ঢাকা ০৪:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫

পর্যটন খাতে ক্ষতি ৬০ হাজার কোটি টাকা

  • আপডেট সময় : ০২:০৭:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ এপ্রিল ২০২২
  • ৯৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : কোভিড-১৯ মহামারির কারণে অর্থনীতিতে বাংলাদেশের পর্যটন খাতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা। এক্ষেত্রে পরিবহন ও হোটেল খাতে ৪০ শতাংশ, রিসোর্ট খাতে ২৯ শতাংশ এবং রেস্তোরাঁ খাতে ২৫ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে। আর এই খাতে করোনার প্রভাব কাজ হারিয়েছেন ১ লাখ ৪১ হাজার শ্রমিক। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) ‘দ্য কোভিড-১৯ প্যানডেমিক অ্যান্ড দ্য হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম সেক্টর ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে আরও বলা হয়েছে, মহামারি ছাড়া মোট মূল্য সংযোজনের ক্ষেত্রে পুরো খাত এক লাখ কোটি টাকারও বেশি অবদান রাখত। করোনার কারণে এই অবদান কমেছে প্রায় ৯৫ হাজার কোটি টাকা। গতকাল রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বিআইডিএস সম্মেলন কক্ষে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্স ফেলো মোহাম্মদ ইউনূস। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাবেদ আহমেদ। গবেষণায় বলা হয়েছে, পর্যটন খাতে করোনা সংক্রমণের প্রভাব পুনরুদ্ধার করা সরকারের সহায়তা ছাড়া অসম্ভব। এ ক্ষেত্রে উপখাতগুলোকে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরিয়ে আনতে দুই ধরনের সহায়তা প্রয়োজন হবে— ফিসক্যাল স্টিমুলাস (প্রণাদনা) এবং কম সুদে ঋণ সুবিধা। অন্যদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং বেসরকারি খাতকে তাদের ব্যবসা করার সুবিধার জন্য পর্যটন স্থান এবং আশেপাশের জনসাধারণের অবকাঠামোর উন্নয়ন অপরিহার্য।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় প্রয়োজন, যেন পর্যটক ও সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংস্থা উভয়ই অপ্রয়োজনীয় ঝামেলা ও হয়রানি এড়াতে পারে। একইসঙ্গে কর্মচারীদের উপযুক্ত মজুরি ও বেতন বাজারের সঙ্গে যেন সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় এবং উদ্যোক্তারা শোষণের শিকার না হন, এটিও নিশ্চিত করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। পর্যটন খাত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর কোভিড-১৯-এর প্রভাব তুলে ধরে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে (এপ্রিল-জুন) পুরো খাতে বিক্রি ও আয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এই পতন হোটেল ও রিসোর্টগুলোর জন্য প্রায় ৮৪ শতাংশ এবং ট্যুর অপারেটর, ট্রাভেল এজেন্ট ও বিনোদন পার্কের জন্য ৯৮ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ। বেশিরভাগ এন্টারপ্রাইজে তৃতীয় ত্রৈমাসিক (জুলাই-সেপেটম্বর) থেকে বিক্রি বেড়েছে, যা ২০২১ সালের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) আরও বেড়েছে। কোভিড মহামারি পূর্ববর্তী সময়ের সঙ্গে তুলনা করে বলা হয়েছে, আগের তুলনায় সংক্রমণ চলাকালীন বছরে হোটেল ও রিসোর্টে কর্মীর গড় সংখ্যা ৪২ শতাংশ কম ছিল। একই সঙ্গে কর্মী ছাঁটাই হয় ৩১৭ শতাংশ বেশি। ২০১৯-২০ সালে যেখানে ট্রাভেল এজেন্সি, টুর অপারেটর ও পর্যটন খাতের এসএমই কোম্পানিগুলোতে কর্মী নিয়োগ বেড়েছিল, সেখানে করোনাকালীন কর্মীদের সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে কমেছে। ড. বিনায়ক সেন বলেন, পর্যটন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পুরো শ্রীলংকার অর্থনীতি ক্ষতির মুখে পড়েছে। যদিও এর পেছনে অন্যান্য কারণও আছে। বাংলাদেশের উচিত শ্রীলংকা থেকে শিক্ষা নিয়ে পর্যটন খাত পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা নেওয়া। জাবেদ আহমেদ বলেন, পর্যটন খাত উন্নয়নে গবেষণার বিকল্প নেই। এই গবেষণার মাধ্যমে এই খাত নিয়ে গবেষণা কেবল শুরু হয়েছে। আশা করছি ভবিষ্যতে আরও বেশি গবেষণা হবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পর্যটন খাতে ক্ষতি ৬০ হাজার কোটি টাকা

