আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটে হেরে ক্ষমতা হারিয়েছেন সপ্তাহখানেক আগে। এরই মধ্যে দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা পেয়েছেন পাঞ্জাবের সাবেক মূখ্যমন্ত্রী ও পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রধান শাহবাজ শরিফ। কিন্তু ক্ষমতা পাওয়ার পর সপ্তাহ পেরোলেও এখনও মন্ত্রীসভা গঠন করতে পারেননি তিনি। ইমরান খান বিরোধী আন্দোলনের অনেকেই এখন মন্ত্রীসভায় যোগ দিতে চাচ্ছেন না। কেউ কেউ আবার প্রেসিডেন্ট, স্পিকার, গভর্নর ইত্যাদি সাংবিধানিক পদে যোগ দিতে আগ্রহী হলেও মন্ত্রীসভায় যেতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছেন। একই ইঙ্গিত আবার পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলী জারদারিরও।
দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের খবরে বলা হয়, শনিবার পার্লামেন্টারি হাউসে অনুষ্ঠিত পিপিপির বৈঠকের পর অনানুষ্ঠানিক এক আলোচনায় সাবেক এই প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের বলেন, তার মনে হচ্ছে পিপিপি মন্ত্রিত্ব নিতে চাচ্ছে না। তবে তারা চায়, তাদের বন্ধুদের আগে শাহবাজের মন্ত্রিসভায় নেওয়া উচিত।
শাহবাজ শরিফের ওপর বোঝা চাপাতে চান না বলে সাংবাদিকদের কাছে স্পষ্ট করে জারদারি বলেন, ‘এ ধরনের কোনো ব্যাপার নেই। আমরা বরং বন্ধুদের একটা সুযোগ দিতে চাই। আমরা স্বতন্ত্র থেকে সরকারের কাজে সহায়তা করে যেতে চাই।’
অপরদিকে জোটের আরেক শরিক এমকিউএম-পি-এর আহ্বায়ক খালিদ মকবুল সিদ্দিকী মন্ত্রিসভার সদস্য হওয়ার চেয়ে জনগণের সেবায় বেশি আগ্রহী বলে জানান।
সংবাদ সম্মেলনের পর মন্ত্রীসভায় যোগ দেওয়ার ব্যাপারে কয়েকজন পিপিপি নেতা জানান, তারা এ ব্যাপারে আলোচনা করেছেন। শেষ পর্যন্ত হয়তো মন্ত্রীসভায় যোগ দিতেও পারেন। তবে পিপিপি নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন বলে শুরু থেকেই শোনা যাচ্ছিল।
এর আগে পিপিপি দলের নেতাদের জন্য পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে যারা জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে দলের টিকিট পেতে চান, তাদের ফরমে আবেদন করতে বলা হয়েছে। জাতীয় পরিষদের দলের মনোনায়ন প্রত্যাশীদের ফরমের জন্য ৪০ হাজার রুপি এবং প্রাদেশিক পরিষদের জন্য ৩০ হাজার রুপি দলের ফান্ডে জমা দিতে হবে। আবেদন ফরম দলের ইসলামাবাদ দপ্তরে অথবা করাচিতে বিলাওয়াল ভুট্টোর করাচির বাসভবনে ৩০ এপ্রিলের মধ্য পাঠাতে হবে বলে জানিয়েছেন পিপিপির সাধারণ সম্পাদক ফারহাতুল্লাহ বাবর।
পিপিপি মন্ত্রণালয়ের চেয়ে সাংবিধানিক দপ্তরের পদগুলোর দিকে বেশি আগ্রহী বলে রাজনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে। এরই মধ্যে শনিবার পিপিপির রাজা পারভেজ আশরাফ পার্লামেন্টের নতুন স্পিকার হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এখন ডেপুটি স্পিকার, সিনেট চেয়ারম্যান এবং প্রেসিডেন্টের পদের দিকে নজর তাদের। এদিকে ধারণা করা হচ্ছে আরিফ আলভি শিঘ্রই পদত্যাগ করতে পারেন। যদি এই ধারণা বাস্তবে রূপ নেয় তবে পিপিপি প্রেসিডেন্ট চাইবে।
ইমরান খান ক্ষমতা হারানোর পর ১১ এপ্রিল দায়িত্ব পান শাহবাজ শরিফ। এরপর থেকেই ক্ষমতাসীন জোটের বৃহত্তম দল পিপিপিকে মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার জন্য জোর দিয়ে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তবে মন্ত্রিসভার বাইরে থেকে তাকে সমর্থন করতে বেশি আগ্রহী বলে জানায় পিপিপি। এদিকে মিত্রদের নিয়ে বিশেষ করে যারা পিটিআইয়ে নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন জোট ছেড়ে বিরোধী দলে যোগ দিয়েছিলেন তাদের নিয়ে আগানোর উদ্দেশ্য থাকায় নতুন মন্ত্রীসভা গঠনে বিলম্ব করছেন প্রধানমন্ত্রী এমনটাই শোনা যাচ্ছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মুখে।
মন্ত্রিসভায় যোগদানে অনাগ্রহী পিপিপি
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