-পা হয়ত অনেক সময় ক্লান্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু এর জন্য শুনতে হয় কথা, গায়ে হাতও তোলা হয়। শুধু তাই নয়, শিশুমন হয়ত কাজে থাকতে চায় না, খেলার দিকে ছুটে যায়, উড়ে বেড়াতে মন চায়। এটার জন্যও নির্যাতনের শিকার হয় অনেক শিশু। শিশু কাজে ভুল করলেও নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে।
শিশুকর্মী নিয়োগ করাই হয় যাতে কম বেতনে অধিক কাজ করিয়ে নেওয়া যায়। আবার শিশুরা প্রতিবাদ করতে পারবে না তাই তাদের যখন তখন থাপ্পড় মারা যায়, ধমক দেওয়া যায়।
শিশুরা ভয়ংকর নির্যাতনের শিকার হলে তা সামনে আসে, গণমাধ্যম এটা নিয়ে সংবাদ প্রচার করে। কিন্তু এমন অনেক ঘটনাই আছে যেগুলো আড়ালেই রয়ে যায়। এই শিশুরাও হয়ত জানে না তার অধিকার কত বাজে ভাবে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনসহ অনেক কিছুই মুখ বুজে সহ্য করে নেয় এই শিশুরা।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক প্রতিবেদন থেকে জানতে পেরেছি, ২০১৫ সালে খুলনায় এক মোটর ওয়ার্কশপে মোটরসাইকেলে হাওয়া দেওয়ার কমপ্রেসার মেশিনের মাধ্যমে মলদ্বারে হাওয়া ঢুকিয়ে ১২ বছর বয়সী রাকিবকে হত্যা করা হয়। সাড়ে পাঁচ বছর বিচারের নানা প্রক্রিয়া পার হয়ে এই নির্মম হত্যার ঘটনায় দুই আসামিকে হাই কোর্টের দেওয়া যাবজ্জীবন সাজার রায় সর্বোচ্চ আদালতেও বহাল রাখা হয়েছে। শিশুর প্রতি যদি সহানুভূতির দৃষ্টি থাকত সবার তাহলে এমন ঘটনা কখনোই ঘটা সম্ভব নয়। আমরা সবাই বড় হওয়ার পর ভুলে যাই, সবাই একদিন শিশু ছিলাম। শিশুমন, শিশুর সক্ষমতা, শিশুর আবদার কোনোকিছুকেই অবহেলার চোখে দেখা উচিত নয়। শিশুর জন্য, সংবেদনশীল একটি সমাজ গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সবার। শিশুর সম্মান, তার ভালোবাসা পাওয়ার প্রাপ্যটুকু সবাইকেই নিশ্চিত করতে হবে। সৌজন্যে : বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের শিশু বিষয়ক সাংবাদিকতা ‘হ্যালো’।
নিষিদ্ধ শিশুশ্রমে নির্যাতনের খড়গ
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