ক্যাম্পাস ও ক্যারিয়ার ডেস্ক : বান্ধবীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি জের ধরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে।
গত সোমবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ক্যাম্পাসজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতœতত্ত্ব বিভাগের ১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মেসেঞ্জার গ্রুপে কাউসার হোসেন আপনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় এক বান্ধবীর। ওই ছাত্রীর স্বামী রিয়াজ শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলে থাকেন। গ্রুপের কথা কাটাকাটির বিষয়টি নারী ওই ছাত্রীর স্বামী তার হলের বন্ধুদের জানান। ইফতার শেষে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ডেকে আনেন ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের শিক্ষার্থী রবিন হোসেন ও রসায়ন বিভাগের আলভীর ভূঁইয়া। কথা কাটাকাটি কারণ জানতে চেয়ে তাকে থাপ্পড় দেন।
আপন বিষয়টি তার বিভাগের সিনিয়র ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সেলিম আহমেদ, আরিফ ও তার বন্ধু গালিবকে জানালে তারা রবিনের কাছে বিষয়টি জানতে প্রধান ফটকের সামনে যান। এ সময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের রবিন, আলভির, শরীফ, শাহিন, সবুজ, জামিলসহ কয়েকজনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সেলিম, আরিফ, গালিব ও মুজাহিদ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও শাখা ছাত্রলীগের নেতারা উপস্থিত হয়ে সবাইকে হলে চলে যেতে বলেন। পরে ক্যাম্পাস গেটে মীমাংসার জন্য ডাকলে সেখানে দুই গ্রুপের মধ্যে আবার উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় দুই হলের সিনিয়র নেতাদের উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায়। তাদের হলে ফিরে যেতে বললে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর ও মুক্তমঞ্চে ফের হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে উভয় গ্রুপ।
বান্ধবীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি, কুবিতে দুই হলের ছাত্রদের মারামারি
পরে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ প্রক্টরিয়াল বডি উপস্থিত হয়ে উভয় পক্ষকে হলে পাঠিয়ে দেন। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
কাউসার হোসেন আপন বলেন, ইফতারের পর রবিন ও আলভির এসে আমাকে থাপ্পড় মারতে থাকে। আমি বিষয়টি আমার সিনিয়র ও বন্ধুদের জানালে তারা ওদের সঙ্গে কথা বলতে যায়। এ সময় তারা আবারও আমাদের মারধর করেন।
এ বিষয়ে আলভির ভূঁইয়া বলেন, ক্যাফেটেরিয়ার সামনে আপনের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে তাকে কোন ব্যাচ জিজ্ঞেস করলে তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় সে আমার শার্টের কলার ধরলে আমরা দুজন তাকে থাপ্পড় দেই। পরে বঙ্গবন্ধু হলের সেলিমসহ কয়েকজনের সঙ্গে হাতাহাতি হয়।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ জাগো নিউজকে বলেন, তুচ্ছ একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঝামেলা হয়েছিল। সেটা মীমাংসা করতে গেলে একটা গুজব উঠে কিছু হট্টগোল হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা বসেছি। এর পেছনে যাদের সংশ্লিষ্টতা থাকবে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবো।
বান্ধবীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি, কুবিতে দুই হলের ছাত্রদের মারামারি
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রভোস্ট ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আমরা ও প্রক্টরিয়াল বডি প্রত্যক্ষদর্শী ছিলাম। শিক্ষার্থীদের হলে পাঠিয়ে দিয়েছি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. মোকাদ্দেস উল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমরা দেখেছি। আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছি।
প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী জাগো নিউজকে বলেন, আমরা প্রক্টরিয়াল বডি ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এখন যেহেতু উভয়পক্ষ উত্তেজিত, তাই আজকে আর বসবো না। আমরা প্রক্টরিয়াল টিম আগামীকাল উভয়পক্ষের সঙ্গে বসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
বান্ধবীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি, কুবিতে দুই হলের ছাত্রদের মারামারি
ট্যাগস :
বান্ধবীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি
জনপ্রিয় সংবাদ