স্বাস্থ্য ডেস্ক : ঘুমের মধ্যে হাত-পা ছোড়া বা কথা বলা হতে পারে পারকিনসন’স রোগের পূর্বাভাস। বয়স যত বাড়তে থাকে ততই বাড়তে থাকে স্মৃতিভ্রম, বাত, ডায়াবেটিস ইত্যাদিসহ বিভিন্ন ব্যধির ঝুঁকি। ‘পারনিসন’স ডিজিজ’ তেমনই একটি রোগ। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি শরীর কাঁপা, অবশ, হাঁটতে অসুবিধা, ভারসাম্য রাখতে না পারা, কথা জড়িয়ে যাওয়া ও কোনো কিছু সমন্বয় করতে পারে না। এই রোগগুলোর পূর্বাভাস সম্পর্কে জানা থাকলে প্রাথমিক অবস্থাতে চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হতে পারে, যা রোধ করতে পারে অকাল মৃত্যুও। তবে রোগের পূর্বাভাস শনাক্ত করাও সবসময় সহজ নয়। ‘বেস্টলাইফ’ ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে একাধিক বিশেষজ্ঞের মতামতের বরাত দিয়ে জানানো হয় এই রোগের পূর্বাভাস সম্পর্কে।
ঘুমন্ত অবস্থায় আজগুবি কোনো কাজ করা : ডেনমার্কের আরহাস ইউনিভার্সিটি’র করা এক গবেষণায় জানা যায়, ঘুমের মধ্যে ‘র্যাপিড আই মুভমেন্ট (আরবিডি)’ হতে পারে এই রোগের প্রাথমিক পূর্বাভাস। গবেষকদের দাবি, ‘যারা এই ‘আরবিডি’র শিকার হন তাদের মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনে ভিন্নতা দেখা যায়। যে কারণে মস্তিষ্কের কোষে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছায় না।’ এপ্রিল মাসে প্রকাশিত এই গবেষণায় আরও বলা হয়, ‘কেউ ‘আরবিডি’র শিকার হলে সে ঘুমের মধ্যে বিছানা থেকে লাফিয়ে উঠে বসতে পারে, হাত-পা ছোড়া, কথা বলা কিংবা চিৎকার করা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যায়।’
পেশি অস্বাভাবিকভাবে অবশ হওয়া : যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্লিপ ফাউন্ডেশন’ বলে, স্বাভাবিকভাবে ঘুম যখন গভীর হয় বা ‘আরইএম’ পর্যায়ে পৌঁছায় তখন শরীর সাময়িকভাবে ‘প্যারালাইজড’ বা অবশ হয়ে গেলেও সেসময় মস্তিষ্ক তেমনই সক্রিয় থাকে যেমনটা মানুষ সজাগ অবস্থায় থাকে। তবে ‘আরবিডি’তে যারা ভোগেন তাদের শরীর অস্বাভাবিকভাবে ‘প্যারালাইজড’ হয়ে যায়। ফলে ঘুমন্ত অবস্থায় তারা স্বপ্নে যা দেখে সেটা বাস্তবেও করতে থাকে। পঞ্চাশোর্ধ পুরুষের এই ধরনের সমস্যা হওয়া সম্ভাবনা সবচাইতে বেশি। আর ‘পারকিনসন’স’ রোগ পুরুষদের বেশি হয়।
পারকিনসন’স এবং আরবিডি’য়ের মধ্যে সম্পর্ক : ড. সাইমন ফ্রিস্টেড এসকিল্ডসেন, এই গবেষণার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক গবেষক। তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস, যে রোগ ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি করে সেই একই রোগ মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। আর সেখান থেকে মস্তিষ্কের অক্সিজেন সরবরাহের ঘাটতি তৈরি হবে। মস্তিষ্কে এই পরিবর্তনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ‘নিউরোট্রান্সমিটার’ কমে যাওয়া সম্ভাবনা। অর্থাৎ মস্তিষ্কের স্নায়ু সেখানকার রক্তনালীগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা।’ ‘নিউরোট্রান্সমিটার ডোপামিন’ কমে যাওয়া থেকেই ‘পারকিনসন’স ডিজিজ’ দেখা দেয় বলে দাবি করে দুটি পৃথক গবেষণা। একটি গবেষণা প্রকাশিত হয় ২০১৩ সালে ‘স্লিপ মেডিসিন রিভিউ’দে। অন্যটি ২০১৬ সালে ‘জার্নাল অফ ক্লিনিকাল স্লিপ মেডিসিন’য়ে।
অন্যান্য উপসর্গ : যুক্তরাষ্ট্রের পারকিনসন’স ফাউন্ডেশন’য়ের মতে, ‘শরীরে কাঁপুনি, হাতের লেখা ছোট হয়ে যাওয়া, গন্ধ না পাওয়া, হাঁটতে সমস্যা হওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, গলার স্বর নেমে যাওয়া, মাথা ঘোরানো, কুঁজো হয়ে হাঁটা ইত্যাদিও পারকিনসন’স রোগের লক্ষণ হতে পারে। তাই এসব সমস্যাকে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
পারকিনসন’স রোগের প্রাথমিক লক্ষণ
                                 ট্যাগস :  
                                                            
							
                            
                                      জনপ্রিয় সংবাদ                                
                                
																			
										

























