ঢাকা ১০:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫

চীন চায় স্বাভাবিক সম্পর্ক, দিল্লির দাবি সীমান্তে শান্তি

  • আপডেট সময় : ১১:২৫:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ মার্চ ২০২২
  • ৮৫ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিরোধপূর্ণ সীমান্ত থেকে সেনা সরিয়ে না নেওয়া পর্যন্ত চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়া সম্ভব না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে ভারত।
দিল্লিতে শুক্রবার দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে ভারত একথা বলে, জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
২০২০ সালের জুনে হিমালয়ের লাদাখ সীমান্তে চীন ও ভারতের সেনাদের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াই ভয়ঙ্কর লড়াইয়ে ভারতের ২০ সেনা নিহত হয়। ওই লড়াইয়ে তাদের চারজন সেনা নিহত হয় বলে পরে জানায় চীন।
জুনের ঘটনার পর থেকে উভয় দেশই উঁচু পাহাড়ের ওই সীমান্তে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করে। বিরোধ মেটাতে দুই দেশের শীর্ষ সেনাকর্মকর্তারা বৈঠক করলেও তাতে পরিস্থিতির সামান্যই উন্নতি হয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে তিন ঘণ্টার বৈঠক শেষে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শংকর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘‘চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আমি খুবই সৎ ছিলাম, বিশেষ করে আমাদের জাতীয় অনুভূতির বিষয়গুলোতে।
‘‘২০২০ সালের এপ্রিল থেকে চীনের সেনা মোতায়েনের কারণে সীমান্তে সংঘাত ও উত্তেজনা যেভাবে বেড়েছে তাতে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার সম্ভব না।”
এদিকে, এক বিবৃতিতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন এবং ভারতের উচিত বিশ্বজুড়ে স্থিতিশীলতা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় একজোট হয়ে কাজ করা।
‘‘দুই দেশের উচিত….সীমান্ত নিয়ে বিরোধের বিষয়টিকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বেলায় যথাযথ স্থানে রাখা এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে সঠিক লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া।
‘‘চীন তথাকথিত ‘উনিপোলার এশিয়া’ তে বিশ্বাস রাখে না। বরং এই অঞ্চলে ভারতের ঐতিহ্যগত ভূমিকাকে সম্মান করে। যখন চীন এবং ভারত হাতে হাত রেখে কাজ করবে তখন পুরো বিশ্ব তাদের উপর মনযোগ দিতে বাধ্য হবে।”
জয়শংকর এক সময় বেইজিংয়ে ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি বলেন, চীনের অনুরোধেই ভারত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-র দিল্লি সফরে আসার বিষয়টি গোপন রেখেছিল।
গত বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লি পৌঁছান ওয়াং ই।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও ওয়াং ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোবালের সঙ্গে বৈঠক করে। অজিতও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনের বিষয়ে জোর দিয়েছেন।
তবে চীন সীমান্ত থেকে সেনা সরিয়ে নিলে ভারতও তা করবে কিনা সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানায় রয়টার্স।
সীমান্ত ছাড়া বাকি যেসব বিষয় নিয়ে দুই দেশের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে সেগুলো সমাধানের পথ খুঁজে বের করার গতি বাড়াতে একমত হয়েছেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসন বিষয়ে নিজেদের অবস্থান নিয়েও আলোচনা করেছেন তারা।
জয়শংকর বলেন, ‘‘ইউক্রেইনে দ্রুত যুদ্ধবিরতি এবং সংকট সমাধানে কূটনৈতিক আলোচনায় ফিরে যাওয়া কতটা জরুরি সে বিষয়ে আমরা উভয়ই একমত হয়েছি।”
চীন এবং ভারত উভয় দেশেরই রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশই ইউক্রেইনে আগ্রাসনের জেরে রাশিয়াকে নিন্দা জানানোর পশ্চিমা প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে।
ভারত সফরে আসার আগে এ সপ্তাহের শুরতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান সফর করেন। ভারত থেকে তিনি নেপালে যাবেন। চীন চেষ্টা করছে প্রতিবেশী নেপালে নিজেদের প্রভাব বাড়াতে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চীন চায় স্বাভাবিক সম্পর্ক, দিল্লির দাবি সীমান্তে শান্তি

