ঢাকা ০৬:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

বিটিআরসির দুই নীতিমালা মানবাধিকারের পরিপন্থি: ফখরুল

  • আপডেট সময় : ০১:৩৭:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ মার্চ ২০২২
  • ৮০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া ও ওভার দ্য টপ (ওটিটি) প্ল্যাটফর্মের জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) খসড়া দুই নীতিমালা আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গতকাল শনিবার ঢাকার গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানান। ফখরুল বলেন, “এই দুটি নীতিমালা শুধু বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের সাথে সাংঘর্ষিকই নয়, বরং জাতিসংঘ ঘোষিত ইউনিভার্সেল ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটস (ইউডিএইচআর) এবং ইন্টারন্যাশনাল কনভেন্যান্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটসের (আইসিসিপিআর) পরিপন্থি।
“সেই সাথে জাতিসংঘের অনুমোদিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ম্যানিলা প্রিন্সিপল এবং সান্তা ক্লারা প্রিন্সিপলের সিদ্ধান্তের দৃষ্টিতে দেখলে এই দুটি নীতিমালা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”
অনলাইন মাধ্যমের ব্যবহার নিয়ে বিটিআরসির খসড়া নীতিমালা দুটি হলো- ‘দ্য বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন রেগু্লশেন ফর ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যান্ড ওটিটি প্ল্যাটফর্মস-২০২১’ এবং ‘ওভার দ্য টপ (ওটিটি) কনটেন্টভিত্তিক পরিষেবা প্রদান এবং পরিচালনা নীতিমালা-২০২১’।
একে নিবর্তনমূলক অ্যাখ্যা দিয়ে ফখরুল বলেন, “এই নীতিমালা প্রণয়নের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হচ্ছে সত্যকে আড়াল করে মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে জনগণের কণ্ঠরুদ্ধ করে একদলীয় বাকশালী কায়দায় ক্ষমতা চিরস্থায়ী করা।
“এই নির্বতনমূলক নীতিমালা কার্য্কর হলে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি অনলাইনভিত্তিক মিডিয়াগুলোর মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং গোপনীয়তার অধিকারকে বাধাগ্রস্থ করবে। পাশাপাশি অনলাইন এনক্রিপশন অকার্য্কর করে নিরাপত্তাকে দুর্বল করে ফেলবে। এর ফলে মানবাধিকারের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে।”
এই নীতিমালার ফলে সাংবাদিক, বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদ, মানবাধিকারকর্মী এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী আরও বেশি ঝুঁকির মধ্যে পড়বে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব।
“ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট পোক্ত করতেই এই দুটি নীতিমালা প্রনয়ন করা হয়েছে, যাতে করে আরও শক্ত করে ধরা যায়।”
দেশের জনগণের বাক-স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখতে এই দুই নীতিমামলাসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানান তিনি। ফখরুল বলেন, “সোজা কথায় বলা যায়, এই নিবর্তনমূলক নীতিমালাটি তৈরি করা হয়েছে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি-অপশাসন, তাদের ভোট ডাকাতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকা-ের বিষয়গুলো প্রচার ঠেকাতে। “শুধু তাই নয়, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার যে পরিমাণে ইতিহাস বিকৃতি করেছে, সেই বিষয়ে কথা না বলার জন্যও তারা এই নীতিমালা ব্যবহার করবে।” সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এখন তো খসড়া কেের্ছ। এটা যদি দেখি যে, সরকার এই নীতিমালাকে গ্রহণ করে ব্যবস্থা নিচ্ছে, তখন তো আমরা অবশ্যই কর্মসূচি দেব।”

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বিটিআরসির দুই নীতিমালা মানবাধিকারের পরিপন্থি: ফখরুল

আপডেট সময় : ০১:৩৭:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ মার্চ ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া ও ওভার দ্য টপ (ওটিটি) প্ল্যাটফর্মের জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) খসড়া দুই নীতিমালা আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গতকাল শনিবার ঢাকার গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানান। ফখরুল বলেন, “এই দুটি নীতিমালা শুধু বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের সাথে সাংঘর্ষিকই নয়, বরং জাতিসংঘ ঘোষিত ইউনিভার্সেল ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটস (ইউডিএইচআর) এবং ইন্টারন্যাশনাল কনভেন্যান্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটসের (আইসিসিপিআর) পরিপন্থি।
“সেই সাথে জাতিসংঘের অনুমোদিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ম্যানিলা প্রিন্সিপল এবং সান্তা ক্লারা প্রিন্সিপলের সিদ্ধান্তের দৃষ্টিতে দেখলে এই দুটি নীতিমালা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”
অনলাইন মাধ্যমের ব্যবহার নিয়ে বিটিআরসির খসড়া নীতিমালা দুটি হলো- ‘দ্য বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন রেগু্লশেন ফর ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যান্ড ওটিটি প্ল্যাটফর্মস-২০২১’ এবং ‘ওভার দ্য টপ (ওটিটি) কনটেন্টভিত্তিক পরিষেবা প্রদান এবং পরিচালনা নীতিমালা-২০২১’।
একে নিবর্তনমূলক অ্যাখ্যা দিয়ে ফখরুল বলেন, “এই নীতিমালা প্রণয়নের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হচ্ছে সত্যকে আড়াল করে মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে জনগণের কণ্ঠরুদ্ধ করে একদলীয় বাকশালী কায়দায় ক্ষমতা চিরস্থায়ী করা।
“এই নির্বতনমূলক নীতিমালা কার্য্কর হলে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি অনলাইনভিত্তিক মিডিয়াগুলোর মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং গোপনীয়তার অধিকারকে বাধাগ্রস্থ করবে। পাশাপাশি অনলাইন এনক্রিপশন অকার্য্কর করে নিরাপত্তাকে দুর্বল করে ফেলবে। এর ফলে মানবাধিকারের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে।”
এই নীতিমালার ফলে সাংবাদিক, বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদ, মানবাধিকারকর্মী এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী আরও বেশি ঝুঁকির মধ্যে পড়বে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব।
“ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট পোক্ত করতেই এই দুটি নীতিমালা প্রনয়ন করা হয়েছে, যাতে করে আরও শক্ত করে ধরা যায়।”
দেশের জনগণের বাক-স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখতে এই দুই নীতিমামলাসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানান তিনি। ফখরুল বলেন, “সোজা কথায় বলা যায়, এই নিবর্তনমূলক নীতিমালাটি তৈরি করা হয়েছে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি-অপশাসন, তাদের ভোট ডাকাতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকা-ের বিষয়গুলো প্রচার ঠেকাতে। “শুধু তাই নয়, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার যে পরিমাণে ইতিহাস বিকৃতি করেছে, সেই বিষয়ে কথা না বলার জন্যও তারা এই নীতিমালা ব্যবহার করবে।” সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এখন তো খসড়া কেের্ছ। এটা যদি দেখি যে, সরকার এই নীতিমালাকে গ্রহণ করে ব্যবস্থা নিচ্ছে, তখন তো আমরা অবশ্যই কর্মসূচি দেব।”