ঢাকা ১১:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫

বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতা চেয়েছে বিজিএমইএ

  • আপডেট সময় : ০১:৩৯:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুন ২০২১
  • ৬৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। রোববার (৬ জুন) বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানের নেতৃত্বে বিজিএমইএ’র একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। গতকাল সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আলোচনাকালে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, করোনা মহামারিতে পোশাক শিল্প ক্রান্তিলগ্ন অতিক্রম করছে। এ অবস্থায় পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা অর্থনীতির চাকা সচল রাখা এবং প্রতিকূল পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। উদ্যোক্তারা মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে পোশাক শিল্প সংক্রান্ত ইস্যুগুলো সহজীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হলে তা শিল্পকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করবে। বিজিএমইএ সভাপতি বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে যে সহযোগিতাগুলো চেয়েছেন, সেগুলো হলো- পোশাক শিল্পখাতকে এই সংকটময় সময়ে টিকিয়ে রাখার নিমিত্তে আংশিক রফতানি মূল্য অপ্রত্যাবাসিত থাকলে অন্যান্য প্রত্যাবাসিত রফতানি মূল্যের বিপরীতে রফতানি ভর্তুকি বা নগদ সহায়তার আবেদন গ্রহণ করে প্রক্রিয়াকরণ করা এবং এফই সার্কুলার নং-৩০ এর কার্যকারিতা আগামী ৬ মাস পর্যন্ত স্থগিত রাখা। আরও রয়েছে ব্যাক টু ব্যাক এলসি খোলার ক্ষেত্রে রফতানিকারকের বন্ডেড ওয়্যারহাউজ লাইসেন্স এবং আইআরসি দাখিলের নিমিত্তে চাপ সৃষ্টি না করার জন্য সকল তফসিলি ব্যাংকের অনুকূলে নির্দেশনা জারি করা। বৈদেশিক বাণিজ্য লেনদেনের ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রা বিধি শিথিলকরণ বিষয়ে জারিকৃত সার্কুলারের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানো। সংগঠনটির পক্ষ থেকে দেশের রফতানি বাণিজ্যের স্বার্থে তারল্য সংকট নিরসনের লক্ষ্যে তৈরি পোশাক রফতনিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা দেওয়ার জন্য এফই সার্কুলার নম্বর-০৫, তারিখ: ২৭/০১/২০২১ এর মেয়াদ চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করার দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়া শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য আর্থিক প্রণোদনা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় প্রদত্ত ঋণ পরিশোধের সময়কাল ২ বছরের পরিবর্তে ৫ বছর করা। রফতানিকারকদের জন্য ব্যাংকিং সংক্রান্ত একটি বিশেষ আইনি সুরক্ষা ব্যবস্থা করা, যার মাধ্যমে রফতানিকারকরা দেউলিয়া হয়ে যাওয়া ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের বাতিল বা অনিশ্চিত হয়ে যাওয়া রফতানি কার্যাদেশ বা পেমেন্টের বিপরীতে ব্যাক টু ব্যাক এলসি’র দায়-দেনা পরিশোধ সংক্রান্ত অনাকাঙ্খিত ঘটনা থেকে আইনগতভাবে সুরক্ষা পাবেন। পোশাক শিল্পের তারল্য সংকট নিরসনে সহায়তা ও রফতানি সক্ষমতা বজায় রাখতে প্যাকিং ক্রেডিটের বিপরীতে সুদের হার ৭ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা। করোনা ভাইরাসের অতিমারি সময়ে রফতানিমুখী তৈরি পোশাক খাতকে টিকিয়ে রাখতে ইডিএফ ফান্ডের সুদের হার ২ শতাংশ হতে হ্রাস করে ১ দশমিক ৫ শতাংশ করা এবং একক ঋণ গ্রহীতার সীমা ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত প্রদানের সুবিধার মেয়াদ চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধির দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়াও আরও বেশি কয়েকটি দাবি জানানো হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে। সভায় পোশাক শিল্পখাতে ১৩৩টি রুগ্ন শিল্পের পুনর্বাসনে নীতিগত সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে ফের অনুরোধ জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির মনোযোগ দিয়ে বিজিএমইএ সভাপতির বক্তব্য শোনেন। পরে তিনি বলেন, ‘পোশাক শিল্পকে সম্ভাব্য সকল সহযোগিতা প্রদানে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রস্তুত রয়েছে।’ তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘বিজিএমইএ সভাপতির প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে যেগুলো যৌক্তিক, সেগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করবে। আর যেগুলো বিষয়ে আদেশ জারি করা সম্ভব হবে, সেসব বিষয়ে আদেশ জারির জন্য ব্যাংক উদ্যোগ নেবে।’ বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম মান্নান (কচি), সহ-সভাপতি মো. শাহিদউল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি (অর্থ) খন্দকার রফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী, পরিচালক আসিফ আশরাফ, পরিচালক মো. খসরু চৌধুরী এবং সাবেক পরিচালক মো. মুনির হোসেন। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান ও উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতা চেয়েছে বিজিএমইএ

