ঢাকা ০৫:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫

৬ টাকার শসা বাজারে ৫০

  • আপডেট সময় : ১২:০৪:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২২
  • ১০৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :চলতি মৌসুমে ৩৬ শতক জমিতে শসা চাষ করেন কৃষক বিল্লাল হোসেন। ক্ষেত প্রস্তুত ও সারসহ খরচ পড়ে ২০ হাজার টাকা। রমজানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত আট দফায় ৫০ মণ শসা বিক্রি করেছেন। শুরুতে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি করেন। কিন্তু গতকাল শনিবার ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার কাকনি ইউনিয়নের শসার বাজারে বেপারীর কাছে বিক্রি করেন ছয় টাকা কেজি দরে। বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘ক্ষেতে এখনও প্রচুর শসা রয়েছে। দাম একেবারে কমে যাওয়ায় ক্ষেত থেকে শসা উঠিয়ে বাজারে নেওয়ার ইচ্ছা চলে গেছে। তবে যে পরিমাণ শসা এ পর্যন্ত বিক্রি করতে পেরেছি মোটামুটি খরচটা উঠে যাবে।’ ময়মনসিংহের বেশিরভাগ কৃষক প্রতি কেজি শসা বিক্রি করছেন ছয় টাকায়। সেই শসা বেপারীর হাত হয়ে খুচরা পর্যায়ে বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকায়। এভাবে দর পড়ে যাওয়ায় ক্ষেত থেকে শসা তুলে বাজারে আনায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন বিল্লালের মতো কৃষকরা।
ফুলপুরের বালিয়া গ্রামের কৃষক নুরুল আমিন বলেন, ‘৫৫ শতক জমিতে শসার আবাদ করেছিলাম। ফলনও হয়েছে ভালো, কিন্তু বাজারদর একেবারেই কম। এই দামে শসা বিক্রি করে আবাদের খরচ উঠবে না। ভেবেছিলাম শসার আবার থেকে বাড়তি যে টাকা আসবে তা দিয়ে সংসারসহ ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার পড়ালেখার খরচ চালাবো। কিন্তু এখন আবাদ খরচই উঠছে না।’ তারাকান্দার পাইকারি শসা বাজারের বেপারী বাবুল মিয়া জানান, ‘বাজারে বর্তমানে শসার কেজি ছয় টাকা। এই শসা ঢাকায় পাঠাতে পরিবহন ও সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে টাকা দেওয়া বাবদ খরচ হয় আরও চার টাকা। ঢাকায় পাঠাতে প্রতি কেজিতে মোট খরচ ১০ টাকা। আমরা প্রতি কেজি দেড় থেকে দুই টাকা লাভ করে ঢাকার আড়তে পাঠিয়ে দিই।’ মেছুয়া বাজারের খুচরা বিক্রেতা কামাল হোসেন জানান, আড়ত থেকে তারা প্রতি কেজি শসা ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে কেনেন। বাজারে ইজারাদারের খরচ আছে। সবমিলে প্রতি কেজি শসা বিক্রি করছেন ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। রমজানের শুরুতে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছিলেন। বর্তমানে শসার বাজারদর অর্ধেকেরও নিচে নেমে এসেছে। ময়মনসিংহ কৃষি বিভাগের খামারবাড়ির উপ-পরিচালক কৃষিবিদ বদিউজ্জামান জানান, জেলায় চলতি মৌসুমে এক হাজার হেক্টর জমিতে শসা আবাদ হয়েছে। ফলনও হয়েছে খুব ভালো। রমজানের শুরুতে বাজারদর কৃষকরা বেশ ভালো পেয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে দাম কমে গেছে। এর ফলে শসার আবাদে কৃষকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

৬ টাকার শসা বাজারে ৫০

আপডেট সময় : ১২:০৪:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :চলতি মৌসুমে ৩৬ শতক জমিতে শসা চাষ করেন কৃষক বিল্লাল হোসেন। ক্ষেত প্রস্তুত ও সারসহ খরচ পড়ে ২০ হাজার টাকা। রমজানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত আট দফায় ৫০ মণ শসা বিক্রি করেছেন। শুরুতে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি করেন। কিন্তু গতকাল শনিবার ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার কাকনি ইউনিয়নের শসার বাজারে বেপারীর কাছে বিক্রি করেন ছয় টাকা কেজি দরে। বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘ক্ষেতে এখনও প্রচুর শসা রয়েছে। দাম একেবারে কমে যাওয়ায় ক্ষেত থেকে শসা উঠিয়ে বাজারে নেওয়ার ইচ্ছা চলে গেছে। তবে যে পরিমাণ শসা এ পর্যন্ত বিক্রি করতে পেরেছি মোটামুটি খরচটা উঠে যাবে।’ ময়মনসিংহের বেশিরভাগ কৃষক প্রতি কেজি শসা বিক্রি করছেন ছয় টাকায়। সেই শসা বেপারীর হাত হয়ে খুচরা পর্যায়ে বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকায়। এভাবে দর পড়ে যাওয়ায় ক্ষেত থেকে শসা তুলে বাজারে আনায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন বিল্লালের মতো কৃষকরা।
ফুলপুরের বালিয়া গ্রামের কৃষক নুরুল আমিন বলেন, ‘৫৫ শতক জমিতে শসার আবাদ করেছিলাম। ফলনও হয়েছে ভালো, কিন্তু বাজারদর একেবারেই কম। এই দামে শসা বিক্রি করে আবাদের খরচ উঠবে না। ভেবেছিলাম শসার আবার থেকে বাড়তি যে টাকা আসবে তা দিয়ে সংসারসহ ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার পড়ালেখার খরচ চালাবো। কিন্তু এখন আবাদ খরচই উঠছে না।’ তারাকান্দার পাইকারি শসা বাজারের বেপারী বাবুল মিয়া জানান, ‘বাজারে বর্তমানে শসার কেজি ছয় টাকা। এই শসা ঢাকায় পাঠাতে পরিবহন ও সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে টাকা দেওয়া বাবদ খরচ হয় আরও চার টাকা। ঢাকায় পাঠাতে প্রতি কেজিতে মোট খরচ ১০ টাকা। আমরা প্রতি কেজি দেড় থেকে দুই টাকা লাভ করে ঢাকার আড়তে পাঠিয়ে দিই।’ মেছুয়া বাজারের খুচরা বিক্রেতা কামাল হোসেন জানান, আড়ত থেকে তারা প্রতি কেজি শসা ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে কেনেন। বাজারে ইজারাদারের খরচ আছে। সবমিলে প্রতি কেজি শসা বিক্রি করছেন ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। রমজানের শুরুতে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছিলেন। বর্তমানে শসার বাজারদর অর্ধেকেরও নিচে নেমে এসেছে। ময়মনসিংহ কৃষি বিভাগের খামারবাড়ির উপ-পরিচালক কৃষিবিদ বদিউজ্জামান জানান, জেলায় চলতি মৌসুমে এক হাজার হেক্টর জমিতে শসা আবাদ হয়েছে। ফলনও হয়েছে খুব ভালো। রমজানের শুরুতে বাজারদর কৃষকরা বেশ ভালো পেয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে দাম কমে গেছে। এর ফলে শসার আবাদে কৃষকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।