আপডেট সময় : ১১:২৫:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ মার্চ ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিরোধপূর্ণ সীমান্ত থেকে সেনা সরিয়ে না নেওয়া পর্যন্ত চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়া সম্ভব না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে ভারত।
দিল্লিতে শুক্রবার দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে ভারত একথা বলে, জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
২০২০ সালের জুনে হিমালয়ের লাদাখ সীমান্তে চীন ও ভারতের সেনাদের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াই ভয়ঙ্কর লড়াইয়ে ভারতের ২০ সেনা নিহত হয়। ওই লড়াইয়ে তাদের চারজন সেনা নিহত হয় বলে পরে জানায় চীন।
জুনের ঘটনার পর থেকে উভয় দেশই উঁচু পাহাড়ের ওই সীমান্তে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করে। বিরোধ মেটাতে দুই দেশের শীর্ষ সেনাকর্মকর্তারা বৈঠক করলেও তাতে পরিস্থিতির সামান্যই উন্নতি হয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে তিন ঘণ্টার বৈঠক শেষে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শংকর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘‘চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আমি খুবই সৎ ছিলাম, বিশেষ করে আমাদের জাতীয় অনুভূতির বিষয়গুলোতে।
‘‘২০২০ সালের এপ্রিল থেকে চীনের সেনা মোতায়েনের কারণে সীমান্তে সংঘাত ও উত্তেজনা যেভাবে বেড়েছে তাতে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার সম্ভব না।”
এদিকে, এক বিবৃতিতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন এবং ভারতের উচিত বিশ্বজুড়ে স্থিতিশীলতা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় একজোট হয়ে কাজ করা।
‘‘দুই দেশের উচিত….সীমান্ত নিয়ে বিরোধের বিষয়টিকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বেলায় যথাযথ স্থানে রাখা এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে সঠিক লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া।
‘‘চীন তথাকথিত ‘উনিপোলার এশিয়া’ তে বিশ্বাস রাখে না। বরং এই অঞ্চলে ভারতের ঐতিহ্যগত ভূমিকাকে সম্মান করে। যখন চীন এবং ভারত হাতে হাত রেখে কাজ করবে তখন পুরো বিশ্ব তাদের উপর মনযোগ দিতে বাধ্য হবে।”
জয়শংকর এক সময় বেইজিংয়ে ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি বলেন, চীনের অনুরোধেই ভারত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-র দিল্লি সফরে আসার বিষয়টি গোপন রেখেছিল।
গত বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লি পৌঁছান ওয়াং ই।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও ওয়াং ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোবালের সঙ্গে বৈঠক করে। অজিতও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনের বিষয়ে জোর দিয়েছেন।
তবে চীন সীমান্ত থেকে সেনা সরিয়ে নিলে ভারতও তা করবে কিনা সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানায় রয়টার্স।
সীমান্ত ছাড়া বাকি যেসব বিষয় নিয়ে দুই দেশের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে সেগুলো সমাধানের পথ খুঁজে বের করার গতি বাড়াতে একমত হয়েছেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসন বিষয়ে নিজেদের অবস্থান নিয়েও আলোচনা করেছেন তারা।
জয়শংকর বলেন, ‘‘ইউক্রেইনে দ্রুত যুদ্ধবিরতি এবং সংকট সমাধানে কূটনৈতিক আলোচনায় ফিরে যাওয়া কতটা জরুরি সে বিষয়ে আমরা উভয়ই একমত হয়েছি।”
চীন এবং ভারত উভয় দেশেরই রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশই ইউক্রেইনে আগ্রাসনের জেরে রাশিয়াকে নিন্দা জানানোর পশ্চিমা প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে।
ভারত সফরে আসার আগে এ সপ্তাহের শুরতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান সফর করেন। ভারত থেকে তিনি নেপালে যাবেন। চীন চেষ্টা করছে প্রতিবেশী নেপালে নিজেদের প্রভাব বাড়াতে।