গার্গী তনুশ্রী পাল (১৩), ঢাকা : বিশ্বের সকল শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় টিকাদান নিশ্চিত করতে অধিকতর বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত লিয়াম নিসন।
সম্প্রতি বিশ্ব টিকা দিবস উপলক্ষ্যে বৈশ্বিক টিকাদান প্রচেষ্টার সপ্তাহব্যাপী এক আয়োজনে যোগ দিয়ে তিনি বিনিয়োগের এই আহ্বান জানান।
টিকাদানের সাফল্য সত্ত্বেও ২০২০ সালে দুই কোটি ৩০ লাখ শিশু টিকা থেকে বাদ পড়ে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তবে এই সংখ্যা শুধু টিকাদানের প্রতিশ্রুতি রক্ষা এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে কমানো সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল এ বিষয়ে বলেন, “গত দুটি বছর আমাদের শিখিয়েছে যে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় কিছু শিশু ঝুঁকিতে থাকে, প্রকৃতপক্ষে সেই স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় সব শিশুই ঝুঁকিতে থাকে।”
প্রতিটি শিশুর জন্য টিকাদান ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার পেছনে বিনিয়োগ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এদিকে সম্প্রতি বিশ্ব টিকা দিবস উপলক্ষ্যে প্রকাশিত এক ভিডিওতে শিশুদের টিকাদানে সহায়তা করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকা সকল বিজ্ঞানী, অভিভাবক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং অন্যদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন শুভেচ্ছাদূত লিয়াম নিসন। এ সময় টিকা তৈরিতে বিজ্ঞানী ও কারখানা কর্মীদের অবদানের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন যে, পোলিও প্রতিরোধে প্রথম টিকা তৈরি করা জোনাস সাল্কের মতো বিজ্ঞানী এবং কারখানা কর্মীদের আন্তরিক চেষ্টাগুলো সত্যিই বিষ্ময়কর। এর ফলে প্রতি বছর ২০ থেকে ৩০ লাখ শিশুর জীবন বাঁচানোর প্রচেষ্টা সম্ভব হচ্ছে।
ইউনিসেফের এই শুভেচ্ছাদূত আরও বলেন, “গত ৭৫ বছরে কোটি কোটি শিশুকে টিকা দেওয়া হয়েছে, যার কৃতিত্ব বিজ্ঞানী, স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের।”
টিকার গুরুত্ব সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি তিনি বলেন, “আমরা গুটি বসন্তে আক্রান্ত হওয়া নিয়ে আর চিন্তিত নই। এক সময়ের ভয়ঙ্কর রোগ পোলিওকে এখন বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই আর হুমকি হিসেবে দেখা হয় না। টিকা যে আমাদের প্রত্যেকের জন্য কতটা ভালো কাজ করেছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।”
‘সকলের জন্য দীর্ঘ জীবন’ বিষয়টিকে প্রতিপাদ্য করে পালিত হচ্ছে এবারের বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহ। প্রতি বছর এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে উদযাপিত হয় এই টিকাদান কর্মসূচি। এর নেতৃত্বে রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এটি সব বয়সী মানুষকে রোগ থেকে সুরক্ষিত রাখতে, টিকা ব্যবহারের বিষয়টি তুলে ধরতে বৈশ্বিক অংশীদারদের একত্রিত করে।
বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের গ্লোবাল পলিসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসির প্রেসিডেন্ট গার্গী ঘোষ বলেন, “আমরা কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ব্যাহত হওয়া টিকাদান কার্যক্রমগুলো পুনরায় চালু এবং টিকায় প্রতিরোধযোগ্য সব রোগের বিরুদ্ধে অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে সময়ের সঙ্গে লড়ছি। এ কারণেই দীর্ঘ সুস্থ জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় টিকা যেন শিশুরা পায়, বিশেষ করে বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোর শিশুরা যেন বঞ্চিত না হয়, তা নিশ্চিত করতে ইউনিসেফ এবং বিশ্বের অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমরা আনন্দিত।”
জাতিসংঘ ফাউন্ডেশন ঝযড়ঃ@খরভব-এর নির্বাহী পরিচালক মার্থা রেবার বলেন, “বিশ্বের পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের প্রায় অর্ধেকই যেন জীবন রক্ষাকারী টিকা নিয়ে সুরক্ষিত থাকে সে লক্ষ্যে কাজ করছে ইউনিসেফ। বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহে তাদের কাজকে সমর্থন ও প্রচার করতে পেরে আমরা সম্মানিত। এই গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক টিকাদান কর্মসূচিতে আমাদের কার্যক্রমে অন্যরাও যোগ দেবে বলে আমরা আশা করছি।”
সৌজন্যে : বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের শিশু বিষয়ক সাংবাদিকতা ‘হ্যালো’।
শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রয়োজন অধিকতর বিনিয়োগ
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