আপডেট সময় : ০১:৩৯:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুন ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। রোববার (৬ জুন) বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানের নেতৃত্বে বিজিএমইএ’র একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। গতকাল সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আলোচনাকালে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, করোনা মহামারিতে পোশাক শিল্প ক্রান্তিলগ্ন অতিক্রম করছে। এ অবস্থায় পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা অর্থনীতির চাকা সচল রাখা এবং প্রতিকূল পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। উদ্যোক্তারা মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে পোশাক শিল্প সংক্রান্ত ইস্যুগুলো সহজীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হলে তা শিল্পকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করবে। বিজিএমইএ সভাপতি বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে যে সহযোগিতাগুলো চেয়েছেন, সেগুলো হলো- পোশাক শিল্পখাতকে এই সংকটময় সময়ে টিকিয়ে রাখার নিমিত্তে আংশিক রফতানি মূল্য অপ্রত্যাবাসিত থাকলে অন্যান্য প্রত্যাবাসিত রফতানি মূল্যের বিপরীতে রফতানি ভর্তুকি বা নগদ সহায়তার আবেদন গ্রহণ করে প্রক্রিয়াকরণ করা এবং এফই সার্কুলার নং-৩০ এর কার্যকারিতা আগামী ৬ মাস পর্যন্ত স্থগিত রাখা। আরও রয়েছে ব্যাক টু ব্যাক এলসি খোলার ক্ষেত্রে রফতানিকারকের বন্ডেড ওয়্যারহাউজ লাইসেন্স এবং আইআরসি দাখিলের নিমিত্তে চাপ সৃষ্টি না করার জন্য সকল তফসিলি ব্যাংকের অনুকূলে নির্দেশনা জারি করা। বৈদেশিক বাণিজ্য লেনদেনের ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রা বিধি শিথিলকরণ বিষয়ে জারিকৃত সার্কুলারের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানো। সংগঠনটির পক্ষ থেকে দেশের রফতানি বাণিজ্যের স্বার্থে তারল্য সংকট নিরসনের লক্ষ্যে তৈরি পোশাক রফতনিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা দেওয়ার জন্য এফই সার্কুলার নম্বর-০৫, তারিখ: ২৭/০১/২০২১ এর মেয়াদ চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করার দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়া শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য আর্থিক প্রণোদনা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় প্রদত্ত ঋণ পরিশোধের সময়কাল ২ বছরের পরিবর্তে ৫ বছর করা। রফতানিকারকদের জন্য ব্যাংকিং সংক্রান্ত একটি বিশেষ আইনি সুরক্ষা ব্যবস্থা করা, যার মাধ্যমে রফতানিকারকরা দেউলিয়া হয়ে যাওয়া ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের বাতিল বা অনিশ্চিত হয়ে যাওয়া রফতানি কার্যাদেশ বা পেমেন্টের বিপরীতে ব্যাক টু ব্যাক এলসি’র দায়-দেনা পরিশোধ সংক্রান্ত অনাকাঙ্খিত ঘটনা থেকে আইনগতভাবে সুরক্ষা পাবেন। পোশাক শিল্পের তারল্য সংকট নিরসনে সহায়তা ও রফতানি সক্ষমতা বজায় রাখতে প্যাকিং ক্রেডিটের বিপরীতে সুদের হার ৭ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা। করোনা ভাইরাসের অতিমারি সময়ে রফতানিমুখী তৈরি পোশাক খাতকে টিকিয়ে রাখতে ইডিএফ ফান্ডের সুদের হার ২ শতাংশ হতে হ্রাস করে ১ দশমিক ৫ শতাংশ করা এবং একক ঋণ গ্রহীতার সীমা ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত প্রদানের সুবিধার মেয়াদ চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধির দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়াও আরও বেশি কয়েকটি দাবি জানানো হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে। সভায় পোশাক শিল্পখাতে ১৩৩টি রুগ্ন শিল্পের পুনর্বাসনে নীতিগত সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে ফের অনুরোধ জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির মনোযোগ দিয়ে বিজিএমইএ সভাপতির বক্তব্য শোনেন। পরে তিনি বলেন, ‘পোশাক শিল্পকে সম্ভাব্য সকল সহযোগিতা প্রদানে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রস্তুত রয়েছে।’ তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘বিজিএমইএ সভাপতির প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে যেগুলো যৌক্তিক, সেগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করবে। আর যেগুলো বিষয়ে আদেশ জারি করা সম্ভব হবে, সেসব বিষয়ে আদেশ জারির জন্য ব্যাংক উদ্যোগ নেবে।’ বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম মান্নান (কচি), সহ-সভাপতি মো. শাহিদউল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি (অর্থ) খন্দকার রফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী, পরিচালক আসিফ আশরাফ, পরিচালক মো. খসরু চৌধুরী এবং সাবেক পরিচালক মো. মুনির হোসেন। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান ও উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।