ঢাকা ১০:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫

আটা-ময়দা দিয়ে তৈরি হতো ভেজাল মোনাস-প্যানটোনিক্স ওধুষ

  • আপডেট সময় : ০১:৪৪:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০২২
  • ৮৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঠান্ডা-শ্বাসকষ্ট এবং গ্যাসট্রিকের চিকিৎসায় বহুল প্রচলিত মোনাস-১০ ও প্যানটোনিক্স-২০ ওষুধ দুটি তৈরি করা হচ্ছিল আটা-ময়দা আর রং ব্যবহার করে। চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় ওয়েস্ট ফার্মাসিউটিক্যাল নামের আয়ুর্বেদী ওষুধ তৈরির কারখানায় তৈরি করা হচ্ছিল মোনাস-১০ ও প্যানটোনিক্স-২০ ট্যাবলেট। চুয়াডাঙ্গা থেকে এসব নকল ওষুধ আনা হতো রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকার ওষুধ মার্কেটে। এরপর ব্যবসায়ীদের হাত ধরে ও কুরিয়ার সার্ভিসে ছড়িয়ে দেওয়া হয় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ফার্মেসিতে। গত বুধবার এ ভেজাল ওষুধের সূত্র ধরে রাজধানীর চকবাজার, ফকিরাপুল ও চুয়াডাঙ্গায় অভিযান চালায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অভিযানে ভেজাল ওষুধের পাইকারি বিক্রেতা আলী আক্কাস শেখ ও ওয়েস্ট ফার্মাসিউটিক্যালের মালিক গিয়াস উদ্দিন আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১০ লাখ ৩৪ হাজার ২৮০ পিস নকল প্যানটোনিক্স-২০ ট্যাবলেট ও ১৮ হাজার পিস নকল মোনাস-১০ ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। ডিবি জানায়, অধিক মুনাফার আশায় আয়ুর্বেদ ওষুধ তৈরির আড়ালে বাজারে বহুল প্রচলিত এ ওষুধটি তৈরি করে বাজারজাত করে আসছিল চক্রটি। এসব নকল ওষুধ সেবনে কোনো ধরনের উপকার তো হয়ই না, উল্টো জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, চিকিৎসাপত্রে এসব ওষুধের নাম দিলে কোনো রোগী যদি এসব নকল ওষুধ সেবন করেন, তাহলে কোনো উপকার হয় না। চিকিৎসকরাও আস্থা হারান। নকল ওষুধ তৈরি বড় ধরনের একটি ক্রাইম। এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে চকবাজারের একটি কুরিয়ার সার্ভিস থেকে মোনাস-১০ ও প্যানটোনিক্স-২০ নকল ওষুধের বড় চালান আটক করে ডিবি লালবাগ বিভাগ। এ সময় আলী আক্কাস শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে ফকিরাপুল এলাকা থেকে সেসব ওষুধ তৈরি কারখানার মালিক গিয়াস উদ্দিন আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে দর্শনায় গিয়াস উদ্দিনের কারখানায় অভিযান চালানো হয়। যেখানে আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরির আড়ালে এসব বহুল প্রচলিত ওষুধ হুবহু নকল করে তৈরি করা হচ্ছিল। তিন-চার বছর ধরে চক্রটি এ কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল উল্লেখ করে ডিবিপ্রধান বলেন, ১৬ টাকার মোনাস-১০ তারা বিক্রি করতো দুই টাকায়, ছয়-সাত টাকার প্যানটোনিক্স দুই টাকায় বিক্রি করতো। এসব নকল ওষুধ তৈরিতে আটা-ময়দা-রং ব্যবহৃত হতো। এমনকি ডাই বা স্টেরয়েড ব্যবহৃত হতে পারে। নন-ফার্মাসিউটিক্যাল এসব ওষুধ সেবনে কোনো উপকার হয় না। কিডনি-লিভার, হৃদযন্ত্র বা শ্বাসতন্ত্র মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আটা-ময়দা দিয়ে তৈরি হতো ভেজাল মোনাস-প্যানটোনিক্স ওধুষ