আপডেট সময় : ০২:০৭:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ এপ্রিল ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : কোভিড-১৯ মহামারির কারণে অর্থনীতিতে বাংলাদেশের পর্যটন খাতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা। এক্ষেত্রে পরিবহন ও হোটেল খাতে ৪০ শতাংশ, রিসোর্ট খাতে ২৯ শতাংশ এবং রেস্তোরাঁ খাতে ২৫ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে। আর এই খাতে করোনার প্রভাব কাজ হারিয়েছেন ১ লাখ ৪১ হাজার শ্রমিক। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) ‘দ্য কোভিড-১৯ প্যানডেমিক অ্যান্ড দ্য হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম সেক্টর ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে আরও বলা হয়েছে, মহামারি ছাড়া মোট মূল্য সংযোজনের ক্ষেত্রে পুরো খাত এক লাখ কোটি টাকারও বেশি অবদান রাখত। করোনার কারণে এই অবদান কমেছে প্রায় ৯৫ হাজার কোটি টাকা। গতকাল রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বিআইডিএস সম্মেলন কক্ষে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্স ফেলো মোহাম্মদ ইউনূস। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাবেদ আহমেদ। গবেষণায় বলা হয়েছে, পর্যটন খাতে করোনা সংক্রমণের প্রভাব পুনরুদ্ধার করা সরকারের সহায়তা ছাড়া অসম্ভব। এ ক্ষেত্রে উপখাতগুলোকে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরিয়ে আনতে দুই ধরনের সহায়তা প্রয়োজন হবে— ফিসক্যাল স্টিমুলাস (প্রণাদনা) এবং কম সুদে ঋণ সুবিধা। অন্যদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং বেসরকারি খাতকে তাদের ব্যবসা করার সুবিধার জন্য পর্যটন স্থান এবং আশেপাশের জনসাধারণের অবকাঠামোর উন্নয়ন অপরিহার্য।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় প্রয়োজন, যেন পর্যটক ও সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংস্থা উভয়ই অপ্রয়োজনীয় ঝামেলা ও হয়রানি এড়াতে পারে। একইসঙ্গে কর্মচারীদের উপযুক্ত মজুরি ও বেতন বাজারের সঙ্গে যেন সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় এবং উদ্যোক্তারা শোষণের শিকার না হন, এটিও নিশ্চিত করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। পর্যটন খাত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর কোভিড-১৯-এর প্রভাব তুলে ধরে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে (এপ্রিল-জুন) পুরো খাতে বিক্রি ও আয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এই পতন হোটেল ও রিসোর্টগুলোর জন্য প্রায় ৮৪ শতাংশ এবং ট্যুর অপারেটর, ট্রাভেল এজেন্ট ও বিনোদন পার্কের জন্য ৯৮ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ। বেশিরভাগ এন্টারপ্রাইজে তৃতীয় ত্রৈমাসিক (জুলাই-সেপেটম্বর) থেকে বিক্রি বেড়েছে, যা ২০২১ সালের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) আরও বেড়েছে। কোভিড মহামারি পূর্ববর্তী সময়ের সঙ্গে তুলনা করে বলা হয়েছে, আগের তুলনায় সংক্রমণ চলাকালীন বছরে হোটেল ও রিসোর্টে কর্মীর গড় সংখ্যা ৪২ শতাংশ কম ছিল। একই সঙ্গে কর্মী ছাঁটাই হয় ৩১৭ শতাংশ বেশি। ২০১৯-২০ সালে যেখানে ট্রাভেল এজেন্সি, টুর অপারেটর ও পর্যটন খাতের এসএমই কোম্পানিগুলোতে কর্মী নিয়োগ বেড়েছিল, সেখানে করোনাকালীন কর্মীদের সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে কমেছে। ড. বিনায়ক সেন বলেন, পর্যটন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পুরো শ্রীলংকার অর্থনীতি ক্ষতির মুখে পড়েছে। যদিও এর পেছনে অন্যান্য কারণও আছে। বাংলাদেশের উচিত শ্রীলংকা থেকে শিক্ষা নিয়ে পর্যটন খাত পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা নেওয়া। জাবেদ আহমেদ বলেন, পর্যটন খাত উন্নয়নে গবেষণার বিকল্প নেই। এই গবেষণার মাধ্যমে এই খাত নিয়ে গবেষণা কেবল শুরু হয়েছে। আশা করছি ভবিষ্যতে আরও বেশি গবেষণা হবে।