আপডেট সময় : ০১:৪৪:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঠান্ডা-শ্বাসকষ্ট এবং গ্যাসট্রিকের চিকিৎসায় বহুল প্রচলিত মোনাস-১০ ও প্যানটোনিক্স-২০ ওষুধ দুটি তৈরি করা হচ্ছিল আটা-ময়দা আর রং ব্যবহার করে। চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় ওয়েস্ট ফার্মাসিউটিক্যাল নামের আয়ুর্বেদী ওষুধ তৈরির কারখানায় তৈরি করা হচ্ছিল মোনাস-১০ ও প্যানটোনিক্স-২০ ট্যাবলেট। চুয়াডাঙ্গা থেকে এসব নকল ওষুধ আনা হতো রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকার ওষুধ মার্কেটে। এরপর ব্যবসায়ীদের হাত ধরে ও কুরিয়ার সার্ভিসে ছড়িয়ে দেওয়া হয় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ফার্মেসিতে। গত বুধবার এ ভেজাল ওষুধের সূত্র ধরে রাজধানীর চকবাজার, ফকিরাপুল ও চুয়াডাঙ্গায় অভিযান চালায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অভিযানে ভেজাল ওষুধের পাইকারি বিক্রেতা আলী আক্কাস শেখ ও ওয়েস্ট ফার্মাসিউটিক্যালের মালিক গিয়াস উদ্দিন আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১০ লাখ ৩৪ হাজার ২৮০ পিস নকল প্যানটোনিক্স-২০ ট্যাবলেট ও ১৮ হাজার পিস নকল মোনাস-১০ ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। ডিবি জানায়, অধিক মুনাফার আশায় আয়ুর্বেদ ওষুধ তৈরির আড়ালে বাজারে বহুল প্রচলিত এ ওষুধটি তৈরি করে বাজারজাত করে আসছিল চক্রটি। এসব নকল ওষুধ সেবনে কোনো ধরনের উপকার তো হয়ই না, উল্টো জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, চিকিৎসাপত্রে এসব ওষুধের নাম দিলে কোনো রোগী যদি এসব নকল ওষুধ সেবন করেন, তাহলে কোনো উপকার হয় না। চিকিৎসকরাও আস্থা হারান। নকল ওষুধ তৈরি বড় ধরনের একটি ক্রাইম। এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে চকবাজারের একটি কুরিয়ার সার্ভিস থেকে মোনাস-১০ ও প্যানটোনিক্স-২০ নকল ওষুধের বড় চালান আটক করে ডিবি লালবাগ বিভাগ। এ সময় আলী আক্কাস শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে ফকিরাপুল এলাকা থেকে সেসব ওষুধ তৈরি কারখানার মালিক গিয়াস উদ্দিন আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে দর্শনায় গিয়াস উদ্দিনের কারখানায় অভিযান চালানো হয়। যেখানে আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরির আড়ালে এসব বহুল প্রচলিত ওষুধ হুবহু নকল করে তৈরি করা হচ্ছিল। তিন-চার বছর ধরে চক্রটি এ কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল উল্লেখ করে ডিবিপ্রধান বলেন, ১৬ টাকার মোনাস-১০ তারা বিক্রি করতো দুই টাকায়, ছয়-সাত টাকার প্যানটোনিক্স দুই টাকায় বিক্রি করতো। এসব নকল ওষুধ তৈরিতে আটা-ময়দা-রং ব্যবহৃত হতো। এমনকি ডাই বা স্টেরয়েড ব্যবহৃত হতে পারে। নন-ফার্মাসিউটিক্যাল এসব ওষুধ সেবনে কোনো উপকার হয় না। কিডনি-লিভার, হৃদযন্ত্র বা শ্বাসতন্ত্র মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।